somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শেখ হাসিনার রাজনীতি: মিথ্যা ও প্রপাগান্ডায় সয়লাব

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৪ রাত ১০:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বক্তৃতা দিতে হাসিনাকে আমন্ত্রণ অক্সফোর্ড ইউনিয়নে

প্রচারনা চালানো হচ্ছে শেখ হাসিনা আগামী ১৩ থেকে ১৮ নভেম্বরের মধ্যে কোন একদিন অক্সফোর্ড ইউনিয়নের আমন্ত্রনে সেখানে বক্তৃতা দিতে যাবেন। অক্সফোর্ড ইউনিয়নে বক্তৃতা করা নিঃসন্দেহে একটি গর্বের কাজ, সম্মানের কাজ। বিশেষ ব্যাক্তিরাই সাধারনত এই সম্মানজনক দাওয়াত পান। তাই বলে গনধিকৃত, গনহত্যাকারী, গনতন্ত্র বিনাশী একজন অবৈধ স্বৈরশাসককে মানব সভ্যতার জ্ঞান বিজ্ঞানের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিকাশ কেন্দ্র অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ছাত্রদের সংগঠন নিমন্ত্রন করবে, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?



কৌতুহল নিয়ে অক্সফোর্ড ইউনিয়নের সাথে যোগাযোগ করা হলো। ওপ্রান্ত থেকে জানানো হলো শেখ হাসিনার প্রোগ্রামটি ১৭ নভেম্বরে নির্ধারিত আছে। মাথায় প্রশ্ন আসলো কেন এতো রাখ ঢাক করা হচ্ছে? কেনো হাসিনা অনুগতদের পক্ষ থেকে সঠিক দিন তারিখ না বলে এতো লুকোচুরি করা হচ্ছে? বিস্ময়ের সাথে জানতে চাওয়া হলো অক্সফোর্ড ইউনিয়নের মতো একটি সনামধন্য সংগঠন কেমন করে, কোন যুক্তিতে একজন খুনী, স্বৈরশাসক ও গনহত্যাকারীকে তাদের প্রতিষ্ঠানে দাওয়াত করলো? উত্তরে স্পষ্ট করে জানালো যে তারা শেখ হাসিনাকে দাওয়াত করেনি।

বৈধতা পাওয়ার জন্য কাকুতি-মিনতি

বরং পররাস্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীন লন্ডনস্থ হাইকমিশনের কর্তারা শেখ হাসিনার ভুলন্ঠিত ইমেজ পুনোরুদ্ধারের জন্য বাংলাদেশের জনগনের ট্যাক্সের টাকায় অক্সফোর্ড ইউনিয়নের হল রুম ভাড়া করে কিছু সংখ্যক সাদা এবং বাকী সব হাইকমিশন কর্মকর্তা ও আওয়ামী-ইন্ডিদের নিয়ে একটি সেমিনার টাইপ সভা আয়োজন করা হবে। সেখানে শেখ হাসিনা চেতনাৎসীদের মতো বাগাড়ম্বরপূর্ন একটি দলীয় বক্তব্য প্রদান করবেন আর হাইকমিশন কর্মচারী ও আওয়ামী-ইন্ডি অনুসারীরা হাত তালী দেবেন। আর সবশেষে প্রপাগান্ডা মেশিন বাংলাদেশের দালাল সাংবাদিকেরা ছবিসহ প্রকাশ করবেন শেখ হাসিনা অক্সফোর্ড জয় করে ফেলেছেন।

