সৌদিআরবে জিনিষ পত্রের দামের বাৎসরিক ডিস্কাউন্ট/ছাড় আগামী ২০শে ফ্রেবুয়ারী থেকে শুরু হচ্ছে (Ramadan and Eid Al-Fitr Discount Season to begin on Feb. 20)। সৌদি গেজেট নিউজ পেপার থেকে নিউজের লিঙ্ক পাঠিয়েছেন Shams Rahman। আমি পুরা খবর পড়লাম, সাথে আরো কিছু বিষয় দেখলাম। কয়েকটা বিষয় একদম পরিস্কার, আইনের শাসন হয়ত একেই বলে, রাষ্ট্রের শাসন হয়ত এটাই!
১। কোন কোম্পানি চাইলেই ডিস্কাউন্ট দিতে পারবে না, মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে তাদের ছাড় দেয়া পন্যের নামের কোড প্রকাশ করতে হবে, যাতে সব তথ্য থাকবে, সোজা কথা লাইসেন্স নিতে হবে, ফালতু বা ভুয়া কিছু করা যাবে না।
২। কোম্পানী নিজের পণ্য নিজে ডিস্কাউন্ট দিবে সরকারের কি! হ্যাঁ, এখানে শাসন। মানে সরকার দেখবে কি কি পণ্যে ডিস্কাউন্ট এবং কত পারসেন্ট ছাড় দেয়া হচ্ছে কিংবা পণ্যের দাম বাড়িয়ে কমানো হয়েছে কি না, কোম্পানী ক্রেতাদের সাথে কোন প্রতারণা করছে কি না! সামান্য প্রতারণা সরকার ধরতে পারলে সেই কোম্পানীর হয়ত গেইটে তালা লেগে যাবে!
৩। সৌদিতে পুরা বাজার, ষ্টোর বা ব্যবহার্য দ্রব্যের যাবতীয় নিয়ন্ত্রন করে তাদের বানিজ্য মন্ত্রণালয় (The Ministry of Commerce), আপনি বিদেশ থেকে কিছু নিয়ে ইচ্ছামত দাম লাগিয়ে বিক্রি করবেন তা কিছুতেই হবে না, লাভেরও একটা লিমিট মন্ত্রণালয় বেধে দেয় বা দেখে, এবং এতে কোন গোলমাল পেলে বিরাট শাস্তি (রাজার পোলারাও রক্ষা পায় না, যা কিছু বতিক্রম তা নিয়ে কথা না বলাই ভাল)।
৪। রাজতন্ত্র বা রাজা শাসিত হলেও বিচার আইন সাধারন মানুষের পক্ষে (সামান্য যা আলাদা তাতে সাধারন মানুষের কিছু আসে যায় না), অপরাধ করে পার পাওয়া সহজ নয়। চাইলেই যা ইচ্ছা করবেন তাও নয়। ব্যবসাহীদের বা ধনীরা যত ইচ্ছা উপার্জন করুক তবে আইনের মধ্যে থেকেই বা নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থেকেই।
৫। যাই হোক, দেখুন কি লেখা। The electronic submission of application for issuance of license aims to enable establishments and stores to easily obtain discount licenses, print them and present them to consumers, without losing days of the annual discount balance. The introduction of the season this year also enables e-commerce shoppers to obtain their products early. অনলাইনে যারা প্রোডাক্ট বিক্রি করে তারাও এই ডিস্কাউন্ট আইন মেনে চলতে হবে, তবে এই ডিস্কাউন্ট লাইসেন্স পাওয়ার পথ খুব সহজ, লিঙ্কে আবেদন করে তথ্য দিলেই মিলে যাবে, যা দোকান বা শপের সামনে প্রিন্ট করে ঝুলিয়ে রাখতে হবে!
যাই হোক, এত কথা বললাম মনের দুঃখে! আমাদের দেশে শাসকেরা যে পথেই ক্ষমতায় আসুক, ব্যাপার না (জোর যার মুল্লক তার, ধরে নিলাম সারা বিশ্বেই)।তবে প্রশ্নটা বার বার মনে হয়, তারা কি সাধারন মানুষের কথা এক বারেও চিন্তা করে না, তারা কি তাদের পরিচালিত সংস্থা গুলো সৎ ও যোগ্য করে তুলবে না! মুসলিম প্রধান দেশ হয়েও আমরা রমজানেও কি কিছু ব্যবসাহীদের হাতে জিম্মি থাকবো, বাড়তি দামে কিনবো (আমাদের ইঙ্কাম কি বাড়ে)? ব্যবসাহীরা আমাদের সাধারন মানুষের গলা কেটে নিজদের পকেট পুরবে? সরকার দেখেও না দেখার ভান করবে?
সামু ব্লগ প্রকাশিত, নয়াপল্টন ১১/০২/২০২৪ইং
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৬