somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তিথি এবং আমি

০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৫ ভোর ৪:২২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-আর খেয়ো না
-এটাই লাস্ট পেগ, চানাচুর খাবে?
-না খাবো না। আর না, প্লিজ
-এটাই লাস্ট। তাহলে সিগারেট খাবে?
- উহু। কখন থেকেই তো বলছো এটাই লাস্ট, আর
কত?
-আচ্ছা শেষ করছি।
-তুমি এগুলো আর কখনো খাবে না।
- আচ্ছা না খাওয়ার চেষ্টা করবো।
-উহু, বল খাবে না।
-আমি খেলেই বা তুমি কি খবর পাবে?
এটা তিথি আর আমার গতকালের অসমাপ্ত
চ্যাটের কথোপকথন। অ্যালকোহলের
ঝাঁঝালো তীব্র স্বাদ নেয়ার ইচ্ছা আমার
সাধারনত হয় না। এর আগে অ্যালকোহলের
আশ্রয় নিয়েছিলাম এমনটাও
কখনো হয়নি বলেই মনে হয়।
সাথে নিকোটিনের ধোয়ায় নিজের আবেগ
উড়িয়ে দেয়া। এক চুমুক অ্যালকোহল আর এক চুমুক
নিকোটিনের একসাথে স্বাদটা অসাধারন।
অনুভুতিহীন করে দেয়া যায়
নিজেকে কিছুক্ষনের জন্য।
এই অনুভুতিহীন করে দেয়ার
খেলাটা আমি তিথির কাছেই
শিখেছি তবে ওর পদ্ধতিটা ছিল একটু ভিন্ন
প্রকৃতির।
খোলা মাঠ, চারপাশে মুক্ত আকাশ আর বুক
ভরে শ্বাস নেয়ার মত যথেষ্ট
জায়গা পেতে হবে। নিজেকে ক্লান্ত কোন
প্রানীর মত ভাবতে ভাবতে নরম ঘাসের উপর
শুয়ে পরা। সারাদিনের কাজ শেষে ঘাসের
উপর শুয়ে থেকে একেবারে নিজের মত
করে নিজেকে ভাবা। মুক্ত আকাশের
দিকে তাকিয়ে তারা গোনার মত
বৃথা চেষ্টা করা।
এমন করেই একসময় নিজেকে অনুভুতি শুন্য
করে ফেলা।
বিষয় একরকম রেখে কাজ ভিন্নরকম কাজ করার
পদ্ধতি মানুষ সৃষ্টির শুরু থেকেই ভেবে আসছে।
আমিও তেমন কিছুই চেষ্টা করলাম। অনুভুতিহীন
করার চেষ্টা করলাম তবে তিথির
দেখানো উপায়ে না।
আচ্ছা, এই সময়টা তিথি কি করছে?
চোখ বেয়ে কয়েক ফোটা জল পরছে, আর
তাকে পার্লারে নিয়ে যাওয়ার
চেষ্টা করছে তারই কিছু কাছের লোকজন।
সাথে শাড়ী সহ অন্যান্য সাজসামগ্রী।
হৈমন্তির গায়ের আটপৌরে শাড়ী না,
একেবারে ঝকঝকে নতুন শাড়ী যা গতকাল
অথবা তার আগেরদিন কেনা হইছে কোন
বিখ্যাত শপিং মল থেকে।
দেশের ভিতরে হতে পারে আবার দেশের
বাইরের ও হতে পারে। কপালে একটা লাল
রং এর ছোট্ট টিপ। গলায়, কানে আর
নাকে সোনার গহনা চকচক করছে হয়ত।
এই মেয়েটা কখনো সাজুগুজু পছন্দ করতো না,
ঝকঝকে নতুন শাড়ী নয়, হৈমন্তির
আটপৌরে শাড়ী তার পছন্দ। চোখে কাজল
পর্যন্ত দিতে চাইতো না,
এমনকি নখে হালকা রং এর কোন নেইল পলিশ
ও দিতে রাজি হয়নি কখনো। লিপস্টিক ছিল
দুচোখের শত্রু। চুল কাটানো ছাড়া আর কোন
সাজুগুজু করার জন্য
কখনো পার্লারে যেতে রাজি হয় নি।
মানুষকে নাকি অনেক ক্ষেত্রেই নিজের
মনের বিরুদ্ধে কাজ করতে হয়।
তিথি কি মনের বিরুদ্ধে করছে নাকি মনের
ইচ্ছায়?
নাকি নিজে অসহায় আত্মসমর্পন করেছে তার
পরিবারের কাছে অথবা আত্মীয় স্বজনের
কাছে।
এখন তিথির মস্তিষ্কে একটু
ঘুরে আসতে পারলে ভালো হত, দেখা যেত
সেখানে কতটা অংশ জুড়ে আমার অবস্থান
আবার কতটা অংশজুড়ে নতুন মানুষটার অবস্থান।
আমাকে নিয়ে ভাবতে থাকা মস্তিষ্কের
অংশ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করছে। কমতে শুরু
করছে কথাটা ঠিক না হয়ত, বলা যায় নতুন
মানুষটাকে নিয়ে ভাবা আমার
অংশটাকে রিপ্লেস করছে। একসময় আমি আর
সুযোগ পাবো না তার মস্তিষ্কে থাকার।
ততদিনে তার পুরোটা অংশজুড় হয়ত সেই
মানুষটা বসবাস শুরু করবে যাকে সে একসময়
আমার কারনে প্রচন্ড ঘৃনা করতো।
ভালোবাসা ঘৃনায় পরিনত হওয়ার সুযোগ পায়
এটা সত্যি, কিন্তু এটার উল্টোটাও
কি কখনো হয়? অর্থাৎ ঘৃনাও
ধীরেধীরে ভালোবাসায় পরিনত হওয়া।
আচ্ছা, তিথির গতকালের চ্যাটের
কথা মনে আছে? পারিবারিক আবেগের
বশিভুত হয়ে নিজের
আবেগকে ভুলতে বসা তিথি কি আমাদের এই
ঘন্টার পর ঘন্টার চ্যাট মনে রাখবে? হয়ত
মনে রাখবে নাহয় সময়ের পরিক্রমায়
চেষ্টা করতে করতে একসময়
সত্যি সত্যি ভুলে যাবে।
বিঃদ্রঃ নিজের কিছু অনুভুতির সাথে মিশ্রন
ঘটিয়ে একটা অর্থহীন গল্প লেখার চেষ্টা।
কারো সাথে তুলনা করলে নিজ
দায়ীত্ব্রে করবেন।
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×