এই হচ্ছে ইমেজ উদ্ধার প্রচেস্টার প্রসেস। এখন কথা হচ্ছে অক্সফোর্ড ইউনিয়নের হল কি এতোই সস্তা যে চাইলেই ভাড়া পাওয়া যায়। জি ভাই ক্যাপিটালিজমের যুগে বৃটিশ পার্লামেন্টেও হল ভাড়া করে নিজস্ব অনুষ্ঠান সম্পন্ন করে গেয়ে বেড়ানো যায় বৃটিশ পার্লামেন্টে বক্তৃতা করেছি। এই আমার মতো অধম একটি সোসাইটির মেম্বার হয়েছেন কিছুকাল পূর্বে যারা বৈশ্বিক ও চলমান বিভিন্ন সামাজিক ফেনমেনন নিয়ে আলোচনা করে থাকেন, এবং প্রতিমাসেই এই আলোচনা সভাটি বৃটিশ পার্লামেন্টেই হয়। এর মানে এই না যে উপপাদ্য প্রতি মাসে বৃটিশ পার্লামেন্টে বৃটিশ এমপিদের সামনে বক্তৃতা করেন। বলছিলাম ক্যাপিটালিজমের কথা, ক্যাপিটালিজমে বেড রুম, কিচেন রুম, বাথরুম পর্যন্ত ভাড়া দেয়া জায়েজ আছে। তো অক্সফোর্ড ইউনিয়ন তাদের নিজস্ব প্রোগ্রামের বাইরে সেই ভাড়া দেয়ার কাজটাও করে এক্সট্রা কিছু টাকা পয়সা আয়ের উদ্দেশ্যে। আর এখন তাদের হল ভাড়া নিয়ে কোন একটা সভা-সেমিনার করে আপনি যদি বলেন ওরা আপনাকে দাওয়াত করেছে অক্সফোর্ডের স্টুডেন্টের সামনে গনতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিকিকরন জাতীয় কিছু নিয়ে বক্তৃতা করতে তাহলে সয়ং নাসিরুদ্দিন হোজ্জাও হেসে উঠবে।

আমার আছে প্রোপাগান্ডা মেশিন

৫ জানুয়ারির ভোটার বিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পর থেকে শেখ হাসিনা সারা বিশ্বের কাছে হাসির পাত্রি হয়েছেন। পরিচিত হয়েছেন গনতন্ত্র হত্যাকারী, ভিন্নমত দলন কারী হিসেবে। বিগত ৫/৭ বছর সময়ে হাজার হাজার মানুষ হত্যার দায়ে "লেডি হিটলার" উপাধীতে ভুষিত হয়েছেন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে। বৃটেনের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ প্রার্থনা করায় সয়ং ডেভিড ক্যামেরন বিব্রত হয়েছেন। আমিরাতে তার রিসেন্ট সফর শেষ হয়েছে চরম বেইজ্জতির মাধ্যমে। ইটালী, ফ্রান্স বিশ্বের দেশেই যাচ্ছের কোথাও দেয়া হচ্ছেনা একজন প্রধানমন্ত্রীর প্রাপ্য সম্মান। এমন কি তার প্রভু রাস্ট্র ইন্ডিয়াতেও নয়। বিশ্বজুড়ে তার বর্তমান গ্রহনযোগ্যতা শুন্যের কোঠায়। এমতাবস্থায় বিশ্বব্যাপী পরিচিত নামী দামী প্রতিষ্ঠানে জনগনের টাকা অপচয় করে ছোট খাটো সভা করে তার ইমেজ পুনরোদ্ধারের চেস্টা হচ্ছে, যা দালাল মিডিয়া ৪/৫ কলাম হেডিং দিয়ে ফলাও করে প্রচার করবে। আর আমরা হুজুগে বাংলাদেশীরা বলবো বাহ বাহ হাসিনাকে দেখি অক্সফোর্ড ইনিভার্সিটিতে লেকচার দেয়ার জন্য আমন্ত্রন করা হয়!! অতীতে যেমন করে বৃটিশ নিউজ পেপারে আনুমানিক ৩ কোটি টাকা খরচ করে ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে বলা হয়েছিলো যে নিউজ পেপারগুলো নিজে থেকেই এসব হাবিজাবি তথাকথিত উন্নয়ন ফিরিস্তি প্রকাশ করেছে!! যা ছিলো সর্বৈব মিথ্যা।

