somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধ্যপ্রাচ্যের সাফাই গাইতে এসে ইউরোপের ছিদ্রান্বেষণ....? নাকি ভুল রিপোর্টের বিকৃত তাফসীর?

১২ ই নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাহিরাহী নামের একজন ব্লগার দেখলাম একটা পোস্ট দিয়েছেন ইউরোপে কর্মস্থলে নারীদের যৌন নির্যাতনের কিছু পরিসংখ্যান তুলে দিয়ে।

তার পোস্টটি বিশ্লেষণ করার আগে আসুন রিপোর্টটি একটু ঘেঁটে দেখি:

২০০৪ সালে প্রকাশিত এই ইউরোপীয় ইউনিয়নের জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট কর্মস্থলে নারী ও পুরুষের ওপর যৌন নির্যাতন ও অধিকারের সমতা বিষয়ে কিছু তথ্য তুলে ধরে। সংক্ষেপে বিষয়গুলি হলো, 'যৌন নির্যাতন' বলতে আসলে কি বোঝায়, দেশওয়ারী কি কি আইন আছে, আইনগুলির প্রয়োগে প্রতিটি সদস্য দেশে কি কি ব্যবস্থা আছে, নারী পুরুষের সমতা নিশ্চিত করনে এই দেশেগুলির সরকার কি ব্যবস্থা নিতে পারে... ইত্যাদি।

রিপোর্টের মূল সুরটিই হলো নারী ও পুরুষ যাতে কর্মস্থলে আত্মসন্মান নিয়ে কাজ করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সরকারগুলি কি ভাবে সাহায্য করতে পারে।

এবার আসুন কর্মক্ষেত্রে 'যৌন হয়রানি' বলতে আসলে কি বোঝায়:

কর্মক্ষেত্রে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট বলতে একজন কর্মীর প্রতি অন্য কর্মী বা কর্মকর্তার যৌন ইঙ্গিত, কাজ, শব্দোচ্চারন, দাবি ইত্যাদি বোঝানো হয়।

উদাহরন হিসেবে অনাকাঙ্খিত রসিকতা, মন্তব্য, ভঙ্গি কিংবা ক্রমাগত প্রেমের প্রস্তাব, হাত বা শরীর স্পর্শ করা ইত্যাদি উল্লেখ করা যায়।


এবার দেখুন উক্ত রিপোর্ট থেকে নাকি মাহিরাহি পেয়েছেন কিছু পরিসংখ্যান।

প্রথম পরিসংখ্যানটি আসুন দেখি আমরা:
অস্ট্রিয়ায় কর্মস্থলে শতকার ৮০ জনের মত মহিলা জীবনে একবার কিংবা একাধিকবার বিভিন্ন মাত্রার যৌন নির্যাতনের শিকার হন।
Click This Link
তার মতে যেহেতু জীবনে একবার হলেও যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন অস্ট্রিয়ায় মহিলা কর্মীরা, সুতরাং ইসলাম ভালো এবং ইসলাম / বোরখা খারাপ নয়। (অন্ততঃ তার পোস্টের মূল সুর এটাই)

তিনি এবং তার তোষনকারী জনতা এই বিষয়টা পুরো ভুলে গেলো, যে ইউরোপে নারী ও পুরুষের সমান অধিকার রয়েছে এসব বিষয়ে। সংঘটিত অপরাধ নিয়মতান্ত্রিকভাবে রিপোর্ট হয়, এবং এর সুরাহাও হয়।

অর্থ্যাৎ আইন রয়েছে, এর প্রয়োগ ও রয়েছে। তিনি যে মধ্যপ্রাচ্যের হয়ে সাফাই গাইতে এলেন, আসুন জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন মোতাবেক একটি তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র ইয়েমেনের অবস্থা দেখি।

ইয়েমেন: ১৯৯০ সালের সংবিধান মোতাবেক সকল নাগরিকের সমান অধিকার থাকার কথা, কিন্তু ১৯৯৪ সালেই এর কাটাছেড়া করে 'ডিস্ক্রিমিনেশন' বিষয়ে সম-অধিকার মুছে ফেলে।

ফলে নারী এখন শরিয়ার মাধ্যমে পুরুষের অধীনে অসংখ্য অসম আইন দ্বারা শোষিত ও নির্যাতিত হচ্ছে। ইয়েমেনের আইনি ব্যবস্থা এখন শরিয়ার অধীনে যেখানে নারীর সম-অধিকারই নেই। বিশেষত বিয়ে, সম্পত্তি ও সন্তান বিষয়ক আইনগুলি মোটা দাগে নারী-বিদ্বেষী, যেমনটা ইসলাম করে থাকে অন্যান্য শরিয়া ভিত্তিক ইসলামী দেশগুলিতে।

বিস্তারিত এখানে: Click This Link

উপসংহার:
মাহিরাহি এবং সমমনা ইসলামী প্রচারকদের প্রতি বাংলাদেশের সাধারন জনগনের একধরনের প্রচ্ছন্ন বিরক্তি ও ঘৃনা রয়েছে। কারন পরকাল ও সৃষ্টিকর্তা বিষয়ে মানুষের দুর্বলতাকে পুঁজি করে এরা (মোল্লাতন্ত্র ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিনিধিরা) মানুষের মাঝে হিংসা ও বিদ্বেষের বীজ বপন করে চলে।

যেখানে পুরো জাতি আজ ইভ টিজিঙের মতো নারী বিদ্বেষী আচরনের বিরূদ্ধে একতাবদ্ধ, সেখানে এরা ইউরোপের উদাহরন দেখিয়ে বলতে চায় দেখো সেখানেও নির্যাতন আছে।

অথচ তাদের বক্তব্যে যে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে, সে বিষয়ে বাকিরা বিভ্রান্ত।

ইউরোপে নারী পুরুষের সম অধিকার বিদ্যমান এবং যৌন হয়রানির মতো ক্রিমিনাল একটিভিটি বিচারের মুখোমুখি হতে হয়।

কিন্তু ইসলাম ভিত্তিক রাষ্ট্রে নারীর সে অধিকারই নেই। নারী এখানে দাসী এবং পুরুষের ইচ্ছার অধীন। সুতরাং হয়রানি বিষয়ক পরিসংখ্যানের প্রশ্নই আসে না।

আমাদের বুঝতে হবে, আমরা আসলে কোন ধরনের রাষ্ট্র চাই, ন্যায্য রাষ্ট্র, নাকি কল্পিত ইশ্বর ভিত্তিক অসম অধিকারের রাষ্ট্র।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই নভেম্বর, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:২৩
১২টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×