somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিবর্তন শিক্ষা ও প্রাসঙ্গিক কিছু কথা

০৬ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হল বিবর্তনবাদ... অন্য যেকোন বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের চেয়ে এটা নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা অনেক বেশি! যদিও তত্ত্ব হিসেবে গুরুত্বের দিক দিয়ে এটা নিউটনের মহাকর্ষ সুত্রের চেয়ে কোন অংশে কম না! তাও দেখা যায় বিবর্তনকে ভুল প্রমানের জন্য যে পরিমান চেষ্টা মহাকর্ষ সুত্র ভুল প্রমানের জন্য এর সিকিভাগের একভাগ চেষ্টাও নেই! যদিও এই চেষ্টাটা আমাদের এদিকে একটু বেশি বলা চলে... বিশ্বের খ্যাতনামা অধিকাংশ বিজ্ঞানী ব্যাপারটাকে সত্য হিসেবে মেনে নিয়েছেন... জীববিজ্ঞানীরা একমত হয়েছেন যে এটা বিজ্ঞানের অন্যতম বিশ্বাসযোগ্য একটা সত্য! তাও আমাদের এটা মেনে নিতে এতো কষ্ট কেন? সত্যটা মেনে নিলে সৃষ্টিতত্ত্বের আদম-হাওয়া টাইপ বিষয়গুলার উপর আঘাত আসে? এজন্য? নাকি আমাদের পূর্বপুরুষ স্বর্গে ছিল এটা বিশ্বাস করাটা অনেক স্বস্তিকর? বানর আর মানুষের পূর্বপুরুষ একই এই কথাটা শুনলেও অনেকের ইগোতে লাগে! যাই হোক, সত্য/বিজ্ঞান তো কারও বিশ্বাস, স্বস্তি, ইগো এসবের জন্য বসে থাকে না... সে তার নিজস্ব গতিতে চলতেই থাকে! কে কি বিশ্বাস করে না করে সেটা নিয়ে লেখতে বসি নি... শিক্ষা ব্যবস্থায় বিবর্তনকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানাতে চাই!

বিবর্তনকে আপনি অস্বীকার করেন/না করেন, এর ফলিত বিষয়গুলো যেমনঃ ইভ্যুলুসনারি বায়োলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, বায়োটেক এসব তো আর অস্বীকার করা সম্ভব না!! (অনেকে অবশ্য অস্বীকার করে ফেলতেও পারেন... গতকাল ধর্মীয় বিষয় নিয়ে তর্ক করতে করতে আমার ১ বন্ধু জ্যোতির্বিজ্ঞান ও চিকিৎসা শাস্ত্রকে অস্বীকার করেছেন!!! সবার উপরে আল্লা ও কুরান সত্য... বাকি সব কিছু নাকি ভুয়া!!) এই বিষয়গুলা বর্তমান সময়ের অনেক কিছুর নিয়ামক এবং আমাদের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি... চিকিৎসা, কৃষি, অণুজীববিদ্যা ইত্যাদি ইত্যাদি কয়েক হাজার সেক্টর আছে যার ভিত্তি হল বিবর্তনবাদ! মোট কথা বলতে গেলে আধুনিক জীববিজ্ঞান দাঁড়িয়ে আছে বিবর্তনের উপরে! বিবর্তন সম্পর্কে সঠিকভাবে না জেনে এই জিনিসগুলা নিয়ে আপনি সামনে এগুবেন কিভাবে? আমাদের পাঠ্যপুস্তকে আগে বিবর্তন বিষয়টা ছিল... কিন্তু পরবর্তীতে এটা বাদ দিয়ে "জৈব প্রযুক্তি" অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে... এখানে অবশ্য আমার কয়েকটা প্রশ্ন আছে... বিবর্তন ছাড়া জৈব প্রযুক্তি পড়ায় লাভটা কি? আর জৈব প্রযুক্তির নামে কাঠাল গাছে কলম করা শিখায় লাভটাই বা কি?

বিবর্তন নাকি ধর্মের সাথে কলিশন করে! আমাদের দেশে বেশ কয়েকটা বিশ্ববিদ্যালয়ে জেনেটিক্স, বায়োটেক পড়ানো হয়... সেখানেও ধরমানুভুতির উসিলা দিয়ে নাকি ব্যপারটা বিস্তারিত পড়ানো হয় না! ধর্মের সাথে আসলে বিজ্ঞানকে গুলায় লাভটা কি? ধর্ম ধর্মের জায়গায় থাকুক... বিজ্ঞান আর শিক্ষা তাদের জায়গায়... রুপকথার কাহিনীতে বিশ্বাস দিয়ে তো আর বর্তমান বিশ্ব চলে না... যাদের বিশ্বাস করার দরকার করুক আর গুহায় গিয়ে ধ্যান করুক...কিন্তু দেশের তরুন প্রজন্ম যদি গুহায় গিয়ে বসে থাকে তাহলে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে কে? গোঁড়ামির কারনে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি... আর পিছিয়ে গেলে বিশ্বের সাথে তাল মিলানো আরও কঠিন হয়ে পড়বে! বর্তমান অবস্থা দেখে আমার মনে পড়ে যায় ব্রিটিশ আমলে মুসলিমদের ইংরেজি শিক্ষা সংক্রান্ত ধর্মীয় জটিলতার কারনে উপমহাদেশের বিশাল ১টা জনগোষ্ঠি কয়েকশ বছর পিছিয়ে পড়ল! যাই হোক, আমরা বাঙালি অনেক ক্ষেত্রেই আবাল জাতি... আমরা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নি না! এখন আমরা ধর্ম ধর্ম করে বিবর্তন শিক্ষা নিব না... বিশ্ব এটার প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি, শিল্প, চিকিৎসা, জীব- অনুজীববিদ্যা ইত্যাদি ইত্যাদি কয়েক হাজার ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে আর আমরা আমাদের পৌরাণিক আদম-হাওয়া আর কল্পিত সেমেটিক ঈশ্বরের প্রতি পিরিতি ও সম্মান বজায় রাখতে গিয়ে দিন দিন প্রস্তর যুগের দিকে পিছিয়ে চলছি!!! আমেরিকানরাও অনেকদিন বিবর্তন নিয়ে চার্চের বাধার মুখে ছিল... কিন্তু তারা এখন ক্রিয়েশনিজমের মত বুলশিট অপ-মতবাদকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছে! স্কুলে কলেজে এখন বিবর্তন পড়ানো হয়... ওরা এগিয়ে গিয়েছে প্রগতির দিকে! একটা সময় আমরাও হয়ত আমাদের ভুল বুঝতে পারব, সেইদিন দীর্ঘশ্বাস ফেলা ছাড়া হয়ত করার কিছু থাকবে না!
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×