somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়া"... মার্কেটিং এর জগতে নতুন দিগন্ত যার বলির পাঠা আপনি আমি!

১২ ই আগস্ট, ২০১২ রাত ২:০৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের শ্রদ্ধেয় এক বড় ভাইয়ের একটা বিখ্যাত ডায়লগ আছে... বিখ্যাত হওয়ার দুইটা উপায় আছে... এক, আসলেই কিছু একটা করে বিখ্যাত হয়ে যাওয়া আর দুই, কোন একটা অকারেন্স করে বিখ্যাত হওয়া... এই বিষয়ে তিনি একটা উদাহরন সবসময় দিয়ে থাকেন যেটা অনেকের কাছেই শ্রুতিকটু ঠেকতে পারে... ধরেন আপনি একজন এম পি/মন্ত্রী... আপনি খুব বিখ্যাত হতে চান! আপনি অনেক অনেক ভালো ও জনকল্যানমূলক কাজ করে হয়ে গেলেন নামকরা এমপি/মন্ত্রী... অথবা কিছুই করলেন না... মন্ত্রীসভায় সেইরকম একটা পাদ দিয়ে বসলেন যেটা ৩০০ সংসদ সদস্যের মধ্যে অন্ততঃ ১৫০জনের কানে-নাকে প্রবল আঘাত সৃষ্টি করল!! দুইভাবেই কিন্তু আপনার নাম ইতিহাসের পাতায় ও পাবলিকের হৃদয় দুইজায়গায়ই স্থায়ী হয়ে যাবে! (আবুলের মত কিছু লোকজন অবশ্য তাদের নিজ "যোগ্যতায়" পাবলিকের মনের মনিকোঠায় স্থান করে নিয়েছেন... তাদের হিসাব আলাদা! সবাই তো আর চাইলেই আবুল হতে পারেন না... আবুলরা যুগে যুগে ২-১পিসই আসেন!!) বিখ্যাত হওয়ার বাসনা আমাদের সবার ভিতরেই থাকে... এটা দোষের কিছু না! তবে আজকাল দেখা যায় সবার ভিতরে যেকোন উপায়ে হিট হওয়ার প্রবণতা চলে এসেছে... এরজন্য সবাই জনকল্যান পদ্ধতির চেয়ে "পাদ-পদ্ধতির" দিকেই বেশি ঝুকছে! সাধারন/অসাধারন জনগনের পাশাপাশি কর্পোরেট জগতেও ব্যাপারটা অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে বলা যায়! এই শতাব্দীর পুঁজিবাদের বাজারে ব্যান্ডের ব্যাপারটা বড়ই গুরুত্বপূর্ণ... সবাই চায় তার নিজের পন্যকে ব্র্যান্ড বানাতে... সেটা পন্যই হোক আর সেবাই হোক! ব্র্যান্ড কোনভাবে একবার হিট করাতে পারলেই কেল্লাফতে, লালে লাল শাহজালাল! আর কি লাগে! পজেটিভ হিট (জনকল্যান মেথড) হলে তো কোন কথাই নাই... নেগেটিভ হিট (পাদ মেথড!!) হলে আরও ভালো!! কারন দুই চারদিন লোকজন হয়ত গাইল্লাবে!! কিন্তু লোকের মুখে নাম ছড়ায় গেলে, লোকজন চিনলে দুইদিন পর দেখা যাবে যারা গাইল্লাইছে তারাই পন্য কিনবে/সেবা নিবে! এটা শুধু আমাদের দেশে না, পুরা বিশ্বের ক্ষেত্রেই সত্য... যেমনঃ কোন বই/ সিনেমা নিষিদ্ধ হলেই এর কাটতি দ্বিগুণ- তিনগুন হয়ে যায়! জাস্টিন বিয়েবার এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে গাইল খাওয়া মিউজিশিয়ান... তার কাটতি কিভাবে বাড়তেছে চিন্তা করে দেখেন! আমাদের দেশে এই মুহূর্তে একটা সেবার চাহিদা আকাশচুম্বী, সেটা হল শিক্ষা... বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা! জিনিসটার অবস্থা অবশ্য কয়েক দশক আগেও এই রকম ছিল না... তখন পাশ করা শিক্ষার্থী আর সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের সিটের সংখ্যা কাছাকাছি ছিল! দেখা গেল একটা সময় পাশের হার বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে জনসংখ্যা... সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা/তাদের আসন সংখ্যা সেই অনুপাতে বাড়ে না! এক সময় সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলো উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী সবার জন্য শিক্ষা দিতে পারে না... শুরু হয় বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা! দেখা যায় একটা সময় শিক্ষার বানিজ্যিকিকরন