ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা এলাকায় এমন একটি বিশ্বাস প্রচলিত আছে যে, রাতের বেলা বা ভর দুপুর বেলা কোন মানুষকে একা পেলে (অনেক সময় গভীর রাতে একাধিক লোক হলেও) পথ চলার সময় এক ধরনের বদ জিন আছর করে মানুষকে কৌশলে পথ ভুলিয়ে দেয়। তার স্মৃতির বিভ্রাট ঘটিয়ে তাকে পথ ভুলা বানিয়ে দেয়। তখন ঐ লোক বা লোকরা অতি চেনা পথও আর চিনতে পারে না। তখন সে এ্যালোপাথারি পথ হাটতে থাকে। দুষ্ট জিনেরা ঐ পথিককে পথ হাটাতে হাটাতে ক্লান্ত করে ফেলে। বেশির ভাগ সময় ঐ লোকটাকে কোন বিল, বড় পুকুর বা দিঘির পানিতে নামিয়ে মেরে ফেলে। ঐ লোকটি তখন কিছু বুঝতে না পেরে পানিতে নেমে যায়। তরে এবাবে পথ ভুলা হয়ে যাওয়ার এ প্রক্রিয়াকে কানাওয়ালায় ধরা বলা হয়। কানাওয়ালা হচ্ছে ঐ বদ জিন, শয়তান বা ভূত।
মুক্তাগাছা ও পাশ্ববর্তী অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে অসংখ্য লোক পাওয়া যাবে যাদেরকে জীবনে একবারের জন্য হলেও কানাওয়ালায় ধরেছে। প্রবীন লোকজনের সাথে কথা বলে জানাযায় বেশির ভাগ সময় রাতের বেলা হারিকেন, ভূইত্ত্যা/মুইট্রা( মুটিবদ্ধ পাট কাঠি একত্র করে বেঁধে আগুন ধরানো মাধ্যমে বাতি হিসেবে ব্যবহার করা হয়।) জ্বালিয়ে বিল বা খালে মাছ ধরতে গেলে এই কানাওয়ালায় ধরে থাকে। কারও কারও মতে কানাওয়ালা হচ্ছে মৎস শিকারী এক ধরনের বদজিন। একে মুক্তাগাছা এলাকায় মাইছ্যা শয়তান বা পিশাচ বা পিছাট বলা হয়। তবে দিক ভুলার প্রক্রিটাকেই মূলত কানাওয়ালায় ধরা হিসেবে অভিহিত করা হয়।