ঢাকা শহর বাস্ববেই একটি আজব শহর। এটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা জনবহুল শহরগুলির মধ্যে অন্যতম। বর্তমানে ঢাকা দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান সংস্কৃতি, শিক্ষা ও বাণিজ্যকেন্দ্র। এখানে ৩ কোটি লোকের বেসি বাস করে। বেসরকারি এক হিসেব বলছে ঢাকা শহরের প্রায় এক কোটি মানুষ প্রতিদিন কোন না কোন কাজে রাস্তায় বের হন। যাদের মধ্যে মাত্র ৪-৫শতাংশ মানুষ ব্যাবহার করেন ব্যাক্তিগত গাড়ি। আর তাদের দখলে থাকে নগরীর ৮০ শতাংশ রাস্তা। আর বাকি ৯৫ শতাংশ মানুষ ব্যাবহার করেন গণপরিবহন যাদের দখলে থাকে কিনা মাত্র ২০ শতাংশ রাস্তা। ২০১২ সালের নিবন্ধন অনুযায়ী ঢাকায় প্রায় ৩কোটি প্রাইভেট গাড়ি চলে আর অনিবন্ধিত প্রাইভেট গাড়ির কথা না হয় নাই বল্লাম। গণপরিবহণের সংখ্যা খুবই কম যার মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ১-১.৫০ কোটি লোকের দৈনন্দিন যাতায়াত। এত অল্প সংখ্যাক বাহনে এতবেসি সংখ্যাক জনগণের চলাফেরা বাস্ববেই খুব কঠিন। দৈনিক প্রতিযোগীতা ভিত্তিতে জীবন ও জীবিকার তাগিদে যানবাহনে যাতায়াত করতে হয় প্রতিটি মানুষকে।
প্রতিনিয়ত গ্রামের লোকজন যে করেই হোক ঢাকার উপর নির্ভরশীল হয়ে পরছে।
তার পরেও যদি থাকে সিটিং সার্ভিস নামের যানবাহন যেখানে নির্দিশ্ট সংখ্যাক লোকজন বেসি অর্থের মাধ্যমে যাতায়ত করবে। তাহলেতো দরিদ্র জনগোষ্টির ভোগান্তি আরো বাড়বে। সরকার বাস/মিনিবাসের ভাড়া কিঃমিঃ প্রতি নির্ধারণ করে দেওয়ার পরেও সিটিং সার্ভিসের নাম করে পরিবহন মালিকরা হাতিয়ে নিচ্ছে দেরগুন থেকে দ্বিগুন অর্থ। কিছুদিন পর সেই সিটিং সার্ভিসও হয়ে যায় লোকাল সার্ভিস। যা মরার উপর খাড়ার ঘাঁ। আমরাও অপ্রতুলতার কারণে সেই খাড়ার ঘা কেই মেনে নেই।
রাজধানীতে তুলনামূলক গণপরিবহন কমহওয়াতে জনগণ যতটাই ভোগান্তির স্বিকার তা আরো দ্বিগুন হয়ে দাড়ায় সিটিং সার্ভিসের কারণে।
কেননা যেখানে একটি সিটিং বাসে যদি ৫০ জন লোক যাতায়ত করতে পারে সেখানে একটি লোকাল বাসে ৭০ জন যাতায়ন করা সম্ভব। তার মানে যে সকল লোকজন যায়গার অভাবে বাসে উঠতে পারতোনা তারা লোকাল বাসে যায়গা করে নিতে পারছে। এভাবে ৫০ টি বাসে লোকাল সিস্টেম থাকলে অনেক লোকজন ভোগান্তি থেকে রেহাই পাচ্ছে।
সরকার পরিবহন মালিকদের শুবিধার্থে স্টুডেন্টদের হাফভাড়ার বিষয়ে আইন করে না দিলেও মৌখিকভাবে হাফ ভাড়ার করা বলে দিয়েছেন। কিন্তু সিটিং/স্পেসাল/কমস্টোপেজ নামধারী বাসগুলোতে স্টুডেন্ট সুনলেই মনেহয় আকাশ থেকে পরছে। কোন মতেই তারা এসকল নামধারী বাসগুলোতে হাফ ভাড়া দেয়ার সাহস পায়না স্টুডেন্টরা।
সাধারণত লোকাল বাসেও হাফভাড়ার কথা সুনলে সামান্য কিছু কম অথবা পারলে পুরোটাই নিয়ে নেয়। তার উপর শুক্র/শনিবারের অযুহাত তো আছেই। এখন আমার প্রশ্নঃ স্টুডেন্টরা কোন ধরণের গণপরিবহনে হাফ ভাড়া দেবে? স্টুডেন্টরা কি শুক্র/শনিবার বাসা থেকে বেরহবেনা? আর হলেই কি তারা চাকুরিজীবি হয়ে যান?
সব মিলিয়ে ঢাকা শহরের গণপরিবহনকে দ্রুত লোকাল পরিবহনে রুপান্তর করে গণপরিবহণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ, স্টুডেন্টদের ন্যায্য ভাড়া দেয়ার সুযোগ করে প্রাইভেট পরিবহণে নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করলে গণপরিবহনের ভোগান্তি অনেকটাই লাগব হবে বলে আমার বিশ্বাস।
আসুন আমরা সবাই একযোগে গণপরিবহণের লোকাল সিস্টেমটাকে স্বাগত যানাই এবং তা বাস্তবায়নে হাতে হাত মিলাই।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:২৬