somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা (৯)

০৮ ই অক্টোবর, ২০১২ দুপুর ১২:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


[শয়তান যে মানুষকে নেক সুরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা যার মূলে থাকে খ্রষ্টীয় বৃটিশ সম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। "Confession of British Spy and British enmity against Islam" গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। যা মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। ইনশাআল্লাহ।

৯ম পর্ব

(হেম্পারের জবানবন্দির তুর্কী অনুবাদ এবং লেখক এম. সিদ্দিক গূমূজের ব্যাখ্যা মিলিয়ে একটি বই প্রকাশিত হয়। আমরা সেই বইয়ের ইংরেজী অনুবাদ থেকে বাংলায় অনুবাদ প্রকাশ করছি। গত সংখ্যার বন্ধনীর লেখা থেকে এ সংখ্যার বন্ধনীর মধ্যস্থিত লেখা হচ্ছে এম. সিদ্দিক গূমূজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা।)

আমি নজদের মুহম্মদ বিন আব্দুল ওহাবের সাথে খুব সখ্যতা গড়ে তুললাম এবং চুতর্দিকে তার প্রশংসা করতে লাগলাম।

একদিন তাকে বললাম, “তুমি ওমর (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এবং আলী (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু)-এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যদি এখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীতে থাকতেন তবে তিনি তোমাকে খলীফা হিসেবে নিযুক্ত করতেন।
আমি আশা করি তোমার হাতে ইসলামের পুনঃসংস্কার এবং উন্নতি ঘটবে। তুমিই একমাত্র জ্ঞানী ব্যক্তি, যে সারাবিশ্বে ইসলামকে ছড়িয়ে দেবে।

কুরআন শরীফের একটা নতুন ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আব্দুল ওহাবের পুত্র মুহম্মদ এবং আমি পরিকল্পনা নিলাম। যে ব্যাখ্যাতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটবে এবং যা হবে সম্পূর্ণভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, মাযহাবের ইমাম এবং মুফাস্সিরগণের ব্যাখ্যার বিপরীত। আমরা তখন তাফসীর করতে লাগলাম এবং কিছু আয়াত শরীফের নতুন ব্যাখ্যা প্রদান করতে লাগলাম।

আমার উদ্দেশ্য ছিলো এভাবে নজদের মুহম্মদকে বিভ্রান্ত করা। যেহেতু সে তখন নিজেকে একজন বিপ্লবী হিসেবে প্রকাশ করতে চেষ্টা করে যাচ্ছিলো। ফলে সহজেই সে আমর চিন্তাভাবনাগুলোকে আনন্দের সাথে গ্রহণ করলো। যাতে সব ব্যাপারে সে আমার আস্থাভাজন হতে পারে। একদিন সুযোগ মতো তাকে বললাম, “জিহাদ করা ফরয নয়।” সে প্রতিবাদ করলো। বললো, “তা কি করে হয়। যেখানে আল্লাহ পাক বলেছেন, “কাফিরদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করুন।” (সূরা তওবা ৭৩)

আমি বললাম, “তাহলে কেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন না। আল্লাহ পাক বলেন, “জিহাদ ঘোষণা করুন কাফির ও মুনাফিকদের বিরুদ্ধে।”

[ অপরদিকে মাওয়াহিবু লাদুন্নিয়া’-এ লিখা আছে যে, কাফিরদের বিরুদ্ধে ২৭টি যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিলো। জিহাদে ব্যবহৃত সে সব তরবারী এখন ইস্তাম্বুল যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। মুনাফিকরা মুসলমান হিসেবে ভান করতো, তারা মসজিদে নববীতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সঙ্গে নামায আদায় করতো। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানতেন তারা মুনাফিক, তথাপি তিনি কাউকে বলেননি ‘তুমি মুনাফিক।’ যদি তিনি তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতেন তাহলে লোকে বলতো, যারা নবীর উপর বিশ্বাস স্থাপন করেছে তিনি তাদেরই হত্যা করেছেন। তাই এদের বিরুদ্ধে তিনি মৌখিকভাবে জিহাদ করেছেন। জিহাদ ফরয। এটা হতে পারে দৈহিকভাবে। অথবা সম্পদের মাধ্যমে অথবা বক্তৃতার মাধ্যমে। উপরের আয়াত শরীফে কাফিরদের বিরুদ্ধেই জিহাদ করার হুকুম দেয়া হয়েছে। এই আয়াত শরীফে নির্দিষ্ট বলা হয়নি কোন ধরনের জিহাদ করতে হবে। কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাই জিহাদ। আর মুনাফিকদের বেলায় জিহাদ করতে হয় ধর্মোপদেশ ও প্রচারের মাধ্যমে। এই আয়াত শরীফে উভয় জিহাদের কথাই ব্যক্ত হয়েছে। ]
-এম সিদ্দিক গূমুজ।


(ইনশাআল্লাহ চলবে)

এথান থেকে পরুন পর্ব- এক
এথান থেকে পরুন পর্ব- দুই
এথান থেকে পরুন পর্ব- তিন
এথান থেকে পরুন পর্ব- চার
এথান থেকে পরুন পর্ব- পাঁচ
এথান থেকে পরুন পর্ব- ছয়
এথান থেকে পরুন পর্ব- সাত
এথান থেকে পরুন পর্ব- আট
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×