somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"ওয়াশরুম" স্যার আর আমার ছেলেবেলা

১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মানুষ যে কত দুষ্ট আর শয়তান হতে পারে এর সবচেএ বড় প্রমান হলাম আমি, ছেলেবেলা টা যে কেমন ছিল তা হইত ৮/৯ টা ব্লগ লিখে ও শেষ করা যাবে না, তারপর ও কিছু শেয়ার করি-

বড় আপা এর জমানু মুরগির ডিম বেচে দেওয়া, দাদী কে উল্টা পাল্টা বুজাই ফামিলি প্ল্যানিং এর বড়ি খাওানু, আমাদের বিশাল বাশ বাগান থেকে বাশ বেচে দেওয়া, হিন্দু বাড়িতে গিয়ে পুজার প্রসাদ খাওয়া যদিও আমারা খুব ই কঠোর ইসলামিক পরিবার এর ছিলাম, .।.।.।.।.।.।। আরও কত কি

স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি সব যায়গায় একটা জিনিস এর মিল ছিল সেটা হল স্যার দের পসন্দ না হলে সুন্দর সুন্দর মুখরোচক স্যার দের নাম দেওয়া।
যখন ক্লাস ২ টে পরতাম তখন ই জানলাম ব্যাঙ ছাতা মানুষ খায়, যেটা খায় সেটার নাম হল "মাশরুম" সারা ক্লাস বসে সুনলাম এটা, আমাদের পরিবার টা ছিল বিশাল বড় ৩০/৪০ জন এর, মা কাকি এরা ঠিক মত খবর ও নিতে পারত না,আমরা কে কোথাই আসি, কই পরছি, ত্ব বড় আপা কে বললাম স্যার বলসে "ওয়াশরুম" খাওয়া যাই এর এক্সাম এটা এ লিখসি, পরে আব্বা কে যখন স্যার খাতা টা দেখাল, আব্বা ত্ব রেগে পুরা তাল গাছ, বাড়ি এসে আব্বা সেই একটা মাইর দিল, তারপর থেকে কিভাবে যে অই স্যার এর নাম "ওয়াশরুম" হয়ে গেল সেটা আমিও জানি না আমার স্যার অও জানে না,
বাবা খুব খুশী হয়ে ছিল যেদিন "ওয়াশরুম" স্যার বলসিল বাবা কে " জহির তুমার এই ছেলে টা খুব মেধাবী, দেখ নিজের চেষ্টাই গ্রামে থেকে টালান্তপুল এ বৃত্তি পাইসে, অরে একটু দেইখা রাইখ" বাবা ও খুশী মনে বাড়ি এসে আমারে কিছু বলার আগেই সুনল আমি আর আমার চাচাত ভাই (এখন পি এইচডী অদ্ধায়নরত/ বেলজিআম) বাশঝার এর ২০ টা বাশ বেচে সিনেমা দেখসি, দুই জন ই দারাই আসি বিচারপারথি হিসেবে, তখন চাচা একটা লাঠি দিয়া মারল ঢিল, এর সেই ঢিল টা গিয়া লাগল দাদী র মুরগির উপর, ত্ব সাঁতে সাঁতে মুরগি জান্নাত বাসী হয়ে গেল, আমার দাদী ত্ব চিল্লানু সুরু করল আমার মুরগি মইরা গেসে ডিম পারত, এখন কি হইব, আমার মুরগি শেষ, আর সেই ঢিল টা যদি লাগত নিশ্চিত একটা হাত পা ভাংত, যাক আল্লাহ বাচাই সে, তখন চাচা চিল্লাই বলতেসিল, মুরগি ও দিবি আর ডিম আর দাম ও দিবি, আর আমরা ত্ব সাঁতে সাঁতে দৌড় আর কে পায়, সুজা নদির অই পারে ফুপির বারিতে, আর ফুপি ও জানত ভাল কাজ করে উনার বাড়িতে আমরা কখনও জাওয়ার কথা না। তারপর মনের সুখে ৩/৪ দিন ফুপির বাড়ি তে বেরানু, পরে যখন বাড়ি আসতাম মা এর কাসে এসে তওবা করতাম আর কুনও দিন শয়তানি করব না, কিন্তু মা খুব ভাল করে জানত এই তওবা এর পর আবার নতুন উদ্দম এ শয়তানি শুরু করব, তার পর ও মা ছিল আমার ছায়া এর মত।

গ্রাম এর ছেলে হিসেবে পরা লিখাই ভাল ছিলাম, আবার খুব যে ভাল ছিলাম টা না কিন্তু, পরাসুনা করার থেকে বেশি চিন্তা থাকত কিভাবে এটা করব ওটা করব এইসব নিয়ে,

