মি প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস সাহেব ক্ষমতায় আসার পরে ১০০ দিনের মাথায় একটা রিভিউ দিবো বলে লিখেছিলাম, কিন্তু তা দেই নাই, কারন আরো সময় চাইছিলাম, দেখি কি হয় কি হয় চিন্তা করছিলাম। আজকে এই সরকারের সিরিয়াস ভুল গুলো লিখছি, পরে ভাল দিক গুলো লিখা যাবে। এটাকে ১০০ দিনের রিভিউ বলা যেতে পারে, তবে সংক্ষেপে। (এটা আমার নিজস্ব মতামত যা আমি ফিল করছি একজন সাধারন নাগরিক হিসাবে)
১। পলায়ন সরকারের রাষ্ট্রপতি ও তিন বাহিনীর প্রধানদের না সরানো, যে কোন মূল্যে এদের সরানো উচিত ছিলো, এই সকল পদে নুতন লোক নুতন ডাইমেনশন নিয়ে কাজ করতে পারত, নুতন শক্তি ও নুতন বিপ্লবী চিন্তা আমরা দেখতে পেতাম।
২। প্রতিটা মন্ত্রণালয়ে শুধু অভিজ্ঞতা দেখে নয় বয়স্ক নয়, কর্মঠ ব্যক্তিদের উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ দেয়া দরকার ছিলো, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ ডাইন্যামিক শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানানো যেত, একজনকে দুই/তিন মন্ত্রণালয় দেয়া মোটেও উচিত হয় নাই, যারা কাজ করতে পারছে না তাদের সময় নষ্ট না করে সাথে সাথেই বাদ দেয়া দরকার ছিলো। একজন ব্যক্তি একের অধিক মন্ত্রণালয় চালানোর চেষ্টা তার অধীনের সব মন্ত্রণালয়ের কাজে চরম ব্যহত হয়েছে বা হচ্ছে।
৩। ২০২৪শের আন্দোলনে নিহত আহতদের একদম পরিস্কার তালিকা করা দরকার ছিলো, আহদের তালিকা করে চিকিৎসা ফ্রি করে সুস্থ্য করে ঘরে পাঠানো দরকার ছিলো। নিহতদের পরিবারের এককালীন একদম সাথে সাথেই সাহায্য করা দরকার ছিলো, যাতে তাদের পরিবার বুঝতে পারত, তাদের সন্তান স্বামী আত্মীয়দের আত্মত্যাগ বৃথা যায় নাই বা যাবে না।
৪। আন্দোলনে যুক্ত থাকা ছাত্র ছাত্রী জনতা রিক্সাচালক সহ প্রবাসী যে কোন সাংবাদিক, ব্লগার, ইউটিউবার এবং যে কোন পেশার মানুষদের যাদের ভূমিকা ছিলো তাদের সন্মান জানানো, অন্তত প্রকাশ্য একটা অনুষ্ঠান করে হলেও ধন্যবাদ জানানো যেত বিশেষ করে যারা ফ্রন্টলাইনে সাহসের সাথে ছিলো।
৫। পালিয়ে থাকা গত সরকারের মন্ত্রী এম্পিদের টোকায়ে ধরে ফেলা দরকার ছিলো, এদের ভিন্ন দেশে পালাতে কিছুতেই সুযোগ দেয়া উচিত হয় না, এমন কি যাদের কারনে পালাইছে তাদেরও আইনের আওতায় আনা দরকার ছিলো। এতে সমাজে একটা সমতা তৈরী হত, ধনীরা ভয় পেত, দূর্নীতি করতে সবাই ভয় পেত। কয়েকজনের বিচার ৯০ দিনের মধ্যেই শেষ করে জেলে ভরা দরকার ছিলো। এদের স্থায়ী অস্থায়ী সম্পদ জব্দ করে রাষ্ট্রের কোষাগারে নিয়ে রাষ্ট্রের কাজে লাগানোর দরকার ছিলো বা আছে।
৬। যেহেতু প্রফেসর সাহেবের দায়িত্ব নেয়ার ৩/৪ দিন পরে থেকেই কোন না কোন গ্রুপ বিরাট ম্যাচাকার করে দাবী দাওয়া নিয়ে আসছিলো, রাস্তা সচিবালয় সহ নানান সরকারী অফিস আদালতের কাজ বন্ধ করে এগিয়ে যাচ্ছিলো, অন্তত ক্ষমতা নেয়ার মাস খানেকের মধ্যে এমন কোন সার্কুলার জারীর দরকার ছিলো যে, এই সব করা যাবে না, দাবী থাকলে চিঠির মাধ্যমে জানানো যাবে কিংবা দেশে নির্বাচিত সরকার আসলে তা পেশ করা যাবে। প্রশ্ন তোলা যেতে পারে, এটা কি করে সম্ভব, হ্যাঁ সম্ভব, যেমন করে সাংবিধানিক ধারাও চেইঞ্জ করা হচ্ছে, তেমনি। (এই আন্দোলনকারীদের কারনে শহরের নানান মানুষ ভুগে বিরক্ত এবং সরকারের কাঠামোকে দূর্বল মনে করছে)
৭। বাজার সিণ্ডিকেট তথা বড় ব্যবসাহীদের একচাটিয়া বাজার দখল গুড়িয়ে দেয়া দরকার ছিলো, মনোপোলি স্থান গুলো চিনিহিত করে ভেঙ্গে ফেলা দরকার ছিলো, শুরুতে এরা ভয় পেলেও এই দূর্নীতিবাজ ব্যবসাহী সহ এই শ্রেনীরা আবারো প্রকাশ্যে এসে পড়ছে, বিশেষ করে এরা নির্বাচনের তারিখ অনুমান করে, আবারও সেই কাজে লেগেছে, কারন বুঝতে পারছে, নির্বাচন হয়ে গেলে আর বিচার হবে না, যা পারো কামাও আগের মত, কেহ কিছুই করতে পারবে না!