অক্সফোর্ড ইউনিয়নের ওয়েবসাইট

অক্সফোর্ড ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে আপকামিং ইভেন্ট্স লিস্টে হাসিনার নাম নেই এখনো। কারন সম্ভবত হল ভাড়া করা কোন প্রাইভেট প্রোগ্রাম তাদের ওয়েবসাইটে আসেনা। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে আগামী ২০ নভেম্বর ড. ইউনুস কে তারা দাওয়াত করেছে, এবং ড. ইউনুসের নাম ওয়েব সাইটে ২০ তারিখের স্পীকার হিসেবে জ্বলজ্বল করছে। যে ১৭ তারিখে হাসিনার জন্য স্কেজিউল নেয়া হয়েছে সেদিনের স্পীকার হিসেবে অক্সফোর্ড ইউনিয়নের ওয়েবসাইটে রয়েছে প্রখ্যাত বৃটিশ কমেডিয়ান ও আ্যাক্টিভিস্ট জো ব্রান্ডের নাম।



ঘৃনার রাজ্যে শেখ হাসিনার বসবাস

প্রিয় বাংলাদেশ, আমাদের মাথার উপর জগদ্দল পাত্থর হয়ে এমন এক স্বৈরশাসক বসে আছে যাকে সারা পৃথিবী ঘৃনা করে। সে আমাদেরই রক্ত আর ঘামে অর্জিত কষ্টের টাকায় বিশ্বব্যাপী ঘুরে বেড়ায় তার নিজের ব্যাক্তিগত ইমেজ উদ্ধারের জন্য। আর সেই তামাশা আজ ৬ বছর ধরে আমরা হিন্দি সিরিয়ালের মতো (প্রচন্ড ঘৃনা সহ) উপভোগ করছি। বিচারের ভার থাক আপনাদের উপরই।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই নভেম্বর, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:০৪
১৭টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগটা তো ছ্যাড়াব্যাড়া হয়ে গেলো :(

লিখেছেন সাখাওয়াত হোসেন বাবন, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৫৭



আমি আমার ব্লগিং শুরু করি প্রথম আলো ব্লগে লেখালেখির মাধ্যমে। ব্লগটির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। কারণ প্রথম আলো ব্লগ আমায় লেখালেখিতে মনোযোগী হতে শিখিয়েছে । সে এক যুগ আগের কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লুঙ্গিসুট

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:২৪



ছোটবেলায় হরেক রঙের খেলা খেলেছি। লাটিম,চেঙ্গু পান্টি, ঘুড়ি,মার্বেল,আরো কত কি। আমার মতো আপনারাও খেলেছেন এগুলো।রোদ ঝড় বৃষ্টি কোনো বাধাই মানতাম না। আগে খেলা তারপর সব কিছু।
ছোটবেলায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:২৫

স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখার মত মুফতি তাকি উসমানী সাহেবের কিছু কথা

ছবি কৃতজ্ঞতা: অন্তর্জাল।

একবার শাইখুল হাদিস মুফতি তাকি উসমানী দামাত বারাকাতুহুম সাহেবকে জিজ্ঞেস করা হল, জীবনের সারকথা কী? উত্তরে তিনি এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

=মৃত্যু কাছে, অথবা দূরেও নয়=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



©কাজী ফাতেমা ছবি
দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলি, আমারও সময় হবে যাবার
কি করে চলে যায় মানুষ হুটহাট, না বলে কয়ে,
মৃত্যু কী খুব কাছে নয়, অথবা খুব দূরে!
দূরে তবু ধরে নেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা

লিখেছেন করুণাধারা, ৩০ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:২৯



এই ধাঁধার নাম সবুজ চোখের মানুষের ধাঁধা; নিচের লিংকে এটার ভিডিও আছে।

স্বৈরশাসকের বন্দী

এই ধাঁধাটি আমার ভালো লেগেছিল, তাই অনেক আগে আমার একটা পোস্টে এই ধাঁধাটি দিয়েছিলাম। কিন্তু সেই পোস্টে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×