somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শোষন ও বৈষম্যহীন দেশ গড়তে কোটা পদ্ধতির পূনর্মূল্যায়ন ও মেধাভিত্তিক নিয়োগই একমাত্র উপায়

২০ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকা সকল বির্তক ও কলংক মুক্ত। মুক্তযুদ্ধের মহান ও সাহসী যোদ্ধাদের অবদান জাতি শ্রদ্ধা ভরে চিরকাল মনে রাখবে এবং কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে। রাজনীতির গ্যাড়াকলে আমাদের মহান সেনানীদের প্রতিনিয়ত অশ্রদ্ধা ও অবহেলা করছি। সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদ ও এদের দোসররা মহান মুক্তিযুদ্ধকে নগ্নভাবে ব্যবহার করে জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত ও কলংকিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত।
১৯৭১ সালে পাকিস্থানের হানাদার বাহিনী ও এদের এদেশীয় দোসর রাজাকার, আলবদর ও আলশামস ছাড়া এদেশের প্রতিটি নাগরিক (শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধনী, গরিব, কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, মা-বোন) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করে দ্রুত স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রেখেছিল। তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তান পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের প্রতি যে শোষন, বৈষম্য ও নির্যাতন স্বাধীনতা অর্জন বাংলাদেশীদের জন্য একমাত্র মুক্তির উপায় ছিল, যা অর্জনে অপরিসীম ক্ষতি ও মূল্যের বিনিময়ে ১৯৭১ সালে এদেশের প্রতিটি নাগরিকের অংশগ্রহনে দ্রুত অর্জিত হয়। কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল চেতনাবাজ যারা মুক্তিযুদ্ধের সময় যুবক থাকা সত্ত্বেও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন না করে (জনশ্রুতি আছে হানাদার বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করার) সময়ের বড় মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবাজ। যারা নিয়ত চেতনার দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে। ফলশ্রুতিতে সকল ধরনের প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগে কোটা দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পিছিয়ে পড়া, অনগ্রসর শ্রেণীতে ফেলে দিয়েছে। আপনারা কি মনে করেন শৌর্য-বীর্যে, সাহসিকতা ও অফুরন্ত অদ্যমেভরা আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা পিছিয়ে পড়া, অনগ্রসর শ্রেণীর কেউ!
চাকুরীতে কোটা পদ্ধতি হচ্ছে পিছিয়ে পড়া ও অনগ্রসর জাতি, গোষ্টি বা শ্রেণীকে মূল শ্রোতধারায় ফিরিয়ে আনা বা ক্ষমতায়ন করার জন্য বিশেষ পরিস্থিতি ও সময়ের একটা অন্তর্বতীকালীন ব্যবস্থা। পিছিয়ে পড়া ও অনগ্রসর জাতি বা শ্রেণীর জন্য কোটা পদ্ধতি প্রাথমিকভাবে অসম্মানের বিষয় না হলেও দীর্ঘমেয়াদী তা সম্মানজনক বিষয় নয়। আমরা কি করেছি তাদের জন্য? আমাদের বীর সন্তানদের পুরস্কৃত না করে কোটা দিয়ে অনগ্রসর শ্রেণীতে রেখে অসম্মান, অপমান ও বিদ্রুপ করছি না?
সরকারী সকল ধরনের প্রতিযোগিতামূলক নিয়োগে বিধিতে ৫৫ ভাগ কোটা থেকে নিতে হয়। এটা কি বৈষম্য নয়?
১। মুক্তিযোদ্ধা কোটা: ৩০ ভাগ। এই কোটায় কারা নিয়োগ পাবে? মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান ও নাতি-নাতনিরা। বর্তমান পরিস্থিতিতে মুক্তিযোদ্ধা, তাদের সন্তান পর্যন্ত এটা গ্রহনযোগ্য। কোন যুক্তিতে বা ভাবে তাদের নাতি-নাতনিরা এ কোটার জন্য যোগ্য? কোনভাবেই তাদের নাতি-নাতনির জন্য এ কোটায় নিয়োগ পাওয়া উচিত নয়। নাতি-নাতনির জন্য এ কোটা চালু থাকলে আগামী ২০-২৫ বছর পর মুক্তিযোদ্ধা কোটার ৩০ ভাগ রাজাকারের নাতি-নাতনি দ্বারা পূর্ণ হবে। কেননা, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের সাথে রাজাকারের সন্তানের বৈবাহিক সর্ম্পক তৈরি এখন রমরমা। এছাড়াও ২ লক্ষ সনদধারী মুক্তিযোদ্ধাকে এ সুবিধা দিতে গিয়ে বঞ্চিত করছি ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২ লক্ষ বীরাঙ্গনা , তাদের পরিবার ও সন্তানদের। বৈষম্য করছি তাদের সাথে, যে রাখাল বালক পাক হানাদার বাহিনীর গোপন খবর এনে দিয়েছিল, যে মা-বোন ক্ষুর্ধাত মুক্তিযোদ্ধাদের রান্না করে খাইয়েছিল, যে যুবক চাষার বেশে অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ করেছিল মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। মহান মুক্তিযোদ্ধের সময় এদেশের কোন মানুষ তাদের উপর অর্পিত দ্বায়িত্ব পালনে পিছপা হয়নি। সুতরাং, তাদের প্রতি এ বৈষমমূলক আচরন কেন? বরং রাজাকার, আলবদর ও আলশামস, তাদের সন্তান, নাতি-নাতনি এবং এদের সাথে বৈবাহিক সর্ম্পক স্থাপনকারীদের এদেশের রাজনীতি ও সরকারী চাকুরী থেকে আজীবন নিষিদ্ধ করা হোক।
২। জেলা কোটা: ১০ ভাগ। রাজনৈতিক সুবিধা দেওয়া ছাড়া এটার আদৌ কোন প্রয়োজন আছে কি?
৩। নারী কোটা: ১০ ভাগ। সম-অধিকারের সাথে এই কোটা আদৌ সামজস্য বা সম্মানজনক কিনা তা বলতে পারবে নারী অধিকার বিষয়ে যারা কাজ করছেন।
৪। উপজাতি কোটা: ৫ ভাগ। উপজাতিদের মধ্যে চাকমারা প্রায় ১০০% শিক্ষিত ও চাকরী করার হার ও তাদের বেশি। বর্তমানে এ কোটা ভোগ করার জন্য তারা আদৌ উপযুক্ত কিনা তা পূনর্মূল্যায়ন করা উচিত। বরং এ কোটা চাকমা ছাড়া অন্যান্য উপজাতি ও পিছিয়ে পড়া পাহাড়ি জনগোষ্টির মাঝে বন্টন করা উচিত।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুলাই, ২০১৩ ভোর ৫:৩৬
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

পেচ্ছাপ করি আপনাদের মূর্খ চেতনায়

লিখেছেন সত্যপথিক শাইয়্যান, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:৩৮

আপনারা হাদি হতে চেয়েছিলেন, অথচ হয়ে গেলেন নিরীহ হিন্দু গার্মেন্টস কর্মীর হত্যাকারী।
আপনারা আবাবিল হয়ে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাড়াতে চেয়েছিলেন, অথচ রাক্ষস হয়ে বিএনপি নেতার ফুটফুটে মেয়েটাকে পুড়িয়ে মারলেন!
আপনারা ভারতীয় আধিপত্যের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×