somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

চিঠি...।

১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয়বরেষু,
তোমাকে লিখিনা আমি কতদিন, কত বছর। এই লেখা না লেখার মাঝে পেরিয়ে গেছে আমাদের তিনটি বছর, ভাবতে পারো? আজ এতদিন পরে তোমাকে আবার লিখতে বসেছি। কেন, আমি নিজেই জানিনা। কি দরকার ছিল বলতো, তোমার সঙ্গে আমার পরিচয় হওয়ার! তা না হলে তো জীবনটা আমার এমন ওলটপালট হয়ে যেতোনা। তোমার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার আগে খুব সাধারণ একটা জীবন ছিলো আমার। যে জীবনে বড়জোর হাতের মুঠোয় জোনাকপোকা ধরা দিত। কিন্তু কখনোই জোৎস্না ছোঁয়ার কথা ভাবিনি আমি। তুমিই প্রথম আমাকে জোৎস্না ছুঁতে শিখিয়েছিলে। আর আজ আমি জোৎস্নায় ভিজে তোমাকে ছোঁয়ার ব্যর্থ চেষ্টা করি।জীবনের একুশটা বর্ষা পার করতে আমি পূর্ণিমা দেখেছি অনেক। সেই সঙ্গে অমাবস্যাও কিছু কম নয়। সে সবই তোমার কারণে।
একমাত্র তোমার করতলেই আমি আমার আঙুল দিয়ে বিশ্বাসের আঁকিবুকি কেটেছিলাম। কিন্তু তুমি যে কখন এবং কেন আমার নিশ্চিত আঙুলের নিচ থেকে তোমার হাতটা সরিয়ে নিলে, আমি বুঝতেই পারিনি। সেই যে তুমি হাতটা টেনে নিয়ে চলে গেলে, তারপর থেকে আমি একলাই পথ চলি আমি। এমনকি যে পথে চলি, সে পথে অন্য কারো ছায়া পর্যন্ত পড়তে দিইনা।ছায়া বাঁচিয়ে চলি আমি।জানিনা, কতদিন পারব। মানুষের মন তো , পিছলে যেতেই পারে! সেদিন একজন বলছিল মানুষ নাকি চোখ মেলে যাকে ভাবে তাকে নয়, বরং চোখ বুজলে যার কথা উঁকি দেয়, যে মুখ ডুবতে ডুবতে ভেসে ওঠে, তাকেই ভালবাসে। কিন্তু আমার যে চোখ খুললেও তুমি, চোখ বুজলেও তুমি! তবে আমি কাকে ভালবাসি?
তুমি বোধ হয় আমাকে ভুল বুঝেছিলে। কিন্তু তোমার কাছে তো খুব বেশী কিছু চাইবার ছিলো না আমার! আমি কখনোই আকাশটাকে নামিয়ে এনে দিতে বলতামনা তোমাকে আমার হাতের মুঠোর নাগালে। কিংবা একমুঠো রোদ এনে হাতের আঁজলা ভরে দিতেও বলতাম না। হয়তো বলতাম দুটো বেলকুঁড়ির মালা এনে খোঁপায় গুঁজে দিতে। কিংবা একটা জোনাকপোকা ধরে দিতে। তুমিই বলো, সেটা কি খুব বেশী কিংবা খুব ভুল চাওয়া হয়ে যেতো আমার? এসব কথা আজ বোধ হয় অবান্তর, তাই না? যেখানে আমি নিজেই অবান্তর!
