somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধার্মিক ও অধার্মিক মাননীয়াদ্বয় এবং স্টুপিড পাবলিক

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভদ্র মহিলার ফর্সা অনিন্দ্য সুন্দর ত্বকের দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে আমাদের চোখ ঝাফসা হয়ে আসে। তার পরও আমাদের তাকিয়ে থাকতে হয়। আমরা চোখ ফিরিয়ে নিতে পারি না। তিনি আমাদের স্বপ্ন দেখান, তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেন এক সুন্দর ভবিষ্যতের।

আমরা তার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকি, ঘন্টার পর ঘন্টা। আমরা আশা করি উনি এমন কিছু করবেন যা আমাদের, আমাদের পরিবারদের ভবিষ্যত নিশ্বিৎ করবে। এক অন্ধকার সৈরতন্ত্র হতে আমাদের মুক্ত করবেন। যদিও আমরা জানিনা তার সে ক্ষমতা/ইচ্ছা আছে কিনা ? উনি আমাদের এক ধরনের ঘোরের মধ্যে আবদ্ধ করে ফেলেন, সম্মোহিত করে রাখেন।

আমরা নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে আবদ্ধ হয়ে থাকি।উনি আমাদের নিয়ে এক ধরনের খেলায় মেতে উঠেন, আমরা বুঝতে পারি উনি আমাদের নিয়ে নিষ্ঠুর খেলায় মেতে আছেন কিন্তু আমরা তার সম্মোহন হতে বের হতে পারিনা। উনার সম্মোহন হতে বের হওয়ার ইচ্ছাটাও আমাদের থাকেনা। আমরা তার জালে জড়িয়ে যেতে থাকি।

আমরা আমাদের সুন্দর ভবিষ্যতের ব্রতের কথা ভুলতে থাকি, ভুলতে থাকি আমাদের স্বপ্নের কথা। আমরা শুধু ভদ্রমহিলার দ্বাসত্বে মেতে উঠি। আমাদের কেউ কেউ উনার দ্বাসত্ব থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেন, উনি তাদের চরম ভাবে শাস্তি দেন যা দেখে আমারা শিউরে উঠি। উনার সম্মোহনী শক্তি, উনার রুপের আকর্ষণ, উনার ভয় আমাদেরকে উনার চার পাশে শৃঙ্খলিত করে রাখে। আমরা তার অন্যায় আবদারের কাছে মাথা নত করতে থাকি। আমরা আমাদের ভবিষ্যতের পথে কাটা বিছাতে থাকি, বুঝতে পারিনা আমাদের সর্বনাশ, আমাদের সামনের অন্ধকার।

আর যারা ভদ্রমহিলার সম্মোহনের বাইরে তারাও কিছু করতে পারে না । কারন তারও ভদ্রমহিলার প্রতি কৃত‘। ভদ্রমহিলা আমাদেরকে , তাদেরকে এক উম্মাদ ভদ্রলোকের খপ্পর হতে রক্ষা করেছিলেন। তারা কৃতজ্ঞ চিত্ত্বে ভদ্রমহিলার স্তুতি গেয়ে যায়। তারা শাদা চোখে কিছুই দেখতে পায় না। আমরা সম্মোহিতের দল তাদেরকে কিছু জানাতেও পারি না।

সময়ের সাথে সাথে আমাদের সম্মোহনী ভাব কাটতে থাকে। আমরা আমাদের অন্ধকার ভবিষ্যৎ বুঝতে পারি, নিজেদের কি অফুরন্ত ক্ষতি নিজেরা করেছি আমরা বুঝতে পারি। কিন্তু উনার নিষ্ঠুরতার ভয় আমাদের কুকড়ে দেয়, আমরা আতঙ্কিত হয়ে উঠি আমাদেরকে নিয়ে, আমাদের অন্ধকার ভবিষ্যৎ নিয়ে, আমাদের পরিবার নিয়ে। আমরা সর্বময় স্রষ্টার দারস্ত হই, আমরা প্রর্থনা করি, আমরা মুক্তি চাই ভদ্রমহিলার অশুভ বলয় হতে। আমরা অপেক্ষা করতে থাকি নতুন কোন ভদ্রলোক অথবা মহিলা আমাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসবেন। যিনি হবেন আমাদের সত্যিকার মুক্তিদাতা। যিনি আমাদের মুক্ত করবেন, আমাদের ভবিষ্যৎ কাটা মুক্ত করবেন। আমাদের বিছিয়ে আসা কাটা পরম-মমতায় উপড়ে ফেলে আমাদের মুখে হাসি ফোটাবেন।

