somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

গল্পঃ নফল ও তাহাজ্জুদ নামাজ

২০ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নফল নামাজ ও তাহাজ্জুদ নামাজ কি এবং কেন পড়া হয় তা আপনারা নিশ্চয় জানেন। ইবাদতের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নামাজ।

নফল ইবাদতের (যে ইবাদত করলে আল্লাহ গুনা মাফ করে সোয়াব যোগ করতে থাকেন, প্রিয় নবী সময় পেলেই নফল ইবাদত করতেন) মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো নফল নামাজ। প্রতিটি নফল ইবাদতের জন্য নতুনভাবে অজু করা মোস্তাহাব। রাতের নিয়মিত নফল ইবাদতের মধ্যে রয়েছে; বাদ মাগরিব ছয় থেকে বিশ রাকাত আউওয়াবিন নামাজ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে; এসবের মাঝে কোনো মন্দ কথা না বলে, তার এই নামাজ ১২ বছরের ইবাদতের সমতুল্য গণ্য হবে।

অনেকে ছোট বেলায় দেখেছেন যে, আগে প্রতিটা নামাজের পরে অন্তত দুই রাকাত এই নফল নামাজ পড়া হত! আবার অনেক মানুষকে দেখতাম কোন চাহিদা আল্লাহর কাছে চাইতে গেলেও বা সেই চাহিদা পূর্ন হলে মানত করা নফল নামাজ পড়া হত! আজকাল অবশ্য আর তেমন পড়া হয় না, মানুষের হাতে এখন আর নফল নামাজের সময় নেই!

তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ হলো রাত জাগা, ঘুম থেকে ওঠা, এ প্রসঙ্গে কুরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, "আর রাতের কিছু অংশে আপনি তাহাজ্জুদ পড়তে থাকুন। এটা আপনার জন্য আল্লাহর অতিরিক্ত ফজল ও করম। আশা করা যায়, আপনার প্রতিপালক আপনাকে প্রতিষ্ঠিত করবেন প্রশংসিত স্থানে।(সূরা বনী ইসরাইল : ৭৯)"। তাহাজ্জুদ নামাজ সুন্নত। প্রিয় নবী সা: এ নামাজ নিয়মিত পড়তেন। অত্যন্ত ফজিলত ও বরকতময় এ নামাজ। রাসূল সা: সবাইকে এ নামাজ পড়ার জন্য উৎসাহ দিতেন। এখন আমাদের দেশে এই তাহাজ্জুদ নামাজ আদায়ের আর তেমন মানুষ পাওয়া যায় না, হাতে গোনা!

তবে বর্তমান আমাদের দেশের ক্ষমতাসীন রাষ্ট্রপ্রধানের নামে এই তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার কথা শোনা যায়, তিনি সহ তার নেতা কর্মীগন এটা প্রচার করেন যে, আমাদের নেত্রী তাহাজ্জুদ নামাজ পড়েন! যদিও বিরোধী দল সহ দেশের উল্লেখযোগ্য মানুষ এটা বিশ্বাস করে না! তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া ব্যক্তি বিশেষ কথা আচার চাল চলনে পুরাই বদলে যান বলে জানা যায়!

যাই হোক, উল্লেখিত নামাজের গুণগান আপনারা জানেন, আবারো জানিয়ে দিলাম। একজন লেখক হিসাবে নুতন করে জানিয়ে দেয়া উচিত বলে মনে করি। তবে এই প্রসংগ এসেছে এই কারনে যে, আমার প্রিয়তমা স্ত্রী বেশ কথা বলেন কিন্তু কাজে তা বাস্তবায়ন করেন না! ফলে আমি নিজে এখন আর উনাকে তেমন বলি না, কারন কে এত কথা বলে নিজের জীবন মাটি করবে!

এই তো, কয়েক সপ্তাহ আগের কথা। রাতের খাবার রাত ১২টায় খাচ্ছিলাম আমরা দুইজনে, যা এখন রাতের খাবারের আমাদের সঠিক সময় হয়ে গেছে! ডোন্ট মাইন্ড! এই যে এত রাতে রাতের খাবার এবং বিষয়টা যে আমরা ভুল করছি তা আমরা দুইজনেই জানি বা বুঝি! কথা প্রসঙ্গে তিনি জানালেন, এখন থেকে রাত ৮টায় তিনি রাতের খাবার খেয়ে ফেলবেন কারন ওজন সহ নানাবিধ শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন বলে জানালেন! আরো জানালেন, কে খেল না খেল তা তিনি আর দেখবেন না! আমি মনে মনে 'আলহামদুলিল্লাহ' বললাম এবং মনে মনে এই সিধান্ত নিলাম যে, তিনি যদি তা করে দেখাতে পারেন, তবে আমি প্রতিদিন রাতে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বো। কথাটা মুখ ফুটে উনাকে বলি নাই, নিজস্ব একটা টেকনিকের কারনে! বিবাহিতেরা এটা বুঝবেন নিশ্চয়!

না, এই কয়েক সপ্তাহে আমি গোপনভাবে নজর রাখছিলাম যে, প্রিয়তমা স্ত্রী কি সত্য সত্য রাত ৮টার মধ্যেই কি রাতের খাবার শেষ করছেন কি না! না, তেমন কোন দিন দেখি নাই, পরে এক সময়ে মনে হল, তিনি তার কথা ভুলেই গেছেন! আমি মনে মনে হাফ ছেড়ে বাঁচি! গত কয়েকদিন আগে কথা প্রসঙ্গে বড় ছেলেকে বললাম, তোর আম্মার দোয়ার জন্য নফল নামাজ পড়তে চাইছিলাম, পারছি না! এবং ছেলেকে পুরা ঘটনা জানালাম, সে তো হেসেই শেষ! বাবা, তুমি কি যে চিন্তা করো! দাঁড়াও, আম্মাকে জানাই!

যে ঘটনা যেই কাজ, ছেলে আমার তার আম্মাকে বলল, তোমার জন্য বাবা নফল নামাজ পড়তে চেয়েছিল, পারছে না! তুমি রাতে ৮টার মধ্যে রাতের খাবার খেয়ে নিলেই পার! এতে বাবা প্রতিদিন দুই রাকাত করে নফল নামাজ পড়বে!

প্রিয়তমা স্ত্রী আমার মনে মনে কি চিন্তা করলো জানি না, তবে কঠোর হাসি মুখে আমার ছেলেকে জানান দিলো, "দাঁড়া, তোর বাপেরে নফল নামাজ না তাহাজ্জুদ নামাজ পড়াবো"! মানে, মনে হচ্ছে এখন থেকে তিনি রাতের খাবার সন্ধ্যা ৬টাতেই শেষ করবেন বা এমন কিছু!

আমার তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার কারনে যদি প্রিয়তমা স্ত্রী নিয়মে আসে তথা দেশবাসী ভাল থাকে, তবে পড়তে দোষ কোথায়! অন্যদিকে রাতের আঁধারে এই নামাজ পড়লাম কি না, কে দেখবে, দিনে বলতে তো আসুবিধা নেই যে, আমি তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ি!

(মার্জিত)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০২০ বিকাল ৫:২৯
৯টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×