somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

Take Me to Town (1953); ‘আমাকে সাথে নাও’ কিংবা ‘মাঝি, আমাকে নিবে’!

১৩ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ১১:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

Take Me to Town (1953): হলিউডের এই ছবির বাংলা নাম বাংলায় করে আপনাদের জানাতে হলে আমি এর বাংলা লিখবো, ‘মাঝি, আমাকে নেবে’ কিংবা ‘আমাকে সাথে নাও’! এত বছর আগে এমন ছবি বা এমন কাহিনী নিয়ে ছবি আমি অন্তত কল্পনা করতে পারছি না, মানে এই দাড়াচ্ছে যে, ওরা ছবি বানাতে কত এডভান্সড ছিল তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই ছবিটাও আপনাদের আমি দেখতে বলি, এর কারন হিসাবে আমি বলবো, এই ছবিতে গল্প আছে (যদিও এমন গল্পের অনেক ছবি নিশ্চয় আপনারা আরো আরো দেখে ফেলেছেন বা এমন গল্প নিয়ে এই দুনিয়াতে আরো আরো অনেক ছবি হয়েছে বটেই) যা এর আগে হয়ত কোন দেশের কেহ এমন গল্প নিয়ে ছবি বানায় নাই বা এটাই হয়ত মৌলিক গল্প ছিলো সেই সময়ে। ছবির চিত্রগ্রহন চমৎকার, অভিনেতা অভিনেত্রীদের কাজ ভাল হয়েছে। বিশেষ করে এই ছবির নায়ক নায়িকা স্টারলিং হেইডেন ও অ্যান শ্রীদান চমৎকার কাজ করেছেন এবং এদের সেই সময়ের স্মার্টনেস এখনো ফলো করা যেতে পারে বলেই আমি মনে করি। নায়িকা অ্যানের চুল সহ শারীরিক গঠনের বা এক কথায় বলা চলে রুপের ঝলকের কথা এখনো মনে করা যেতে পারে। আপনারা যারা এখনো মরলিন মনরোকে ভুলতে পারেন না, আমি বলবো এই ছবি দেখলে আপনারা আপনাদের চয়েস বা পছন্দ থেকে কিছুটা হলেও সরে এসে অ্যানের দিকে যাবেন, এক কথায় সি ইস বিউটিফুল। যাই হোক, বেশি কথা বলা চলে না। চলুন ছবির ক্যাপশনে কথা বলি।


ছবি ১, সাদাকালো থেকে কিছুটা রঙ্গীন দুনিয়াতে প্রবেশের কালের এই ছবি যাকে তখন বলা হত টেকনোকালার। মানে রঙ্গীন দুনিয়া! তবে আমি ছবিটা দেখে যা বুঝতে পারছিলাম, এই ছবির গান গুলোই হয়ত রঙ্গীন ছিল, বাকী সাদাকালো, যা আমাদের বাংলা ভাষায় বলা হত, আংশিক রঙ্গীন! আপনারা নিশ্চয় আংশিক রঙ্গীন ছবি গুলোর কথা ভুলে যান নাই। আমাদের দেশে ১৯৭৫ থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এমন অনেক ছবি হয়েছিল। নিশ্চয় অনেকের এখনো মনে আছে।


ছবি ২, এই ছবির এটাই মনে হয় আকর্ষনীয় পোষ্টার ছিলো। এই পোষ্টার নিশ্চয় সেই আমলে দর্শক টানায় খুব কাজে দিয়েছিল। যাই হোক, এখানে এই ছবির ঘটনা বা গল্প সংক্ষেপে বলে দেই, কারন এতে আপনারা যারা ছবিটা দেখবেন, তাদের জন্য আলাদা একটা আকর্ষন হবে। আমিও মনে করি, আমাদের বাংলা ভাষা ছাড়া অন্য ভাষার ছবি দেখতে বসলে যদি আগে থেকেই গল্পের কিছুটা জানা যায় তবে দেখতে আরো মনযোগ দেয়া যায় বা বুঝতে সহজ হয়। একজন সুন্দরী গায়িকা এবং নৃত্য পারদর্শি মাফিয়া চক্র থেকে কৌশলে পালিয়ে একটা ছোট শহরে চলে যান এবং সেখানে এক ছোট স্টেশনে ছোট সদ্য মাতৃহারা তিনটে ছেলের সাথে পরিচিত হন। এদের সাথেই তিনি সেই শহরে থেকে যাবার সিন্ধান্ত নেন, মানে এই তিনটে দুষ্টু মিষ্টু ছেলের মা হিসাবে নিজকে দাড়া করান (এর মধ্যে অনেক ঘটনা অনেক হাসি তামাশা আছে) কিন্তু এই ছেলেদের বাবা কিছুতে এটা মেনে নিচ্ছিলেন না, তিনি মুলত এই মহিলাকে এড়িয়ে যেতে চাইছিলেন এবং বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। এর মধ্যে এই শহরের নানা অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহনের ফলে তিনি আবারো সেই কুচক্রীদের নজরে পড়েন এবং সেই কুচত্রীরা তাকে ধরে আগের জায়গাতে নিয়ে যেতে চায় এবং পুলিশের ভয় দেখায়। এই সময়ে নায়কের মনে মায়া জাগে এবং তিনি সব কিছু ভুলে তাকে স্ত্রী বা প্রিয়তমার মর্যদা দেন এবং পরে এই তিন সন্তান সহ উনারা আবার চমৎকার জীবন যাপন শুরু করেন। এই হচ্ছে মুল গল্প! আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন। মানে এখনকার দৃষ্টিতে খুব একটা সাধারন গল্প কিন্তু সেই আমলের বিবেচনায় এই গল্পে যথেষ্ট মায়া বা আকর্ষন ছিলো। নায়িকা তিনটে শিশুকে ভালবেসে এবং সাথে তাদের পিতাকে আপন করে নেয়ার গল্প সেই আমলে নেহাত বিরল ছিলো। হা হা হা, এটা অবশ্য এই আমলেও চিন্তা করা যায় না, এমন কোন মহিলা পাওয়া যাবে না যে, তিন সন্তান সহ তাদের পিতাকে বিবাহ করবে! অসম্ভব কল্পনা বটেই।

