২
৩
শুভ’র হার্ড ব্রেকে একটা ঝাকুনী দিয়ে ফিল্ডারটি মূহূর্তেই থেমে যাবে।
(ক্লোজ শট)কিছুক্ষণ নিথর থেকে মনে মনে হিসাব কষে নিবে শুভ।
তারপর গাড়িটি রিভার্স গিয়ারে ফেলে পিছাতে শুরু করবে। সারাদিনের চিত্ত বিনোদন নিমিষেই উবে গিয়ে ভর করবে আঁধারে আবৃত অশনী সংকেত।
(হাল্কা জুম আউট ) এতক্ষণে গাড়ির বাকিরাও নড়ে চড়ে উঠবে।
পেছন থেকে স্নেহা (শুভ পত্নী) শুধালো, “কি হয়েছে ? এভাবে পিছনের দিকে যাচ্ছো কেন ?”
শুভ ঘাড় পেছনে রেখেই রিভার্স করতে করতে ফিস ফিস করে বলবে – “সামনে ব্যারিকেড দিয়ে রোড ব্লক করা। তাড়াতাড়ি রিভার্সে যেয়ে একটা ক্লীন ব্রেক পেলেই ইউ-টার্ণ নেওয়ার চেষ্ঠা করতে হবে।“
ফ্রেমে পেছনের গাড়িটা ততক্ষণে কাছাকাছি এসে যাবে।
শুভ’র আচমকা রিভার্সে আসার কারন জ্যাকি ঠাহর করতে পারবে না।
ফ্রেমে তাই ওর আশ্চর্যবোধক অভিব্যক্তি।
(কাট করে ফ্রেম আসবে) - শুভ পাগলের মত সমানে হর্ণ দিয়েও জ্যাকি’কে বোঝাতে পারবে না যে ওদের সামনে কি মারাত্মক বিপদ ঘাপটি মেরে আছে।
(লং শটে ) আর তাই জ্যাকি অবুঝের মত একেবারে শুভ’র গাড়ির ঠিক পেছনে এসে থামাবে ।
এতে করে শুভ’র রিভার্স অপশনটাও বন্ধ হয়ে যাবে।
(ক্লোজ শটে )এবার শুভ’র মাথায় রক্ত উঠে যাবে।
ও বিরক্ত হয়ে স্নেহাকে বলবে, “জ্যাকি’কে মোবাইলে জানাও সামনে এই ঘটনা। রিভার্স এ যেতে বলো এক্ষুনি।“
ফ্রেমে তখন ক্লোজ শটে স্নেহা।
তার কম্পমান হাতে মোবাইলটা বড্ড বেমানান মনে হবে।
( ফ্রেম দেখলে মনে হবে সে যেন ডায়াল করাও ভুলে গেছে।)
(জুম আউট) অন্ধকারে হেড লাইট আলোয় দেখা যাবে –
দুটা গাড়িই ইঞ্জিনের মৃদু গড়গড় শব্দ তুলে থমকে আছে।
এরপরের ঘটনাগুলো ঘটবে আকস্মিক ভাবে।
যেধরনের লিংক আগে দেওয়া হয়েছিল পরবর্তী সিকোয়েন্স শুভ’র কল্পনাকে ছাড়িয়ে ওদের সামনে খোলাসা হবে।
(কালো ফ্রেম) নিকষ আঁধার থেকে বেড়িয়ে আসবে এক একে এক দল সশস্ত্র ডাকাত; পরনে লুঙ্গি যা হাঁটু পর্যন্ত ভাঁজ করা।
দলটিতে সব মিলিয়ে ১৫ – ২০ জন হবে ।
(একটু দূর থেকে একে একে সবাইকে দেখানো হবে ফ্রেমে)
তাদের কারো হাতে রাম দা, কারো কারো হাতে স্টীল এর রড আর কুড়াল, আর কেউ কেউ লাঠি নিয়ে এগিয়ে আসবে।
