আসেন কিছু আলাপ করি! এই যে বেইলী রোডে আগুন লাগছে তা নিবানো প্রসঙ্গে! বেইলী রোডে একটা পুকুর আছে এবং সেই পুকুর পাড়েই আমরা সন্ধ্যায় আড্ডা দেই, জায়গাটা আমাদের বন্ধুদের, পুকুরে দুইটা ঘাট আছে সেটা আমাদের বন্ধুদের বানানো! আমি প্রতিদিন অফিস ফিরতি পথে যাই, কিন্তু আগুন লাগার দিনে আমি যাই নাই, বাসায় কাজে ফিরতে হয়েছিল! তবে সাথে সাথে আমাদের বন্ধু বড় ভাই লাইভে আসেন এবং তা থেকে সাথে সাথেই জানতে পারি! পরের দিন সেই বড় ভাই থেকে অনেক ভিডিও দেখি এবং কথা হয়! ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সামান্য কথা।
১। ফায়ার সার্ভিস মোটামুটি ২৫/৩০ মিনিটের মাথায় এসেছিল (যদিও সঠিক সময় মনে রাখা হয় নাই)।
২। তাদের ছোট দুইটা বাহন এসেছিল, পরে বড় ইকুইভমেন্ট/লেডার ইত্যাদি এসেছিল, সময় অনেক লেগেছিল।
৩। ফায়ার সার্ভিসের প্রথম দুটি বাহনে যে পানি নিয়ে এসেছিল, তার একটা পানি মোটামুটি রাস্তাতেই পড়ে যায় (হাসবেন না, হোস পাইপের কানেকশন বা জোড়া সঠিক ছিল না বা দিতে দিতেই)।
৪। বাকী যা পানি ছিল, তার হোস পাইপে দিয়ে দুরে থ্রো করতে পারছিল না, কারন পানির বেগ ছিল না, মনে হয় পাম্প মেশিনেও জোর ছিল না!
৫। এর পরেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আমাদের বন্ধুদের শপিং কাম রেসিডেন্টে প্রবেশ করে এবং বলে নিচের ওয়াসা পানির টাঙ্কির মুখ খুলে দিতে, এই সময়ে আমাদের বন্ধু বড় ভাই এগিয়ে এসে পুকুর দেখিয়ে দেন (টাঙ্কি এবং পুকুরের দুরত্ব ১০ হাত, ভিডিওতে দেখুন) এবং বলেন, পুকুর থেকে থেকে নিন।
৬। পুকুর থেকে পানি টানার সেলো মেশিন কম ছিলো, পরে নুতন আরো কয়েকটা আসায় সব মেশিন একসাথে লাগিয়ে পুকুর থেকে পানি টানা হয় (ভিডিওতে দেখুন), তখন অনেক দেরী।
(অফটোঃ ঢাকা শহরের পুকুর গুলো তো সব খেয়ে দিয়েছে, এই বেইলী রোডের পুকুরটাও অনেকবার খাবার চেষ্টা হয়েছে, আমরা সাক্ষী আছি, আমাদের এই বন্ধু চেষ্টায় এই পুকুর এখনো আছে, তবে রক্ষনাবেক্ষন করা যাচ্ছে না, একপাশে কলেজ সাইডে কিছুটা দখল হয়েছে বলা যায়, আমার চোখে দেখা ৩০ বছর আগের পুকুরের সাইজের সাথে এখঙ্কার সাইজ মিলাতে পারি না! মতিঝিল/রমনা এলাকায় আমার দেখা অন্তত ২০/৩০টা পুকুর ছিলো, এই পুকুরটা ছাড়া আর প্রকাশ্য দেখি না, ভরাট করে করে বিল্ডিং বানানো হয়েছে!)
যে কোন শহুরে আগুন নেবাতে ফায়ার সার্ভিসের জুড়ি নেই, তবে যে লোকবল/দক্ষতা/ট্রেনিং/ইকুইভমেন্ট থাকা দরকার, তা আমাদের নেই বলা চলে, যে আগুন ২০/২৫ মিনিটে নেবানো যায় সেটা দেড়/দুই ঘন্টায় যেয়ে ঠেকেছে, কম সময়ে আগুন নেবাতে পারলে এত মানুষের প্রাণ যেত না। দুখের সাথে বলি, এই সব প্রতিষ্ঠান যে গতি ও শক্তিতে চলা দরকার তা একদম অনুপস্থিত।
তবুও আমাদের ফায়ার সার্ভিসকে ধন্যবাদ জানাই, এই সাহসী মানুষ গুলো একটা শহরে প্রাণ, তা আবার প্রমানিত হল!
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৩