স্রষ্টা আমাদের ভালোবাসেন, আর তাইতো আমাদের মনের আশা পূরন করে রাজবংশীয় এক ভদ্রমহিলা তসবি হাতে সন্যাসী বেশে আমাদের উদ্ধারে এগিয়ে আসেন। আমরা পরম ভালোবাসায় উনাকে জড়িয়ে ধরি। আমাদের উজ্বল ভবিষ্যৎ উনার কপালের মাঝখানটায় জ্বল জ্বল করে জ্বলতে দেখি। আমরা আশান্বিত হই, আমরা আবার স্বপ্ন দেখা শুরু করি। আমাদের ভবিষ্য আমাদের সামনের দিন গুলিতে উনার উপস্থিতি কল্পনা করি। উনাকে আমাদের মাথার উপরে স্থান দেই। উনিও আমাদের সম্মোহিত করে রাখেন। আমরা উনার জাদুতে আছ্ছন্ন হয়ে থাকি। আমরা পরম স্রষ্টার কাছে তার দীর্ঘ আয়ু কামনা করি।

সময় তার নিজস্ব গতিতে পাগলা ঘোড়ার মত ছুটতে থাকে। সময়ের ঘুর্নায়নে অনেক কিছু আমাদের কাছ থেকে দুরে যেতে থাকে। সময় রাজবংশীয় সন্যাসী ভদ্র মহিলাকে আমাদের মত সাধারন মানুষের কাতারে নিয়ে আসে।

আমরা পরম বিস্ময়ে দেখি সময় উনার হাত থেকে তসবী আর মাথার ঘোমটা কেড়ে নিয়েছে। তার বিনিময়ে জিহ্বাগ্রে রেখে গেছে চরম এক বিষাক্ত কাটাযুক্ত ফল। যে ফলের কাটার আঘাত আমাদের সততই বিদ্ধ করতে থাকে। উনার জিহ্বাগ্রের বিষাক্ত ফলের খোচায় আমরা জর্জরিত হতে থাকি। বিষের আঘাতে, বিষের প্রভাবে আমাদের শরীর নীল হয়ে যায়।
একদা সন্যাসী মনে হওয়া ভদ্র মহিলাকে আমাদের ডাইনি ছাড়া অন্য কিছু মনে হয় না। আমরা ডানা ভাঙ্গা পাখির মত উনার হাত হতে রেহায় পাওয়ার জন্য ছটপট করতে থাকি। আমরা আর স্রষ্টার কাছে নতুন কাউকে পাঠানোর জন্য প্রর্থনা করি না। কারন আমরা বুঝতে পারি------ ।

আমরা আবার আমাদের পূর্বের সেই সাদা চামড়া ওয়ালা ভদ্রমহিলার নিকট ফিরে যায়। উনাকে নিয়ে আসি আমাদের উদ্ধারের জন্য কারন আমরা স্টুপিড আমরা অন্যকোন বিকল্পের কথা ভাবতে পারিনা।
১৫টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বিসিএস দিতে না পেরে রাস্তায় গড়াগড়ি যুবকের

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৫৫

আমাদের দেশে সরকারি চাকরি কে বেশ সম্মান দেওয়া হয়। আমি যদি কোটি টাকার মালিক হলেও সুন্দরী মেয়ের বাপ আমাকে জামাই হিসেবে মেনে নিবে না। কিন্তু সেই বাপ আবার ২০... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। আমের খাট্টা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৪



তাতানো গরমে কাল দুপুরে কাচা আমের খাট্টা দেখে ব্যাপারটা স্বর্গীয় মনে হল । আহা কি স্বাদ তার । অন্যান্য জিনিসের মত কাচা আমের দাম বাড়াতে ভুল করেনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডাক্তার ডেথঃ হ্যারল্ড শিপম্যান

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:০৪



উপরওয়ালার পরে আমরা আমাদের জীবনের ডাক্তারদের উপর ভরশা করি । যারা অবিশ্বাসী তারা তো এক নম্বরেই ডাক্তারের ভরশা করে । এটা ছাড়া অবশ্য আমাদের আর কোন উপায়ই থাকে না... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ইতং বিতং কিচ্ছার একটা দিন!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:০৩



এলার্ম এর যন্ত্রণায় প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙ্গে আমার। পুরাপুরি সজাগ হওয়ার আগেই আমার প্রথম কাজ হয় মোবাইলের এলার্ম বন্ধ করা, আর স্ক্রীণে এক ঝলক ব্লগের চেহারা দেখা। পরে কিছু মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কে কাকে বিশ্বাস করবে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৯


করোনার সময় এক লোক ৯৯৯ এ ফোন করে সাহায্য চেয়েছিল। খবরটা স্থানীয় চেয়ারম্যানের কানে গেলে ওনি লোকটাকে ধরে এনে পিটিয়েছিলেন। কারণ, ৯৯৯ এ ফোন দেওয়ায় তার সম্মানহানি হয়েছে।

সমাজে এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×