somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অরন্যের একটি দিন এবং একটি রাত্রি - ২

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১০ দুপুর ২:৪২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





ব্যাকগ্রাউন্ডে তখনও বাজছে -
Hooray! Hooray! It's A Holi-Holiday
what a world of fun for everyone, holi-holiday
Hooray! Hooray! It's A Holi-Holiday

ফ্রেমে একে একে ভেসে উঠছে রিসোর্টটির লোকেশন।
সবুজ ঘাসে উপর হরিন হেঁটে বেড়াচ্ছে – পাশে সুইমিং পুল।
কৃত্রিম লেকে বোট রাইডিং – ঝিরি ঝিরি বাতাসে গাছের পাতা গুলো দুলছে...
সব মিলিয়ে খুবই প্রানবন্ত একটি বিকেল।

(গান থামতেই , ক্যামেরা এসব ফ্রেম বন্দী করে চারপাশে একটা ঘূর্ণি খেয়ে -ছাতার নিচে গোল টেবিলে বসা তিন বন্ধুর কাছে চলে আসবে। ক্লোজ আপ শটে শুভ’র মুখ।)

-(মুখে হাসি ধরে রেখে বলবে) আজকের প্রোগ্রামে ১০ এ সাড়ে ৯ দিলাম। ০.৫ কাটলাম আচমকা বৃষ্টি হওয়ার জন্য – যা অবশ্য পরে ঝরঝরে হয়ে উঠেছে কিছুক্ষণ বাদেই।
-(জ্যাকি সায় জানিয়ে বললো) রোজার পর এসে নাইট স্টে করলে দারুন হবে।
- (মুন্না ওর মুখের কথা কেড়ে নিয়ে বললো) সারারাত আড্ডাফাই , গানা-বাজানা –জম্পেশ হবে রে !

হাল্কা জুম আউট করলে ফ্রেমে দেখা যাবে-

তিন পরিবার কত্রী বাচ্চাদের রেডী করে ল’নের দিকে এগিয়ে আসছে।

সবাই তৈরী হয়ে যাওয়ায় এলো বিদায় ঘন্টা।

গাড়ী দুটিতে আগের মতই যাত্রীরা আরোহনের পর তারা রওনা হয়ে গেল মুন্নার পরিচিত রেস্টুরেন্ট এ ইফতারের উদ্দেশ্যে।

পরের ফ্রেম।
সুসজ্জিত ডাইনিং টেবিলে রকমারি ইফতার।
মাগরিব এর আজান শোনা গেলে ওরা সবাই রোজা খুলবে।
ইফতার সেরে জামাতে নামাজ পড়া হয়ে গেলে বাইরে বারান্দায় বসলো চা-সিগারেট সমেত মিনি আড্ডা।
মূল বিষয় রাজেন্দ্রপুর থেকে ফেরার সময় কোন পথে ফেরা হবে। গতানুগতিক ভাবে মেইন রোড না কি জ্যাম এড়ানোর জন্য গাজীপুর লিংক রোড ধরে ফেরা হবে – এই নিয়ে হাল্কা আলাপচারিতা – সাথে ‘চা’ আর ‘টা’।

শুভ রাতের বেলা এই লিংক রোড নিরাপদ হবে কিনা জানতে চাইলে - মুন্না নিজেকে এই এলাকা এক্সপার্ট দাবী করে বললো, “ আমি চাকরীর শুরু থেকেই এই রাস্তায় চলাচল করছি। রিক্সায় তোর ভাবীরে নিয়ে আমার অনেক রোমান্টিক সময় কেটেছে এখানে। কান্টনমেন্ট এর কাছাকাছি এসব জায়গায় বেশী একটা ঘাপলা হয়না দোস্ত।“
একে তো ইফতারে মুন্নার নির্ভুল আয়োজন আর সাথে তার এহেন উপচে পড়া কনফিডেন্স বাকি’দের যথেষ্ঠ আশ্বাস জোগালো। সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্বান্ত হয়ে গেল বাড়ি ফেরা হবে লিংক রোড হয়ে।

বোর্ডিং প্ল্যান আগের মতই। শুধু জ্যাকি’র গাড়িতে যোগ হলো তারেক। সে মুন্নাদের কোম্পানীতেই কাজ করে। গাড়ীতে জায়গা থাকায় সে সহজেই এই লিফটটুকু পেয়ে গেল।

