গত ১৪ এপ্রিল,২০১৫ বাংলা ১৪২২ খ্রিঃ এর প্রথমদিন সারাদেশ জুড়ে পহেলা বৈশাখ উদযাপিত হয়। সকল ধরণের নারী, পুরুষ, শিশু, যু্বক, বৃদ্ধ সকলেই আনন্দমুখর দিনটিকে উৎযাপন করতে রমনা বটমূল সহ আসে পাসের এলাকায় অবস্থান করে। উক্ত দিনটিকে উদযাপনের জন্য বিভিন্ন সংস্থা বিভিন্ন ধরণের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রমনা বটমুল সহ আসে পাসের এলাকায়। সকল ধরণের লোকজনই তা উপভোগ করেন।
আমি সেদিন দুপুরে পায়ে হেটে রামপুরা থেকে মৎসভবনের কাছে পৌছি। পায়ে হেটে যাওয়ার কারণ মূলত সবাই যানেন। সেখান থেকে সামনের দিকে যাওয়ার সাহস হচ্ছিলনা। বাশির শব্দ, হইচই, গরম সব মিলিয়ে আমার বমি আসছিল। সাতে একটা ফ্রেন্ড ছিলো ওর অনুরোধে সামনে এগুতে থাকলাম কোথাও কোন দাড়ানোর যায়গা নেই। এত লোকজন এত শব্দ এত গরম। সব মিলিয়ে এক আজব যায়গায় পরিনত হলো রমনা, সরোয়ার্দি উদ্যান, টিএসসি, শাহবাগ এলাকা। শাহবাগ এলাকা মৎস ভবন এলাকায় আমরা সব সময়ই দেখি জ্যম লেগে থাকে সেখানে সেদিন গাড়ি তো দুরের কথা লোকজনের ভিরে কোথাও দাড়ানো দায়। দেয়াল টপকিয়ে সরোয়ার্দি উদ্যানে ডুকলাম টার্গেট ছিলো টিএসসিতে যাবো। কিন্তু উদ্যানের ভিতরও তো আরো খারাপ অবস্থা। কোন ভাবে আবার উদ্যানের দেয়াল টপকিয়ে মসজিদ গেটের অপরদিক দিয়ে বের হলাম। সেখানে আমার কাছে মনে হলো মানুষের ফ্যাক্টরী, মানুষ গুলে গিজ গিজ করছে। সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম দুজনে। যতখন পর্যন্ত আমি লোকজন গুলোকে দেখেছি ততখন নিজের কাছে মনে হলো। সবাই আজকে উপভোগ করছে আর আমি শুধু বোরিং ফিল করছি। সবার মুখেই হাসি ছিলো। বিভিন্ন ধরণের লোকজন এসেছেন শেখানে। কেউ সন্তান নিয়ে, কেউ বোন নিয়ে, কেউ ভাই নিয়ে, কেউ ফ্রেন্ড নিয়ে, কেউ স্ত্রি নিয়ে, কেউ বয় ফ্রেন্ড নিয়ে আবার কেউ এসেছেন গার্লফ্রেন্ড নিয়ে। সবার মুখে হাসি পে পু বাশির শব্দ। উদ্যানের টিএসসি সংলগ্ন গেটে অনেক গুলো পুলিশ সদস্যদের দেখলাম তারাও খুব উৎফুল্ল। সম্ভবত তারাও সবার সাথে উপভোগ করছেন বৈশাখী আমেজ। এতো ভির মারিয়ে সামনের দিকে যেতে, নিজেকে উৎসাহিত করলাম না। এবার খুজতে থাকলাম কোথায় একটু খালি যায়গা পাওয়া যায় সেখানে গিয়ে একটু বিশ্রাম নিবো এবং ঠান্ডা কিছু খাবো। শেষ পর্যন্ত পেয়েও গেলাম মহসিন হল আর এফ রহমান হলের পাসের মাঠে। বসলাম কিছুক্ষণ একটু ঠান্ডা পানি খেলাম। কিছু ফ্রেন্ডদের ফোনদিয়ে শেখানে নিলাম এবং সবাই মিলে গল্প করতে করতে সময় রাত ১০টা তখন বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম।
উক্ত দিনে আমি সারা রাস্তায় যা দেখলাম, তাতে তেমন খারাপ কিছু চোখে পরেনি।
আর যেভাবে লোক জনের জটলা ছিলো তাতে জদি কোন মেয়ে বা ছেলে নিজে নিজের নিরাপত্তা দিতে না পারে তার সেখানে যাওয়া আর জটলার ভিতর প্রবেশ করা তা ইচ্ছাকৃত আক্রমনের স্বিকারের সামিল। আমরা সবাই জানি যেখানে লোকজনের জটলা থাকবে সেখানে জামেলা হবেই। ওই ভিকটিম মেয়ে গুলো অবশ্যই দেখেছে যে ওখানে অনেক লোক এবং সে একা অথবা তার কাছে তেমন কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। তারপরেও কিভাবে সে ভীর ঠেলে এগিয়ে গেলো? সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে যা ছিলো তা কিছু কিছু সিসিটিভি ক্যামেরা। পুলিশ যারা ছিলো তারা সকলের মতো উপভোগ করছিলো।
লাঞ্চিত হওয়া নারীগুলোকে আমি একধরণের বোকা বলবো। তাদের লাঞ্চিত করা লোকদের এতো লোকের ভীরে খুজে পাওয়াও অনেক কঠিন বিষয় হয়ে দাড়াবে।
যদিও কিছু নারীকে বিবস্র করা হয়েছে ওখানে, পরবর্তি যে কোন অনুষ্ঠানে যদি কোন এ ধরণের পরিস্তিতির স্বিকার হোন কোন নারী। তাহলে তারা অবশ্যই নিজ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিজেই দেবেন। পরনির্ভরশীলতা পরিহার করে একা একা চলতে শিখুন।
(আহাদ)