এই ছবির নায়ক বাহাদুরকে দেখে আমার আমাদের বাংলাদেশের ছবির নায়ক মিঃ ওয়াসিমের কথা বার বার মনে পড়ছিলো। হোয়াট এ টল এবং বডি। এই নায়ক নিয়ে আর একটু জানতে গিয়ে যা জানতে পারলাম, তিনি সেই আমলের অনেক জনপ্রিয় একজন নায়ক ছিলেন। তিনি মুলত আমেরিকার নৌবাহিনীর একজন নাবিক ছিলেন, পরে চাকুরী ছেড়ে অভিনয়ে মনোযোগ দেন। ১০১৬ সালে জন্ম নেয়া এই অভিনেতা ১৯৮৬ সালে ৭০ বছর বয়সে মারা যান, তিনি অনেক ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। তার চেহারা এবং বলিষ্ট শরীরের জন্য বেশ সুনাম কুড়িয়ে ছিলেন। পাশাপাশি স্মার্টনেসের জন্য তো বটেই। তার আরো কয়েকটা ছবি আমি দেখেছি, সময় নিয়ে লিখবো।

যাই হোক, যারা পুরানো ছবি দেখতে পছন্দ করেন, তারা আজই দেখে ফেলতে পারেন। এখানে আর একটা তথ্য উল্লেখ না করে পারছি না, এই ছবির গল্পের হের ফেরে হিন্দিতে সালমান খান এবং নিলমকে নিয়ে একটা ছবি হয়েছিল, আমি এই ছবি সেই ১৯৯২ সালেই দেখে ফেলেছিলাম প্রবাসে থাকার সময়েই, দুবাই ভিত্তিক আল মুনসুর ভিডিও (মনে আছে কি!) থেকে! এখনো সেই ঘটনা বা ছবির কথা মনে আছে, সেখানে মেয়েটার স্মৃতি নষ্ট হয়ে তিন বাচ্চা সহ চাচা সালমানের কাছে এসেছিল এবং পরে এই দুষ্টু মিষ্টু তিন বাচ্চাকে আপন করে নিয়ে ছিলো, এর মধ্যে তার আসল পরিচয় প্রকাশ হয় এবং সাথে স্মৃতিও ফিরে পায়। ফলে মাঝের এই বছর গুলো সে ভুলে যায় কিন্তু ছবি তো, পরে সে আবার ফিরে আসে। আমার ধারনা ১৯৫৩ সালের এই হলিউডের ছবি Take Me to Town থেকেই এই হিন্দি ছবির গল্প চুরি করা হয়েছিল বা হয়েছে! যাই হোক, এই হিন্দি ছবির নাম ‘Ek Ladka Ek Ladki (एक लड़का एक लड़की)’, আপনারা আগে পিছে এই ছবিটাও দেখে নিতে পারেন!


ছবিটা সেই আমলে অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল বলে জানি। বিশেষ করে এই হিন্দি ছবির গান গুলো অনেকের মুখে মুখে ফিরত! তবে মজার ব্যাপার এই হিন্দি ছবির এমন কোন পোষ্টার পাই নাই যেখানে সেই তিন বাচ্চার ছবি ছিলো, ছবিতে শুধু নায়ক নায়িকার ছবিই ছিলো, মানে ছবি দেখতে বসলেই ওদের দেখা পাবেন!

আনন্দে কাটুক আপনাদের জীবন। সবাই ভাল থাকুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২০ রাত ২:২৪
৮টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। গানডুদের গল্প

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:২৮




তীব্র দাবদাহের কারণে দুবছর আগে আকাশে ড্রোন পাঠিয়ে চীন কৃত্রিম বৃষ্টি নামিয়েছিলো। চীনের খরা কবলিত শিচুয়ান প্রদেশে এই বৃষ্টিপাত চলেছিলো টানা ৪ ঘন্টাব্যাপী। চীনে কৃত্রিম বৃষ্টি নামানোর প্রক্রিয়া সেবারই প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×