আমিও একটা সময় সে রকমই ভয় পাচ্ছিলাম। যখন নাটকের সামপ্রতিক অঙ্ক গুলো অভিনিত হওয়া বাকি। কিন্তু এজন্য নয় যে যুদ্ধ বাধানো হবে, বরং এই জন্য যে , ইতিহাস বলে, জন জাগরন একবার শুরু হয়ে গেলে সেই স্রোতকে কেউই নিয়ন্ত্রন করতে পারে না।
কিন্তু এখন আর সে রকম মনে হচ্ছে না। সর্বত্র নরম সুর। তবু, মারামারি -কাটাকাটি থামানোর নামে "স্টেট অফ ইমারজেন্সি " ঘোষনা করে "মার্শাল ল" জারি করা এখন সময়ের ব্যাপার মনে হয় !!!
পাঁচটা বছর ধরে যারা নির্যাতিত হয়েছে। বঞ্চিত থেকেছে। গত নির্বাচনের পর থেকে যারা ঘর ছাড়া , আধাপেটা খেয়ে , মা -বোনের ইজ্জত হারিয়ে ( ব্যক্তিগতভাবে চিনি এই অভাগা হিন্দু নারীদের, সুতরাং প্রপাগান্ডা বলে চেঁচিয়ে লাভ নেই) লুকিয়ে চুরিয়ে বেড়াচ্ছে, তাদের ঐ অশনি সময়ে একটা কথাই বলতে শুনেছিলাম।
" আল্লাহ নেই। ভগবান নেই।কিন্তু আমি তো থাকলাম। ক্ষমতার মসনদ থেকে যেদিন নেমে যেতে হবে, সেদিন তোদের একই ভাবে কচুকাটা করে বুকের জ্বালা মেটাবো।"
সেই মানসিকতারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। আমরা যারা ঐ ধরনের কোন অবস্থায় পড়িনি, ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে খবরের কাগজে পড়েছি অথবা মানুষ গুলোর কাছে পৌঁছেছি, আমার মনে হয় না, আমাদের অধিকার আছে তাদের কষ্টের , ক্ষোভের , নির্যাতনের সমালোচনা করার।
মানুষ হয়ে পাশবিকতাকে কখনোই সমর্থন করতে পারি না। প্রচন্ড কষ্ট হয় পাশবিকতা দেখে।কিন্তু যখন সেই সব গৃহ বঁধুদের কথা মনে পড়ে , যাদের ধর্ষনের কথা রাজনৈতিক ইতিহাস কোনদিনই স্ব ীকার করবে না, তখন বিচারের 'মাপকাঠি' টলে যায়।
যখন মনে পড়ে ধানের জমি দখল, পুকুর চুরি, মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়া...........ঘুষ, দুর্নীতির কারনে সাধারন মানুষ গুলোর একটু একটু করে জীবন যুদ্ধে হেরে যাওয়া.......তখন সত্যি , অতি সরলীকৃত জবানে বলতে পারি না , "তুই পশু!!!"
'যার' গেছে সে আমার কথা শুনবে কেন? আমি তো তার জমি, চাকরি, আত্মহত্যা করা বোনকে ফিরিয়ে দিতে পারবো না। মেরে পঙ্গু করে দেওয়া মানুষ গুলোর সুস্থ জীবন ফিরিয়ে দিতে পারবো না।
হু দা হেল কেয়ারস এ্যাবাউট " ভোটের অধিকার"। পরানে বাঁচলে না ভোট দিবো!!
কিন্তু হত্যা , ধর্ষন, লুটপাট যারা করেছে তাদের বিচার ছাড়াই আরেকটা নির্বাচন হয়ে যাবে?
আওয়ামী লীগ কি সিভিল ওয়ার ঠেকানোর জন্য রাষ্ট্রপতির ন্যাককার জনক আচরন মেনে নিলো? এই লোক দেখানো নির্বাচনে শেষ কালে অংশ নেবে ওরা? নিতেই পারে।
আন্তর্জাতিক চাপের মুখে আর মানুষকে বেশি বেশি ভালবাসার কারনে বঙ্গবন্ধু একটা মাত্র ভুল করেছিলেন। মুক্তি যোদ্ধাদের অস্ত্রহীন না করে বরং আরও কয়েক মাস মাঠে ঘাটে থেকে রাজাকারদের নিশ্চিহ্ন করতে বলা উচিৎ ছিল। আজকের মত তখন শত্রু অচেনা ছিল না।
গ্রামের লোক জন জানতো 'কে কি করেছে'।' কে হত্যা , লুটপাট, ধর্ষন, পাকবাহিনীর মেয়ে সাপ্লাই' এর সাথে জড়িত ছিলো। ঐদিন বাঁচতে দেওয়া হয়েছিলো বলেই , 75 এ শেখ মুজিবকেই খুন হতে হলো। আর আজকে খুন হচ্ছি আমরা,
আরেকটা বড় সড় ভুল বা স্বার্থপর আচরন ছিলো আওয়ামী নেতাদের হাতে সম্পূর্ন ক্ষমতা তুলে দেওয়া। সবাই কঠিন দেশপ্রেমিক বা সৎ ছিলো না। কলকাতায় পালিয়ে গিয়ে হাওয়া খেয়ে বেড়ানো নেতা, বিদেশীদের টাকা খাওয়া ইনফিলট্রেটরও ছিলো।আজকে ঐ গুপ্তচর আর দেশদ্্রোহীদের হাতে আওয়ামী লীগও বন্দ ী।
71 এর প্রমানিত মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমতায় আসতে না দিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশকে আরও 100 বছর পিছিয়ে দিলেন।
এখন এই হায়েনা আর সাপদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশকে যে আরেকটা মুক্তিযুদ্ধ করতে হবে, তার নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্য মানুষ কবে তৈরী হবে আর কবে ততটা খেপবে মানুষ , সেটাই দেখার বিষয়।
বর্তমানের নেতৃত্ব নিয়ে আমি পুরাপুরি হতাশ!
ইরানের বিপ্লবের নেতা যেমন বলেছিলেন,
"আমাদের মুক্তি দেবে যারা , সেই সব যোদ্ধারা মায়ের পেটে বড় হচ্ছে.........আমাদের ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করতে হবে।"
আমাদেরকেও সে রকম করেই .............পারতেই হবে, আত্মরক্ষার তাগিদেই।
ঢাকা
30/10/2006

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