(ক্রেন শটে শুভ’র গাড়িটার চারপাশ ফ্রেমে থাকবে)
শুভ’র গাড়িটকে ওরা নিমিষেই সামনে থেকে ঘিরে ফেলবে।
(ক্যামেরা ডান দিকে প্যান করে পিছনের গাড়ীটিকে ফ্রেমে আনবে)
দেখা যাবে - সামনের বিপদের সম্ভাবনা বিন্দুমাত্র আঁচ করতে না পেরে জ্যাকির গাড়িটা পেছনের পথ আগলে রয়েছে।
ক্যামেরা নীচু হয়ে ক্লোজ শটে একে একে সবাইকে দেখানো হবে ফ্রেমে)
ডাকাত দলটির কারুরই মুখ ঢাকা নয়; যা বলে দেয় আরোহীদের মধ্যে কাউকেই রেহাই দেওয়া হবে না ভবিষতে সনাক্ত করার জন্য।
এরপর ফ্রেমে শুভ। সে মনে মনে নিজেকে বলবে –" ময়মনসিংহ-গাজীপুর এলাকার দূর্ধর্ষ ডাকাতদের পাল্লায় পড়েছি আজ”।
(শুভ থেকে সরে ফ্রেমে গাড়ির পেছনে আসবে )
পেছনে বসা দুই বন্ধুপত্নীর আর্ত চিৎকারে তখন অন্ধকার জঙ্গলের নীরবতা চুরি যাবে।
এরপর; প্রায় সাথে সাথেই সমস্ত গাড়ীটা ভীষন শব্দে কেঁপে উঠবে।
(অন্ধকার ফ্রেম ফুঁড়ে) - চিৎকাররত এক সহিংস ডাকাত ডান দিক থেকে দৌড়ে এসে শুভ’র গাড়ীর উইন্ডশীল্ডে সজোরে ধারালো একটি কুড়াল দিয়ে আঘাত করে বসবে। মূহূর্তেই স্বচ্ছ গ্লাসটি ফেটে এক্কেবারে মাকরশা’র জালের মত হয়ে যাবে।
(ডিসটর্টেড ফ্রেম)
তারপর হেডলাইটের আলোকছটায় ফ্রেমে পড়বে। (হাল্কা জুম আউট)
শুভ দ্রুত ডিসএনগেজ হওয়ার জন্য জঙ্গলের দিকে ডানে মোড় নিয়ে কিছুটা জায়গা বের করার চেষ্ঠা করবে।
ঠিক তখুনি পেছন থেকে উদ্ভ্রান্ত জ্যাকি তার স্প্রীন্টার দিয়ে ধাম করে মেরে দিবে ডানে কান্নি খাওয়া ফীল্ডারটিকে।
(ইনসাইড শট)
ধাক্কা খেয়ে শুভ’র স্টীয়ারিং থেকে ছিটকে যাওয়ার দশা হবে।
সীট বেল্ট বাধা ছিল বলে প্রবল ঝাঁকুনী খেয়ে রক্ষা পাবে ও। কিন্তু গাড়ীর বাকিরা আঘাত পেয়ে গোঁঙানীর মত শব্দ করবে।
শুভ মনে মনে জ্যাকি’কে কড়া করে একটা গালি দিবে।
(টপ শট) ফীল্ডারটিকে গুতা দিয়ে স্প্রীন্টারটি কিছুটা সামনে যেয়ে ব্যারিকেডের কাছে যেয়ে আটকে যাবে।
তারপর - দশ-বারোজন ডাকাত শুভ’র গাড়ীটা পুরোপুরি ঘিরে ফেলবে।
তাই শুভ ঐদিকে স্প্রীন্টারটিকে আর দেখতে পাবে না।
(ফেড আউট)
(ক্যামেরা ড্রাইভিং সীটে)
উন্মত্ত ডাকাত দল তখন সজোরে রামদা - রড – কুড়াল দিয়ে ফীল্ডারটিকে কোপানো শুরু করবে। তাদের এহেন এলোপাতাড়ি আক্রমন ইংলিশ ছবি গুলোতে চিত্রায়িত আদিম মানুষদের হিংস্রতাকেও হার মানাবে।
