ইসলামের কি কোন কম্পালসারি ড্রেসকোড আছে?’ মেয়েদের পর্দা নিয়ে এতো বাড়াবাড়ি কেনো?
ইসলাম ধর্ম অন্যান্য ধর্মের ন্যায় শুধুমাত্র কিছু আনুষ্টানিক কর্মকান্ডের ধর্ম নয়, বরং এতে রয়েছে মানব জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে মেনে চলার মতো সৃজনশীল বিধি-বিধান। তাই তো বলা হয় Islam is a complete code of life, ইসলাম হলো একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান। একজন মানুষ জন্ম থেকে নিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত কী খাবে? কিভাবে খাবে? কী পরবে? কিভাবে পরবে? কী করবে? কিভাবে করবে? তার পূর্ণাঙ্গ বর্ণনা দেওয়া আছে।
ইসলাম পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান হিসেবে মানব জাতির অন্যতম অধিকার পোষাক পরিচ্ছদের ব্যাপারে যে নিয়ম নীতি প্রদান করেছে তা মূলত উন্নত নৈতিকতারই শিক্ষা।
সাধারণত ড্রেস কোড’ বলতে অনেকটা ইউনিফর্ম ড্রেস বোঝায়। সে রকম কোন ড্রেস কোড ইসলামে নেই। ইসলাম একটা প্রিন্সিপাল বলে দিয়েছে। বলেছে যে, মেয়েদের তাদের সৌন্দর্যের স্থানগুলোকে ঢেকে রাখতে হবে।
‘ছেলেদের সম্পর্কেও বলা হয়েছে যে, তাদের পোশাক নাভির নিচে এবং হাঁটুর ওপরে উঠতে পারবে না। তবে ‘সৌন্দর্যের স্থানগুলো ঢাকতে হবে’-এই ধরনের নির্দেশ ছেলেদের ক্ষেত্রে নেই।’
প্রশ্ন আসতে পারে এমন নির্দেশ শুধুমাত্র মেয়েদের ক্ষেত্রে কেন?’
এর উত্তরে অনেক যুক্তি, অনেক কথা আছে। একটা সহজ যুক্তির কথা হলো- সুন্দর ও মূল্যবান জিনিস আড়াল করতে হয় অন্যের নজর থেকে। কারণ, অন্যের লোভ অনর্থের সৃষ্টি করতে পারে। মেয়েরা বা মেয়েদের সৌন্দর্য তেমনি একটা বস্তু যা আড়াল করতে হয়।’
প্রশ্ন জাগতে পারে ছেলেদের সৌন্দর্য আড়াল করতে হবে না কেন? তা কি লোভের বস্তু নয়?
তা লোভের বস্তু হলেও পুরুষরা নিজেদের রক্ষা করতে পারে, মেয়েরা তাদের রক্ষা করতে পারে না। আরেকটা বড় বিষয় হলো, মেয়েরা এই বিষয়ে পুরুষদের ওপর আক্রমণাত্মক নয়। অন্যান্য জীবজগতেও দেখা যায়, এটাই সত্য। প্রকৃতিগতভাবেই মেয়ে প্রজাতি এই ক্ষেত্রে নন-এ্যাগ্রেসিভ, সংরক্ষণবাদী। অন্যদিকে এক্ষেত্রে পুরুষরা একেবারেই উল্টো। নারীরা, নারীদের সৌন্দর্য পুরুষদের শুধু আক্রমণ নয়, ভায়োলেন্সেরও শিকার হয়। প্রাচীন, আধুনিক সব ইতিহাস এ ধরনের ঘটনায় ভরপুর। সুতরাং নারী ও নারীর সৌন্দর্য প্রয়োজন অনুযায়ী আড়াল করা তাদের এবং সমাজের জন্যে কল্যাণকর।
বলতে পারেন সমাজের সব মানুষ খারাপ নয়, বরং বেশিরভাগই ভালো। ইতিহাস এরও সাক্ষী। তাহলে কিছু খারাপ লোকের কারণে মেয়েদের জন্যে এত আয়োজন করতে হবে কেন?
এর উত্তর হলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে এমন ভালো মানুষ অনেক আছে, আবার অনেকে আছে যারা সুযোগ ও সাহসের অভাবে ভালো থাকে, কিন্তু শয়তান যেহেতু আছে, শয়তানী প্রবণতা থেকে কোন মানুষই মুক্ত নয়। এই কারণেই আল্লাহ সাবধান হওয়ার বিধানকে সাধারণ করে দিয়েছেন। এ বিধানের যৌক্তিকতার আরেকটা দৃষ্টান্ত দেখুন, চোর সমাজের ক’জন, অপরাধী সমাজের ক’জন, কিন্তু দেখুন, সাধারণভাবে সবার জন্যে আইন তৈরি হয়েছে। আইন সবাইকেই পাহারা দেয়। মেয়েদের সৌন্দর্য আড়ালের ব্যাপারটাও এরকমই।’
(কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, শ্রদ্ধেয় আবুল আসাদ স্যার এর প্রতি। তার অমূল্য লিখনী হতে এতো সুন্দর যুক্তি আহরণ করতে পেরেছি বলে।)