somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

সাহাদাত উদরাজী
সাহাদাত উদরাজী'র আমন্ত্রণ! নানান বিষয়ে লিখি, নানান ব্লগে! নিজকে একজন প্রকৃত ব্লগার মনে করি! তবে রান্না ভালবাসি এবং প্রবাসে থাকার কারনে জীবনের অনেক বেশী অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা প্রকাশ করেই ফেলি - 'গল্প ও রান্না' সাইটে! https://udrajirannaghor.wordpress.com/

শুয়োরেরবাচ্চাদের এই দেশ এবং শুয়োরখোরশেদের ৬০০টাকার কেজির গরুর গোশত!

২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে মহল্লার গোশত বিক্রেতা খোরশেদের দোকানে দেখি বিশাল ভীড়, সে ৬০০টাকা কেজিতে গত কয়েকদিন ধরে মাইক লাগিয়ে গরুর গোশত বিক্রি করছে। অনেকদিন গরুর গোশত কিনি নাই, ফলে ইচ্ছা হল, আজ দুই কেজি কিনি, দুই দিন চলে যাবে এবং আজ যেহেতু জলদি বাসায় ফিরছি, ফলে আমি নিজেই আজ রাতের খাবারের জন্য গরুর গোশত রান্না করবো।

লাইন ধরে দোকানের কাছে গিয়ে যা দেখলাম, কোরবানীর গোশতের মত করে কেটে টাল করে রাখা, একদাম ৬০০, একদাম ৬০০ করে বলছে এবং যে যত কেজি চাইছে সেখান থেকে মেপে দিয়ে দিচ্ছে। গোশতের টাল দেখেই আমার সন্দেহ হয়েছিল এবং বেশ চর্বি, হাড্ডি মেশানো আমি বুঝতে পারছিলাম, যেহেতু গোশত কেনা ও রান্না থেকেই এইসব অভিজ্ঞতা লাভ হয়েছে! যাই হোক, যেহেতু এসেছি এবং বাসায় কথা দিয়েছি, ফলে ১২০০টাকায় দুই কেজি কিনেই ফেললাম!

বাসায় এসে স্ত্রীকে গোশত সাফ ও ধুয়ে দিতে অনুরোধ করলাম, তিনি আরো মহা অভিজ্ঞ, গোশত দেখেই জানালেন, এখান থেকে কিনলে কেন, এরা তো চর্বি আর হাড্ডি ছাড়া গোশত তেমন দেয়ই না, আর ৬০০টাকায় কি করে গোশত বিক্রি করছে। তিনি আরো জানালেন, ছোট ছেলেকে স্কুলে দিয়ে আসতে তিনিও কেনার কথা ভাবছিলেন, দেখে কেনেন নাই!

যাই হোক, দুই কেজি গোশতে রাখার মত পরিস্কার করে তিনি আমার সামনে দিলেন, আমি দেখে চুপ করে গেলাম, নিজে ঘেটে দেখলাম, তিনি অনেক বিশ্রী চর্বি হাড্ডি ফেলার পরেও অনেক চর্বি হাড্ডি রেখেছেন, যা আমার কাছে মিলিয়ে মনে হল ১৩০০/১৪০০ গ্রাম হতে পারে, মানে দুই কেজিতে ৬০০/৭০০ গ্রাম নেই!
যাই হোক ভেবেছিলাম, দুই কেজিতে দুই দিন পার হবে, মনে হল না, এর এতটূকু গোশতের আবার কি করে দুই ভাগ করি! পুরোটাই রান্নায় বসালাম। রান্নার মাঝ পথে একটা ছবি দিলাম দেখেন, হাড্ডি আর চর্বিই, স্থুল গোশত দুই কেজিতে ৫০০/৬০০ গ্রাম হতে পারে মাত্র (আমার চোখের অনুমান), পাতিলের তলায় স্থুল গোশত তেমন নেই। রান্নার এই মাঝ পথে হাড্ডি ও চর্বি উপরে উঠে আসছে, যা দেখে আমি বার বার দুঃখ পাচ্ছি।

এখন আসেন শুয়োরখোরশেদ গোশত বিতান কি করে ৬০০ টাকায় কেজিতে গোশত বিক্রি করছে। আমার ধারনা সে যা করেছে, পুরা গরু কেটে প্রথমে ভাল ভাল গোশতের জায়গা গুলো থেকে ভাল গোশত সরিয়ে নিয়েছে এবং তা অধিক দামে তেহারি দোকান গুলোতে বিক্রি করেছে বা বড় বড় হোটেলে সাপ্লাই বা বিক্রি করেছে বা করবে! এর পরে যা হাড্ডি চর্বি দূর্বল জায়গার গোশত ফফশা, কলিজা গুর্দা মাথা বড় হাড্ডি সব মিলিয়ে কেটে স্তূপ করে ৬০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছে। স্তূপের উপরে সামান্য কিছু ভাল গোশত রাখছে আর তলা থেকে টেনে টেনে হাড্ডি চর্বি মিশিয়ে ক্রেতাদের ২/৪/৬ কেজি করে বিক্রি করে ফেলছে!

বিষয়টা আশা করি বুঝতে পারছেন, মানে ক্রেতাদের প্রতারিত করছে এই শুয়োরখোরশেদ। আপনি আগে ৮০০ টাকার কেজিতে ঝুলে থাকা গোশত থেকে পছন্দ সই এক টূকরা নিয়ে তাতে পরিমান মত চর্বি ও হাড্ডি পেতেন, এখন ৬০০ টাকার কেজি কিন্তু তা না, সে তার মত করে সব কিছু সাজিয়ে বিক্রি করছে এবং এখানেই তার মুল প্রতারণা!

আমি অনেক ভেবেই কথাটা বলছি, ৬০০টাকার কথা বলে মুলত প্রতারণা করেই সুয়োরখোরশেদ আমাদের হাতিয়ে নিচ্ছে এবং তার ভান্ডার ভরে ফেলছে। আমরা বুঝেও দাম কম দেখে কিনে নিচ্ছি, অন্তত একবারের জন্য হলেও, এতে সে মুল কামাইটা করে নিচ্ছে!

কি আর বলবো, শুয়োরেরবাচ্চাদের এই দেশে শুয়োরখোরশেদের ৬০০টাকার কেজির গরুর গোশত আসলেই আরো একটা ভদ্র প্রতারণা, যা কিনে বাসায় নিয়ে গেলেই বুঝবেন এবং স্ত্রীর কথা শুনে তার আরো সত্যতা পাবেন, আর নিজে রান্না করলে তো নিজ চোখেই বুঝতে পারবেন!

সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০১
২২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

পঁচে যাওয়া বাংলাদেশ আর্মি

লিখেছেন রিয়াজ হান্নান, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:২৫


একটা দেশের আর্মিদের বলা হয় দেশ রক্ষা কবজ,গোটা দেশের অব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে বহিরাগত দুশমনদের আতংকের নাম। ছোটবেলা থেকে এই ধারণা নিয়ে কয়েকটা জেনারেশন বড় হয়ে উঠলেও সেই জেনারেশনের কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×