(সাইডভিউ মিররের ভিউ দেখিয়ে ক্যামেরা বেড়িয়ে আসবে)
দেখা যাবে- দু’একজন দরজা খোলার চেষ্ঠা করছে।
অর্ধ-নগ্ন আরেকজন জানালা ভেঙ্গে ফেলার নেশায় মাতাল হয়ে উঠবে।
জুম করে এলোপাতাড়ি রডের বাড়ি দেখাতে দেখাতে কাট করে ফ্রেমে আসবে শুভ’র ক্লোজ শট।
সমস্ত ঘটনার তীব্রতায় শুভ যেন হঠাৎ করেই পণ করে বসবে।
সে নিজেকেই নিজে সাহস জোগাবে বলবে –“এখানে; এভাবে এসব অসভ্য জানোয়ারদের কাছে হার মানা যাবে না। No Way…. যেমন করেই হোক – পরিবার নিয়ে সসম্মানে এইসব জারজ সন্তানদের ভয়াল থাবা থেকে বের হতেই হবে।“
শুভ যেহেতু গাড়ী চালায় অনেকদিন ধরে –তাই তার এই ভিভিটিআই ইঞ্জিনের এই টিপটপ কন্ডিশনের ফীল্ডারটি গাড়ীটি খুব প্রিয়।
(ফ্রেম ট্র্যানজিশন) ফ্ল্যাশব্যাকে দেখানো হবে – শুভ গাড়ীটির রক্ষনাবেক্ষন করছে।
কাট করে ফ্রেমে চলে আসবে বর্তমান।
(জুম আউট) সামনে থেকে শুরু করে পুরো গাড়ীটিকে পাক খেতে স্থির হবে ফ্রেম।
(লিংকঃ ‘লাইফ ইন ডেড’। গাড়ীটির তার মালিকের মমতার প্রতিদান দেয়ার সময় উপস্থিত।)
জুম শটে শুভ হাত রাখবে স্টিয়ারিং এ।
আলতো করে হাত বুলাবে একবার।
শুভ বিড়বিড় করে বলবে – যদি ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে না যায় – এই মনুষ্যরূপী পশুগুলো আমাকে এখানে রুখে রাখতে পারবে না।
ক্লোজ শটে ও এক হাত স্টীয়ারিং এ আর অন্য হাত রাখলো অটো গীয়ার শ্যাফট্ এ ।
(এরপর – ব্লাড ডায়মন্ড মুভি’র সেই সিকোয়েন্সের ফরম্যাট। বেইজ গীটারের জ্যামিং – হেভী রিদম।)
জুম শটে প্রথমে D -তারপর R -তারপর আবার D ;
কাট করে আবার জুম ইন - প্যাডেল স্পেসে।
সাথে সাথে এক্সিলেটর পুরা দাবাবে শুভ।
তারপর অ্যাঙ্গেলে জুম আউট – শুভ সজোরে স্টীয়ারিং ঘুরাবে এদিক-ওদিক ।
(টপ শট) শুভ’র maneuver এর দাপটে ক’জন ধাক্কা খাবে। দু’জন চাপা পড়বে। আর কয়েকজন ছিটকে পড়বে।
প্যান করে ফ্রেম আসবে ইন সাইডে।
ক্লোজ শটে - শুভ। ও হাঁপাচ্ছে।
জুম আউট। অন্ধকার চারপাশ।
জানোয়ারগুলোর দুমদাম করে গাড়ী পেটানোর শব্দ আর শোনা যাবে না।
ডাকাত দল একটু যেন দূরে সরে যাবে।
(টপশট) কিছুক্ষণ স্থির থেকে শুভ এক টানে অল্প জায়াগাতেই গাড়ীটা ঘুরিয়ে ফেলবে।
