[অনেক দিন ধরে ভাবছি, বিচিত্র পেশা নিয়ে একটা সিরিজ লিখবো। পথে ঘাটে হাঁটতে গেলে সাধারণত এই ধরনের পেশার মানুষের দেখা মিলে। এই বিচিত্র পেশার মানুষদের সাথে আমি কথা বলে আনন্দ পাই, তাদের ছবি তুলি মোবাইলে। ভাবছি এই মানুষ গুলোকে অনলাইনের পাতায় নিয়ে আসবো। তবে কিছু ভুল করছি, অনেকের নাম, মোবাইল বা ঠিকানা রাখা সম্ভব হলেও তা করতে পারি নাই।]
আজকের বিচিত্র পেশার মানুষটার নাম আব্দুল আজিজ (ছদ্ম নাম), বাড়ি কিশোরগঞ্জ। বছরে একবার ঢাকা শহরে আসেন এবং পনর দিনের মত থাকেন। এই পনর দিনে যা কামাই হয়, তাতে তার কয়েক মাস চলে যায়। বাকী বছরের মাস গুলো তিনি ক্ষেতে খামারে কাজ করে থাকেন।
হ্যাঁ, আমি পতাকা বিক্রেতা আব্দুল আজিজের কথাই বলছি! একটা দেশের পতাকা বিক্রি করা নিঃসন্দেহে বিচিত্র পেশা! গত কয়েকদিন আগে তার সাথে আমার রাস্তায় কথা হয়। আমি ছবি তুলতে চাইলে, হাসি মুখে ছবি তুলতে দিলেন।
ব্যবসার তেমন কোন গোমর নেই বলে জানান। বছরের ডিসেম্বর মাসের শুরুতে তিনি ঢাকা চলে আসেন এবং সদরঘাটের একটা দোকানের সাথে পূর্ব পরিচিতির সুযোগে তিনি এই পতাকা নেন এবং এক চালান বিক্রি করে টাকা দিয়ে অন্য চালান নিয়ে আসেন। এভাবে চলে দিন পনর এবং যা বাকী থাকে তা ফেরত দিয়ে বাড়ি চলে যান। রাতে থাকেন পুরান ঢাকার একটা মেসে, দিন অনুসারে বিল দিয়ে দেন। গত ১০ বছর ধরে তিনি এই পেশায় আছেন এবং এটাই তার কাছে ভাল লাগে।
তবে পরিশ্রম বেশী সারা দিনে অনেক জায়গা হেঁটে বেড়াতে হয়। মানুষ এ সময়ে অনেক বেশী পতাকা কিনেন বলে জানান। পতাকা বিক্রিতে কিভাবে এলেন, জানতে চাইলে তিনি জানান, তার এক বন্ধু তাকে এই পেশায় নিয়ে এসেছে। এখন ভাল লাগে এবং বছরে কম সময়ে ভাল ইনকাম করা যায় বলে এটা পেশা হিসাবেই নিয়েছেন।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী তিনি, পতাকা বিক্রির সময়ে আজান হলে পাশে পাওয়া মসজিদের পাশে রেখেই মসজিদে নামাজ পড়তে প্রবেশ করেন। লেখা পড়া তেমন করেন নাই, স্বাধীনতা যুদ্ধের কথা তেমন মনে করতে পারেন না, সেই সময়ে বয়স কম ছিল।
বিচিত্র এই দেশ, বিচিত্র এই দেশের মানুষ, কত কি বিচিত্র পেশা! তবে সবই জীবিকার টানে!
বিচিত্র পেশাঃ ২
http://beta.somewhereinblog.net/blog/udraji/29997911