প্রাচীন কালে থেকেই মানুষ নিজকে নিজে হত্যা করে আসছে (আত্মহত্যা), এটা কোন নুতন বিষয় নয় এবং পাশাপাশি সেই আমল থেকে এর প্রতিকার নিয়েও বেশ আলোচনা হয়ে আসছে কিন্তু কোন সুরাহা নেই! অন্যদিকে কেহ আত্মহত্যা করলেই পাশাপাশি আর একটা প্রশ্ন সামনে চলে আসে, সেটা হল তাকে কি হত্যা করা হল নাকি! এই প্রশ্ন আজকালের নয়, বহু দিনের পুরানো! এমনি একটা ব্যাপার ঘটেছিল কলকাতার বিখ্যাত ঠাকুর পরিবারে, মানে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (৭ই মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট, ১৯৪১) পরিবারে এবং উনার নাম ছিলো কাদম্বরী দেবী, যিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইমিডিয়েট বড় ভাইয়ের স্ত্রী এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রায় সম বয়সী। রবীন্দ্র নাথ ঠাকুরের বিবাহের চার মাস পরে এই ঘটনা ঘটেছিল এবং তার মৃত দেহ পাওয়া যায়, যদিও তা সেই সময়েও সঠিক বা যথাযত সময়ে প্রকাশ হতে পারে নাই। এদিকে আবার ধারনা করা হয়, তাকে হত্যা করা হয়েছে। ফরেনসিক রিপোর্ট (যা তখন করোনার কোর্ট) সেই সময়েই টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়েছিল বলে এখন প্রকাশ্যেই জানা যায়, সাথে সংবাদ পত্রের সম্পাদক সাহেবদের টাকা দিয়ে খবর না লেখার জন্য মুখ বন্ধ করা হয়েছিল বলে জানা যায় (এটা সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপধ্যায়ের একটা সাক্ষাত থেকেও জানা যায়, লিঙ্ক দিচ্ছি শেষে)। যাই হোক, ইতিহাস মুলত নুতন করে লেখা যায় না, তবে পুরানো ঘটনা ঘেঁটে দেখা যায় মাত্র। ইতিহাসের ব্যাখ্যা বুঝে নুতন তথ্য সামনে নিয়ে আশা যায় মাত্র! চলুন, কাদম্বরী দেবী নিয়ে উইকিপিডিয়াতে কি লেখা আছে, দেখে নেই! কোট -
"কাদম্বরী দেবী (জুলাই ৫, ১৮৫৯ – এপ্রিল ২১, ১৮৮৪ ) ছিলেন বাঙালি নাট্যকার, সঙ্গীতস্রষ্টা, সম্পাদক এবং চিত্রশিল্পী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী, মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের পুত্রবধু এবং বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বড় ভাইয়ের স্ত্রী।
জুলাই ৫, ১৮৫৯ সালে কলকাতায় কাদম্বরীর জন্ম। পৈতৃক নাম মাতঙ্গিনী। তিনি ছিলেন ঠাকুরবাড়ির বাজার সরকার শ্যাম গাঙ্গুলির তৃতীয় কন্যা।[২] মাত্র নয় বছর বয়সে ১৯ বছর বয়সী জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে কাদম্বরীর বিয়ে হয়।[১] বিয়ের পর জ্যোতিরিন্দ্রনাথ ঠাকুর তার শিক্ষার বন্দোবস্ত করেছিলেন।[৩] তার পিতামহ জগন্মোহন গঙ্গোপাধ্যায় ছিলেন একজন গুণী সংগীত শিল্পী। তার থেকেই কাদম্বরী এবং রবীন্দ্রনাথ বাল্যকালে গান শিখেছিলেন।
সমবয়সী হওয়ার সুবাদে কাদম্বরীর সাথে রবীন্দ্রনাথের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং তিনি রবীন্দ্রনাথের বিভিন্ন গল্প, কবিতা, নাটক আর গান রচনায় উৎসাহ যুগিয়েছেন তার সৃষ্টিশীল মতামত প্রদানের মাধ্যমে। রবীন্দ্রনাথ এবং কাদম্বরী ছিলেন খুবই ভালো বন্ধু এবং সহপাঠী[৪] যার কারণে এই দুজনের সম্পর্ক নিয়ে সেই সময়ে সৃষ্টি হওয়া বিভিন্ন বিতর্ক এখনো বিদ্যমান রয়েছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিবাহের (১৮৮৩ সালের ৯ ডিসেম্বর) চার মাস পরে এপ্রিল ১৯, ১৮৮৪ সালে কাদম্বরী দেবী আফিম খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন, এবং তার দুই দিন পর এপ্রিল ২১ তারিখে মাত্র ২৫ বছর বয়সে তিনি মারা যান।[১][২] জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবার এই আত্মহত্যার বিষয়ে নিরব ছিল।[৫]
মুলত পারিবারিক সমস্যার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে বিতর্ক রয়েছে। হিন্দু প্রথা অনুযায়ী তাকে মর্গে পাঠানো হয় নি, জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতেই বসানো হয়েছিল করোনার কোর্ট। গবেষকরা মনে করেন, স্বয়ং মহর্ষির উদ্যোগেই করোনার রিপোর্ট লোপ করা হয়, সঙ্গে লোপাট করা হয় 'সুইসাইড নোট'। ৫২ টাকা ঘুষ দিয়ে মুখ বন্ধ করা হয় সংবাদ মাধ্যমের। তাই কাদম্বরীর মৃত্যু সংবাদ তখন কোনো পত্রিকায় ছাপা হয়নি।
কাদম্বরী দেবীর মৃত্যুর পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন এবং তার স্মৃতি নিয়ে মৃত্যুর দীর্ঘদিন পরেও একাধিক কবিতা, গান ও গল্প রচনা করেছেন।। " আনকোট
উপরের কথা গুলো পড়ে নিশ্চয় বুঝতে পারছেন বা আর বুঝিয়ে বলার দরকার পড়ে না! এদিকে এই ঘটনা বা এমন কিছু বহু আগে পড়লেও নানান কারনে আর মনে ছিল না। আজ এই সন্ধ্যায় নেটে সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপধ্যায়ের একটা সাক্ষাত শুনছিলাম এবং মাঝে এসে এই ঘটনা শুনে আমি আবার ভাবতে বসেছিলাম! আপনাদের জন্য ইউটিউবের সেই সাক্ষাত তুলে ধরছি (পুরোটা শুনবেন, তবে এই ঘটনা ১৬ মিনিটের পরে আছে)। সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপধ্যায়ের এই সাক্ষাত অত্যান্ত আন্তরিক এবং নির্ভেজাল! সাক্ষাত গ্রহণকারী ঋতু পর্না ঘোষ নিয়েও কথা চলে না, সলিড চরিত্র ছিলেন, তার এমন কথোকপন টিভিতে বেশ আড়লোন জাগিয়েছিল!
ইউটিউব কৃতজ্ঞতাঃ সুরমা ঘোষ সরকার
বি দ্রঃ অতি কথনের তেমন কিছু নেই, জেনে যান মাত্র, এই তো দুনিয়া, কে কাকে মনে রাখে, তবে কর্মই মানুষের মুল পরিচয়, সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপধ্যায়ের কথা পরিষ্কার!
অনু লিঙ্কঃ ইউকিপিডিয়া, view this link
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুন, ২০২০ রাত ১০:২৯