শুভ সশব্দে আলহামদুলিল্লাহ বলে ফীল্ডার ছোটাবে ফেলে আসা বাজারের দিকে।
ক্যামেরা ফ্রন্ট সীটে। গুল্লির গতিতে কয়েক কিলোমিটার গাড়ী ছুটে যাবে।
তারপর – ইনসাইড শট।
খানিকটা ফুসরত মিলায় শুভ গাড়ীতে বাকিদের দিকে চোখ ফেরাবে।
ফ্রেমে তখন দেখা যাবে – পেছনের সীটে দুই বন্ধুপত্নী আর বাচ্চারা একদম চুপ মেরে গেছে।বড় বড় চোখ করে যেন সব্বাই মৃগীরোগাক্রান্ত।
ক্যামেরা সামনে ঘোরালে সেকেন্ড সীটে মুন্না আর কোলে ওর ছেলেকে দেখা যাবে। ক্লোজ শটে মুন্নার ফ্যাকাসে মুখ ফুটে উঠবে পুরো ফ্রেমে।
প্রায় শোনা যায় না এমন কন্ঠে ও বলবে, “ শুভ, দোস্ত গাড়ীটা একটু থামা। আমি শ্বাস নিতে পারছি না।“
(ফ্রেমে এখন শুভ)উত্তরে শুভ বললো -, “ চুপ। শালা। পাগল নাকি!এখানে গাড়ী থামানোর প্রশ্নই উঠেনা।“
শুভ আড়চোখে মুন্নার অসহায় অবস্থা দেখবে। বলবে-“ জানালা নামিয়ে বাইরে মুখ বের করে হা করে শ্বাস নাও দোস্ত।“
(এতক্ষন ধরে বেইজ গীটারের জ্যামিং একটু রিদম হারাবে সাস্পেন্স ইফেক্ট একটু কমবে)
ফ্ক্লোজ শটে শুভ। ঘোর কাটায় ও’র খেয়াল হবে -পেছনে ফেলে এসেছে জ্যাকি’দের গাড়িটার কথা। কল্পনা করবে -ঐ জানোয়ারগুলো অপর শিকার হারিয়ে অবশিষ্ট গাড়ীটার উপর নিশ্চয়ই চড়াও হয়ে আছে।
(ফিরে আসবে বর্তমানে)
পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রনে আসায় আরোহীরা খানিকটা স্থিত হবে।
এখন ফ্রেমে পেছনে বসা দুই পত্নী। তারা ” ও আল্লাহ... । আল্লাহ গো” বলে চিৎকার করা শুরু করবে।
আওয়াজটুকু হাওয়ায় মিলিয়ে দিয়ে ফ্রেমে আওবে ছুটে চলা গাড়ীটি।
(ইনসাইড শট)
শুভ দৃঢ় কন্ঠে জানালো – “তোমাদের সামনে বাজারে নামিয়ে কিছু লোক জড় করে আমি জ্যাকি’দের সাহায্য করতে যাবো।“
(বাম দিকে প্যান হবে ক্যমেরা) মুন্না সহ বাকি সবাই প্রায় একস্বরে চিৎকার করে উঠলো – “ কি ? “
মুন্নার গলার আওয়াজ শুনে মনে শুভ বলবে – “ব্যাটা এতক্ষণ বাতাস খেয়ে এখন বুঝি বেশ নিশ্বাস পারছিস; না? ”
(জুম আউট ) সামনে একটু দূরে বাজারের আলো দেখা গেলো।
(ক’সেকেন্ড বাদে কাট করে ফ্রেম )
শুভ’দের গাড়ীটি বাজারের কাছে পৌছুঁতেই ও ঘ্যাঁচ করে ব্রেক করবে।।
৪... আসছে