হঠাৎ থমকে গেলাম। আজ আমাদের সময় পত্রিকায় প্রকাশিত একটি খবর দেখে শিহরিত হই। বিশ্বকাপ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব নাকি পাচ্ছে ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠান। আর অনুষ্ঠান পরিকল্পনাও নাকি ওদের ইচ্ছেমতো হচ্ছে। ওদের ইচ্ছের এই প্রতিফলন ঘটবে আমাদের দেশের মাটিতে, ষ্টেডিয়াম-এ। নামেমাত্র দায়িত্ব পাচ্ছে এটিএন ইভেন্টস।
প্রতিটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এ থাকে আয়োজক দেশের নিজেকে তুলে ধরার প্রাণান্ত প্রচেষ্টা। নিজের কৃষ্টি, ইতিহাস আর সংস্কৃতি কে তুলে ধরার এটাই সম্ভবত সর্বোত্তম মাধ্যম। আর এক্ষেত্রে যৌথ আয়োজক থাকলে প্রাধাণ্য পায় সেই দেশ যেখানেই তা অনুষ্ঠিত হয়।যেমন টা আমরা দেখেছি কোরিয়া-জাপান ফুটবল বিশ্বকাপ ২০০২ এ। এমন অভাগা আমার দেশ, আমরা, যারা এমন সুযোগ পাওয়া সত্বেও তা অন্যের হাতে তুলে দিচ্ছি। ছি দেব, না থুতু মারব আমাদের?
এমন যদি হত আমরা এমন আয়োজন করতে পারতাম না তাহলে অন্য কথা। কই আমরা তো এস. এ. গেমস এর আয়োজন করেছি। বিশ্বমানের সফল সেই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান যারা টিভিতে দেখেছেন তারা যেন নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারে নি যে এমন আয়োজন ও আমরা পারি। আর এস. এ. গেমস এর চেয়ে এই ক্রিকেট বিশ্বকাপের বাজেট নিশ্চয়ই আরো বেশি। নিজেদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজন করতে না পারার কোনো কারণ নেই। তাহলে কেন এই সিদ্ধান্ত? কেন ভারতকে সুযোগ করে দিতে নিজেদের বিকিয়ে দেয়া, সম্মানহানী করা?
ওতে নাকি, অমিতাভ বচ্চন, অভিষেক, ঐশ্বরিয়া, সালমান খান এরা আসবে।আমার ক্ষুদ্র জীবনে যত উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখেছি কোথাও দেখিনি নায়ক-নায়িকা আর ফিল্মষ্টারদের কদাকার নাচানাচি আর রঙ্গতামাশা (আই.পি.এল. ছাড়া)। সেখানে দেখেছি প্রস্ফুঠিত হয়ে উঠেছিল দেশাত্, সেখানে দেখেছি প্রস্ফুঠিত হয়ে উঠেছে দেশাত্মবোধ, উদ্ভাসিত হয়েছে বিশ্বজনীন চেতনা; যা অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধারণ, শৃঙ্খলিত কতক স্বেছাসেবী দ্বারা, নিষ্পাপ শিশুদের সমবেত পরিবেষণার দ্বারা। দু-চারজন সেলিব্রিটির চকচকে মুখ না দেখিয়ে দেখান হয়েছে সম্মিলিত প্রাণোচ্ছ্বাসের জনজোয়ার। দুঃখের বিষয় আমাদের দেশে, আমাদের মাটির, আমাদের ষ্টেডিয়াম এ বসে আমাদের কেই দেখতে হবে ওইসব দৃশ্য আর বিশ্ববাসী আমাদেরকে, বাংলাদেশকে জানবে ভারতের একটি অঙ্গরাজ্য হিসেবে, দেখবে একটি রাষ্ট্রকে যারা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করে।
জানিনা, বিসিবির কর্তাব্যক্তিরা কেন এটা করেছেন; জানিনা, বিসিবি সভাপতি কেন এটা করেছেন; জানিনা ১৩ বছরের একজন বালক তার দেশকে সম্মানিত দেখতে চায় অথচ তার দেশের গর্ধভ কর্তাব্যাক্তিরা তা চায় না। তবে একটা জিনিস জানি, আমার মত ২৩ বছরের তরুণদের কাছে তোমরা চিরদিন ঘৃণিত থাকবে, নিন্দিত থাকবে, হয়তোবা মীর জাফরের চেয়েও বেশি।
লিঙ্কঃ Click This Link

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