মা সব সময়ই চাইত আমি ইঞ্জিনিয়ারিং এ পরি যদিও মা ইঞ্জিনিয়ারিং এর কিছুই বুজত না, যেদিন ইঞ্জিনিয়ারিং এ পরার সুযোগ পেলাম বাড়ি তে জানানুর আগেই "ওয়াশরুম" স্যার বাবা কে বলল তুমার পুলাডা খুব ভাল করব বড় ডার মত এই টা ও ভাল যাইগায় পরার সুযোগ পাইসে, এই স্যার আমাদের পরিবার এর খুব গুরুত্বপূর্ণ লুক ছিল, আমাদের পরিবার এর এমন কেও ই নাই যে উনার মার খাই নাই, উনার মার খেয়ে আজ আমাদের পরিবার এর ৫ জন ইঞ্জিনিয়ার, ২ জন পি এইচডী লরিএট, ৩ জন ডাক্তার, .।.।.।.।.।.।

একবার আমাদের গ্রাম এর এক চাচা ঢাকা আসল কুনও এক কাজে, বাবা আমার এর বড়দা এর মোবাইল নম্বর দীয়ে দিল এর বলল ঢাকা গিয়া ফোন দিও, দেখবা খুব সমাদর করব, আমি বড়দা কে জানলাম- তখন উনি পি এইচডী নিয়া খুব ঝামেলাই ছিল, বলল ত্বর হল এ উঠা আমি রাতে আসব দেখা করতে, আমিও সেই প্রস্তুতি নিলাম, এর উনা কে বল্লাম চাচা আমি ত্ব ল্যাব (মেকানিকাল ল্যাব) এ আপনি ভিতর আসেন, পরে রুম এ যাব, উনি আসল এবং আমার মুখ এর দিকে শুধু চেয়ে রইল বুবা এর মত কুনও কথা এ বলে না, পরলাম মহা বিপদ এ, আবার কুন ঝামেলাই পরসি, দাদা রে ফোন দিয়া জানানুর পর উনি রকেট এর গতি তে আমার রুম এ আসল বলল কি হইসে, আমি বললাম কিছুই বুজতাসি না, ডাক্তার নিয়া আসলাম রুম এ, উনি অও কিছু বুজে না, পরলাম আরও বিপদ এ, কথা ও বলে না খায় ও না, এইদিকে আমিও ইঞ্জিনিয়ারিং এর লাস্ট পরজ্যাই ছিলাম, থিসিস, প্রোজেক্ট নিয়া আমিও দৌড় এর উপর আবার জিআরই আর এক্সাম,
পরে আমি আর দাদা চাচা কে নিয়ে রাতে বাড়ি রওয়ানা দিলাম, খুব ভোর এ বাড়ি গেলাম, বাবা ত্ব দেখে পুরা অবাক, মা ত্ব কুনও কথা বলসে না, পরে অই চাচা বলল মাস্টার কে ডাক, তখন বারির অন্য মুরব্বিও রা ও মুটামুটি হাজির, "ওয়াশ রুম" স্যার খুব ই কষ্টে আসল (এখন উনি হাটটে পারে না)। চাচা তখন বলতেসিল মাস্টার "জহির আর পুলা ডা আত্ত বড় ধুকা দিল আমারে, আমি নিজের চক্ষে দেখসি অও মেশিন এর ঘর এ কাম করে, পরা শুনা করে না, বড় বড় মেশিন"
" ওয়াশ রুম" স্যার তখন উনারে কেমনে বুজাইসে টা উনি আর স্যার আর আল্লাহ জানে,


জীবন আর বাস্ততা এর কারন এ হইত গ্রাম এ আগের মত ঘন ঘন যাই না, তারপর ও স্যার কে খুব মনে পরে।
প্রতিবার দেশ এর বাইরে থেকে আসার পর মা বাবা কে নীয়ে গ্রাম এ যাই, স্যার এর সাঁতে দেখা করতে, যখন উনার ঘরে ফ্লোর এ বসে থাকি, তখন সব কিছু ভুলে যাই, মনে হয় সব সময়ই যদি স্যার এর পা এর কাসে এভাবে বসে থাকতে পারতাম, শুধু আমি না আমাদের পরিবার এর সবাই দেশে আসার পর অথবা কুথাও জাবার আগে স্যার এর সাতে দেখা করা এটা রিতি মত রেওাজ হয়ে গেসে,

"ওয়াশরুম" আমার বাবার ও স্যার ছিলেন, আজ উনি জীবন এর লাস্ট ইনিংস এ আসেন। আপনেরা সবাই আমার স্যার এর জন্য দুয়া করবেন সাতে আমার মা এর জন্য অও (যদিও মা এখন দেশ এর বাইরে আসেন কিছু দিন পর আসবেন) মা আসা পর্যন্ত যাতে স্যার কে আল্লাহ বাচাই রাখেন।

সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জানুয়ারি, ২০১৬ দুপুর ১:১৮
৪টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×