কিছুবাদে দেখা গেল গাড়ি দুটি রওনা হয়ে গেল । রাজেন্দ্রপুর জঙ্গলে মাঝে নিঝুম রাস্তায় আলো ফেলে এঁকেবেঁকে ছুটে চলেছে – প্রথমে ফিল্ডার ও পরে স্প্রিণ্টার টি।

কিছুক্ষণ হেডলাইটের আলো অনুসরন করার পর ফ্রেমে আসবে প্রথম গাড়ীর ইনসাইড শট। স্টিল ফ্রেমে ড্যাশবোর্ড দেখিয়ে ক্লোজ শটে শুভ’র মুখ। স্টেরিওতে তখন লো ভলিউমে জাগজিৎ এর গজল চলছে।
‘‘দুনিয়া... যিসে ক্যাহতাহে
যাদু কা খিলোনা হ্যায়।
মিল যায়ে তো মিট্‌টি হ্যায়;
খো যায়ে তো সোনা হ্যায়।
দুনিয়া...।’’

শুভ আর মুন্নারা বিবিধ বিষয় নিয়ে টুকটাক আলাপচারিতায় মগ্ন। একে একে সবাইকে দেখিয়ে ফ্রেম বাইরে রাস্তায় চলে যাবে। অন্ধকার বাঁক গুলোতে আলো ছড়িয়ে ছড়িয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলো ফিল্ডারটি।

পরের ফ্রেমে স্প্রিন্টারের ফ্রন্ট শট। উইন্ডশিল্ডে কিছুক্ষন স্টিল হয়ে ভেতরে চলে আসবে ফ্রেম। একে একে প্যাসেঞ্জারদের দেখিয়ে ধীরে রাস্তার বাঁকের সাথে তাল মিলিয়ে করে ডান দিকে বেঁকে বেরিয়ে আসবে ফ্রেম। ফুটে উঠবে গাড়িটির ব্যাক সাইড ভিউ। ব্যাকলাইট দুটো থেকে জুম আউট হয়ে এরিয়াল শটে দুটো গাড়ীকেই একসাথে দেখানো হবে রাস্তায়।

ফ্রেমে নীচে ডান দিকে ডিসল্ভ হবে ডিজিটাল টাইম 09:30 PM । একটু পর তা আবার মিলিয়েও যাবে।

(এরিয়াল শট হতে ক্যামেরা নীচু হয়ে ফ্রেমে চলে আসবে ফিল্ডারের ফ্রন্ট সীট থেকে সামনের ভিউ।)
হেডলাইটের আলোয় দেখা যাবে একটু দূরে ঘন জঙ্গলের মাঝে সামনে পথ এমন সরু হয়ে এসেছে যে কেবল একটি গাড়ি পেরুতে পারে। ঠিক এরপরই আচমকা রাস্তাটি একটা বামে বিপদজনকভাবে মোড় নিয়েছে। ঠিক এসময়ে রাস্তার মাঝে অন্ধকার ছাপিয়ে অস্বাভাবিক কিছু একটা শুভ’র নজরে এলো।
দেখা গেলো - সামনে খানিকটা আড়াআড়ি ভাবে একটা নীল মারুতি ট্যাক্সি ক্যাব রাখা আর –সামনে একটা মোটা গাছের গুড়ি ফেলে সম্পূর্ণ পথ রোধ করা আছে।

ক’ সেকেন্ড পেরুতেই পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে ঠেকলো।
চকিতেই একটা হিমশীতল অনুভূতিতে শুভ শিউরে উঠলো।

আড়চোখে ও দেখে নিল সেকেন্ড সীটে মুন্না তার ছেলে’র সাথে দুষ্টুমি করছে।
পেছনের সীটে ও আর মুন্নার সহধর্মিনীদ্বয় বাকি বাচ্চাদের নিয়ে তন্দ্রাচ্ছন্ন।

সেকেন্ডের মধ্যে ব্যাপক শব্দ তুলে হার্ড ব্রেক কষলো শুভ।

চলবে...
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেকোন বাংগালীর ইন্টারভিউর সময়, 'লাই-ডিটেক্টটর' যোগ করে ইন্টারভিউ নেয়ার দরকার।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



আপনার এনলাকার এমপি, প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী কামাল সাহেব, যেকোন সেক্রেটারী, যেকোন মেয়র, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান, বিএনপি'র রিজভী, আওয়ামী লীগের ওয়ায়দুল কাদের, আপনার থানার ওসি, সীমান্তের একজন বিজিবি সদস্য, ঢাকার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×