শুরু হয়ে যায়... এই ক্ষেত্রেও শুরু হয়ে যায় ব্র্যান্ডের খেলা! পোলাপান যাই সেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চায় না! বেশ কয়েকটা ব্র্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয় আছে এগুলা আমাদের প্রধান টার্গেট থাকে! এদের মধ্যে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ই আমার মতে "জনকল্যান মেথডে" তাদের মান ধরে রেখে অনেক বছর সাধনা টাধনা করে একটা লেভেলে আসছে! মার্কেটিং পলিসির ভালো অবদান আছে-এটা সত্য! যেমনঃ নিজস্ব ক্যাম্পাস, অমুক ভারসিটিতে এলিট পোলাপান পড়ে, অমুক ভারসিটির পোলাপান খ্যাত হলেও তারা পড়ালেখা করে এসব প্রোপাগান্ডা ভার্সিটির মার্কেট তৈরিতে ভালো অবদান রাখছে! তবে কয়েকদিন ফেইসবুক ব্লগে একটা ভার্সিটি নিয়ে প্রবল আলোড়ন দেখে কেন জানি মনে হচ্ছে উচ্চ শিক্ষা বানিজ্যে মার্কেটিং এর এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হল... সেটা হল নেগেটিভ মার্কেটিং! আই মিন- কুখ্যাত "পাদ পদ্ধতি"!!! বিজ্ঞ পাঠকগন হয়ত ইতিমধ্যে বুঝে গিয়েছেন আমি কিসের কথা বলতেছি! দেখতে পেলাম প্রথম আলোতে একটা চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়েই কিভাবে একটা অখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম কিভাবে দুই দিনে পুরা দেশের অর্ধেক লোকজন জেনে ফেলল! ফেইসবুক-ব্লগে এই "ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়া" ছাড়া কোন কথাই হচ্ছে না! কত লোকজন শেয়ার দিচ্ছেন, কত লোকজন এটা নিয়ে আলোচনা করছেন! সর্বোপরি কত লোক এটার নাম জানছেন! একবার চিন্তা করে দেখেন... তারা কত সহজে নিজেদের একটা ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে ফেলল... আপনার আমার অজান্তেই! পরিশ্রম ও মান ধরে রাখা সিস্টেমে যদি তারা এগুতো তাহলে তাদের এই নাম কামাতে কত বছর সময় লাগত? একটা সময় দেখা যাবে মানুষ এই বিজ্ঞাপনটার কথা ভুলে গিয়েছে... কিন্তু তাদের মাথায় ঠিকই থেকে যাবে "ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ এশিয়ার" নাম! বেশি দেরি নয়... ধরেন পরের বছরই কোন ছাত্র প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে কি একবার হলেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খোজ নিয়ে দেখবে না? তারা স্টুডেন্টদের কতটুকু সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সেটা অনেকেই চিন্তা করে দেখবে না... নামের উপর দেখা যাবে অনেকেই ভর্তি হয়ে গেছে! এই যুগে ব্র্যান্ডের মোহটা এমনই! আমার দৃষ্টিতে অনবদ্য মার্কেটিং স্ট্রাটেজি আর এই স্ট্রাটিজিতে তাদের প্রতিনিয়ত সহায়তা করে যাচ্ছি আমি-আপনি! একটাই অনুরোধ নেক্সট টাইম এই বিষয়ক কোন লাইক-শেয়ার-পোস্ট মারার আগে অন্ততঃ এই ব্যাপারটা চিন্তা করে দেখবেন! তাদের উঠার ইচ্ছা থাকলে ছাত্র-ছাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে, মান বজায় রেখে উঠুক... কোন চটকদার বিজ্ঞাপন/ফেইসবুক ব্লগের কল্যানে নয়! কেউ যদি আসলেই হিট করতে চায় সেই হিটের পন্থাটা হোক "জনকল্যান মেথড"... "পাদ মেথডে" হয়ত কেউ হিট হতেই পারে, কিন্তু এই মেথডে কিন্তু যোগ্যতা অর্জন সম্ভব নয়! বরং সেই ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান হয় সমাজের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়! সবাইকে একটু ভেবে দেখার অনুরোধ রইল!
১৯টি মন্তব্য ১৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×