somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রোদফুলের গল্প

১৮ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

-বলুনতো,এটা কি?
-স্যার সুপার গ্লু (এটা তোর মাথা,মনে মনে,দেখতোসোস না এটা কি?) শাহেদ শান্তভাবে বললো।
-তাহলে বলুন,সুপারগ্লু তো সব আটকায়,তাহলে বোতলের ভিতরের গায়ে আটকে থাকে না কেন? প্রশ্নকর্তা মিটিমিটি হাসছেন।
শাহেদ বসে আছে ক্রিষ্টাল রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ইন্টারভিউ বোর্ডের সামনে,তার খুব বিরিক্ত লাগছে,কি সব আউল ফাউল প্রশ্ন।
-কি পারবেন না? এবার বাম পাশের টাই আলা জিজ্ঞাস করলো।
-স্যার, সুপার গ্লু আটকানোর জন্য বাতাসের উপস্থিতি অপরিহার্য। কিন্তু টিউবের ভেতর বাতাস থাকে না তাই সুপার গ্লু না খোলা অবস্থায় টিউবে আটকায় না।
শাহেদ ইন্টারভিউ বোর্ডের তিনজনের নাম দিয়েছে, বাম পাশের জন টাকলা মহাজ্ঞানী, টাকলা মহাজ্ঞানী তখন থেকে টাকে হাত বুলাচ্ছেন,মাঝের জনই প্রশ্ন করছেন, আর ডানপাশের জন ক্লান্ত ভাবে তাকিয়ে আছেন।
-এবার বলুন তো,আপনি চাকরী করতে আমাদের কাছে এসেছেন কেন?
-(ম্রা খাওয়ার জন্য মনে মনে) স্যার, জীবন ধারনের জন্য কিছু তো করা উচিত,তাই, আর বাসা বাড়ী আমার ভালো লাগে, সুন্দর বিল্ডিং সুন্দর আর্কিটেকচার ভালো লাগে তাই আমি আপনাদের এখানে ইন্টারভিউ দিতে এসেছি।
-শাহেদ মনে মনে হাসলো, মোক্ষম জবাব দেওয়া গেছে।
-বলুনতো গোমতী নদীর উতস কোথায়? বামপাশের টাকলা হাই তুলতে তুলতে বললেন।
-(তোর টাক মাথায় না এটা শিউর) স্যার সরি।
-আজকালকার ছেলেরা কিছু জানে না। আপনি যান, আপনার সাথে পরে কন্ট্রাক করা হবে।ডানপাশের ক্লান্ত ইন্টেলেকচুয়াল বললেন।
-শাহেদ বাইরে বের হয়ে একটা সিগারেট ধরালো, শালারা মাথাটা ধরিয়ে দিয়েছে, বসিয়ে রেখেছে ৩ ঘন্টা, তারপর কি সব প্রশ্ন।এ সময় টং দোকানের ছাদের পানি পড়ে সিগারেট ভিজে গেলো।
-ধুর বাল।শাহেদের মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেলো।পকেটে কি যান কাপছে।অন্তির ফোন।
-শাহেদ তুমি কোথায়।
-আমি জিইসি, ইন্টারভিউ দিতে আসছিলাম
-আমার মেহেদী কিনসো?
-না
-না কেন?তোমাকে বললাম আমি দুপুরে বিয়েতে যাবো,তুমি সকালে কিনে দিলে আমি দিতে পারতাম, এখন ক্যামনে দিবো? দিলে বিয়েতে যাবো কখন তুমি সব সময় +$#$#%##$$%#%%#
-একদিন মেহেদী ছাড়া গেলে কিছু হয় না, শাহেদ শান্ত ভাবে বললো।
-তুমি বেশী জানো? পারো তো খালি ঘোড়ার ডিমের ইন্টারভিউ দিতে,আর %$$%##
অন্তি ফোন কেটে দিলো।
শাহেদ হাটছে, হাটতে হাটতে দেখা হলো আজিজের সাথে,প্রায় ১ বছর পর,আজিজ রাস্তার আইল্যান্ডে বসে কষে সিগারেট টানছে।
-কিরে শাহেদ কি খবর?
-ভালো, কি করছিস?
-আন্ধা নাকি, দেখছিস না বিড়ি ফুকছি।
-আন্টি কেমন আছে?
-আম্মা তো মারা গেছে গত বছর, আজিজ হঠাত শান্ত হয়ে গেলো।
-ওহ, শাহেদ কি বলবে খুজে পাচ্ছে না।
-তো কি করছিস এখন? অন্তি কেমন আছে?
-ভালো।আপাতত বেকার।
-শিউলি?
-বিয়ে হয়ে গেছে। আজিজ পকেট হাতড়াতে হাতড়াতে বললো।
-শাহেদ আবার চুপ হয়ে গেলো।এখন কি করছিস?
গোল্ডলিফের মার্কেটিং এ কাজ করি, নে একটা লাইটার রাখ। যাইরে আরো কাজ করতে হবে।
শাহেদ তাকিয়ে আছে, আজিজ ক্লান্ত ভাবে হাটছে,একেকটা পা বাড়াচ্ছে আর যেন সব পেছনে ফেলে রেখে যাচ্ছে, হাটতে হাটতে সেন্ট্রালের সামনে থেকে বায়ে মোড় নিয়ে এক ঝাক মানুষের মাঝে হারিয়ে গেলো।
-শাহেদ আজিজের দেওয়া লাইটার দিয়ে সিগারেট ধরানোর চেষ্টা করলো, গ্যাস নেই, শালার অভাগা।
শাহেদ হাটতে শুরু করলো,মাঝে মাঝে এরকম হাটতে খারাপ লাগে না, হাটতে হাটতে দেওয়ানহাট ব্রিজে এসে দেখলো গনগনে রোদের মাঝে একঝাক নীল আকাশ,মাঝে মাঝে সাদা সাদা মেঘ মেঘ ফুল, শাহেদের মন ভালো হয়ে গেলো,যদিও বেকারদের আকাশে কোন রোদফুল ফোটে না।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৪:৫০
৭টি মন্তব্য ৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×