দারুন এক আঁতাতময় সময় পার করছি আমরা। চারিদিকে আঁতাত। মির্জা ফখরুল আঁতাত করে চলছেন সরকারের সাথে। আঁতাতের অভিযোগ শমশের মবিনের বিরুদ্ধে। যুবদল সভাপতি আলাল নাকি আঁতাতের মাধ্যমে গোপন বৈঠক করে জেলে পদার্পন করেছেন। তারেক রহমান, আন্দালিব রহমান ও মাসুদ সাঈদী সৌদি আরবে বসে আঁতাত করেছেন। মির্যা আব্বাস, সাদেক হোসেন খোকাও নাকি আঁতাত চলছে। টুকু ও আ্যানি আঁতাত করেই ছাত্রদলের নতুন কমিটি দিয়েছেন। ব্যারিস্টার রাজ্জাক ও গওহর রিজভীর আঁতাতে জামায়াত নাকি বিরোধী দল হচ্ছে। তারেক রহমান নাকি নরেন্দ্র মোদীর সংগে আঁতাত করে অবৈধ হাসিনার পতন ঘটাচ্ছেন।
গোলাম আজমের জানাজায় নাকি জামায়াত আওয়ামীলীগ আঁতাতে লাখো মানুষের ব্যাবস্থা হয়েছে। (চটি পিয়াল ও তার আবাল মুরুব্বী বাপের মতে জামায়াত-বিএপি-হেফাজতের ঢাকা শহরের সব মানুষ নাকি জানাজায় উপস্থিত হয়ে শোডাউন করেছে)।
সর্বশেষ আঁতাতের দারুন এক নিদর্শন আজকে দেখলাম। আওয়ামীলীগ যত যাই করো না ক্যানো জামায়াতের হাতে সুন্দর একখানা আন্দোলনের অস্ত্র তুলে দিলেন। এখন তারা প্রতি দিন মিছিল করবে, "নিজামীর মুক্তি চাই", "নিজামীর মুক্তি চাই"। এতো দিন সাঈদী, গোলাম আজমের বিষয়গুলোর কারনে আন্দোলন নিজামী কেন্দ্রিক ছিলো না। দলের প্রধান হিসেবে নিজামীর জন্য প্রতি দিন বিকেল বেলা মিছিল করবে জামায়াত-শিবির এটা খুবই স্বাভাবিক। নিজামী হবেন বাংলাদেশের নেলসন ম্যান্ডেলা অথবা এমন একটা বানানোর চেস্টা করা হবে।
বিশ্বজুড়ে নিজামীর একটা গ্রহন যোগ্যতা অলরেডী আছে জামায়াত দলীয় প্রধান হিসেবে। মন্ত্রী হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কুটনীতিক ও নেতৃবৃন্দের সাথেও তার যোগাযোগ ও সাক্ষাৎ হয়েছে। দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামী হিসেবেও তিনি দেশপ্রেমিক ত্বাত্বিক ও চিন্তাশীল মানুষের কাছে গ্রহনযোগ্য। এ ছাড়াও নিজামী সম্পর্কে গোলাম আজম সাহেবের প্রফেটিক ভবিষ্যৎ বানী রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য ভিত্তিক দ্যা মুসলিম ৫০০ এর টপ ৫০ এর ভেতরে থেকেও নিজামী তার ইনফ্লুন্সের প্রমান রেখেছেন।
এতো কিছুর পরেও যদি তাকে কেন্দ্র করে আন্দোলন না হয় তাহলে দূর্ভাগ্যই বলতে হবে। কিন্তু গোলাম আজমের মৃত্যু ও সাঈদীর রায় পরিবর্তনের পর জামায়াতের জন্য বিরাট একটা সুযোগ এসেছে। এসেছে আন্দোলনের মাধ্যমে দলীয় নেতাকে মুক্ত করার ও তাকে গোলাম আজমের শুন্যস্থানে বসানোর। এখনো সব ঠিকঠাকই মনে হচ্ছে। আঁতাতের ফল জামায়তের পক্ষে যাবে বলেই ধারনা করছি। আর যদি না যায় তাহলে জামায়াত যে স্বপ্ন বুকে লালন করে দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে তা বালির বাঁধের মতো উড়ে যাবে আরো আগামী ৭০ বছরের জন্য।
আমি এখনো বিশ্বাস করি আঁতাত চলছে। আঁতাত চলবে। কিন্তু কোন রকমে একটা আঁতাত করে যি হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে পারতো কেউ। তবেই সেই আঁতাতের জন্য চীর ঋনী হয়ে থাকতাম।
বিস্মৃতির অতলে হারিয়ে যাওয়া একটি প্রিয় নাম
শুনেছিলাম আমার প্রিয় ভাই ও প্রতিবেশী এম ইলিয়াস আলীও নাকি আঁতাত করে লুকিয়ে ছিলেন। আহা আজো তিনি ফিরে এলেন না। আঁতাত জিনিসটা খুব মামুলী বিষয় বলে আর মনে করতে পারছিনা।