৮। ক্ষমতা গ্রহনের পর পরেই ফেনী নোয়াখালী কুমিল্লায় বিশাল বড় বন্যা হয়েছে। এতে সরকার প্রধানসহ অনেকে অনেক কিছু করার কথা বললেও বাস্তবে কোন কাজ করা বা এই অঞ্চলের মানুষকে হেল্প করার কোন প্রমান্য ডক্স এখনো দেখি নাই। মানে পুরাই কি মুখের কথা ছিলো? এর পরে টিএসসিতে বন্যা আক্রান্ত লোকেদের সাহায্যের নামে বিশাল অংকের টাকা, কাপড় ইত্যাদি তোলা হয় কিন্তু এই টাকা সম্পদের কোন হিসাব সারা দেশের মানুষ জানে বলে মনে হয় না, মানে সবই কি চুরি গেল! বিবেকবান মানুষেরা নিশ্চিত কোন কিছুই ভুলে যায় না, হয়ত মুখে বলে না, কিন্তু মনে রাখেই।
৯। ছোট দেশ, মানুষ বেশী, বেশির ভাগ অশিক্ষত, অধিকাংশ এখনো গরীব। যে কোন প্রশ্ন উঠার আগেই সরকারের উচিত পরিচ্ছন্ন জবাব দেয়া, সরকারের মুখপাত্র তথ্য প্রমান সহ স্পষ্ট জবাব দেয়া উচিত। কিন্তু অনেক ব্যাপারেই কোন উত্তর নেই, আমতা আমতা উত্তর ছিলো, যাতে সাধারন গণমানুষ নিজের ইচ্ছামত গুজব ছড়িয়েছে, বাকিরা বিভ্রান্ত হয়েছে বা হচ্ছে।
১০। পুলিশের উর্ধতন একটা অংশ যারা নানান অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলো, তারা পালিয়ে গেছে, কেহ খোলস বদলিয়েছে, থানা সহ এদের প্রতিটা প্রতিষ্ঠানের চেইন অফ কমান্ড নষ্ট হয়েছে, কাজের ধারাহিকতা এখনো নেই বলা চলে। সরকার এখানে ৩/৬ মাসের একটা একশন নিতে পারত, নুতন জনবল নিয়োগ সহ সাধারন পুলিশ নিয়োগ দিয়ে থানা গুলোকে এক্টিভ করে ফেলা যেত, এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলা থেমে যেত, দুষ্কৃতিকারীরা ভয় পেত, চাঁদাবাজেরা কিছুটা হলেও হাত ঘুটিয়ে রাখত।
বিদ্রঃ বাকস্বাধীনতার সুযোগে এই লেখা, ভাল না লাগলে ইগ্নোর করতে পারেন, নাথিং সিরিয়াস। রাজনৈতিক কোন সরকার বা নির্বাচিত সরকার থাকলে আমি হয়ত এই সব নিয়ে চিন্তা করতাম না বা ইচ্ছাও হত না! আপনাদের কোন পয়েন্ট থাকলে যোগ দিতে পারেন। এই সরকারের আবার নানান ভাল দিক আছে, তা নিয়েও আগামীতে লিখবো।
ব্লগের জন্য লেখা, ১৩ জুলাই ২০২৫ইং, নয়াপল্টন

সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই জুলাই, ২০২৫ রাত ১২:৪৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