জানো, আমার পরিচিত, পরিচিতা অনেকেই আমাকে বলে তোমাকে ভুলে যেতে। কিন্তু তোমাকে আমি ভালোবেসেছি নিশ্চয়ই ভুলে যাওয়ার জন্য নয়। ভালোবাসা তো এমন নয় যে কাটাকুটি হলো আর ইরেজার দিয়ে মুছে ফেললাম। তাছাড়া আমি কখনোই তোমার প্রেমে পড়িনি যে নতুন করে আবার অন্য কারো প্রেমে পড়ে দিব্যি তোমাকে ভুলে যাব। তোমাকে আমি ভালোবেসেছি। একটু একটু করে, আমার সমগ্র সত্তা দিয়ে, অবশিষ্ট কিছুই রাখিনি কারো জন্য। এমনকি নিজের জন্যও নয়। আমি এখন আমার শূন্য পৃথিবীর একমাত্র বাসিন্দা।
তোমার কি মনে আছে, তুমি আমার উঠোনে সাতটা অমরাবতী এনে দেওয়ার কথা বলেছিলে? অমরাবতী নাইবা দিলে, দু:খ নাই, তবে উঠোনের এক কোণে শশীবৃক্ষ হয়ে আমার সাদামাটা উঠোনটাকে মায়াময় করতে পারতে নিশ্চয়ই। যদি বল পারতে না, সেই নির্জলা মিথ্যে কথাটাকে আমি কিছুতেই বিশ্বাস করতাম না। তবে তুমি বোধ হয় এই কথাটা নি:শঙ্কচিত্তে বিশ্বাস করতে পারো যে, এ পর্যন্ত একমাত্র তুমি ছাড়া এমন কাউকে পাইনি, যাকে হৃদয় উপড়ে বলতে পারি-ভালবাসি। বলতে যে ইচ্ছে হয়নি তা নয়, অনেক সময়ই ইচ্ছে হয়েছে, কিন্তু ইচ্ছে শেষেই থমকে দাঁড়িয়েছি-কাকে বলব? আমি চিরকালই চেয়েছি কেউ একজন আমার ভাবনাগুলোকে স্পর্শ করুক। তার অনুভূতি দিয়ে আমাকে না বুঝলেও অন্তত: বোঝার চেষ্টাটুকু করুক। কিন্তু এমনই ঘোলাজল ভাগ্য আমার, সেখানে এমন কারো ঠাঁই হয়নি যে অন্তত: সেই চেষ্টাটুকু করেছে। তাই আজ এতটা বেলা পর্যন্তও আমার বুকের পাঁজর পিছলে গিয়েও তোমার পরে সেখানে কোন ভুল ঘাসফুল পর্যন্ত গজায়নি।
আমার ভাবতে অবাক লাগে যে, তুমি একদিন আমার সত্তার সঙ্গে আমাকে অবিচ্ছিন্ন করেছিলে, সেই তুমিই আবার কোন মন্ত্রবলে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে নিলে আমার থেকে। অথচ আমার আজও শেখা হলোনা সেই বিস্মরণ মন্ত্রটা। স্মৃতিবিষে আমি স্বপ্নভূকই রয়ে গেলাম।
আমার আজ ইচ্ছে করে অচেনা পথের পথিক হয়ে পথে নামতে।তারপর শুধুই গন্তব্যহীনতায় এগিয়ে চলা। কিংবা জলে নেমে, জলের বুক দিয়ে লেখা-ভালোবাসি। জানিনা আমি-আজ এত বেশী জল জমেছে আমার দু’চোখের গভীরে যে, মাঝে মাঝেই তার থেকে কিছুটা ঝরিয়ে হালকা করে নিই চোখ দুটোকে। কিন্তু তারপরও কথা থেকে যায়। কথাটা হলো-তোমাকে আমি ভালোবাসি। আবার ঘৃণাও করি। যতটুকু ভালোবাসি, ঠিক ততটুকুই ঘৃণা করি। তাহলে বুঝতে পারছ আজও তোমাকে আমি কতটা ভালোবাসি? তবে অতটা উদার আমি হতে পারবোনা কখনোই। অন্যভাবে বললে, হতে চাইনা। তোমাকে দায়মুক্ত করব না কখনোই। কোন অসতর্ক মুহুর্তেও নয়।
ইতি-
তোমার অতি পরিচিত কেউ একজন।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১১:৫৩
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×