সত্য বলার আর মিথ্যার প্রতিবাদ করার সাথে কোথায় জানি মেরুদন্ডের একটা সম্পর্ক রয়েছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে মানুষ বাঁচার জন্য সব করতে পারে। কিন্তু সেই পিঠ ঠেকে যাওয়াটা জেনুইন কিনা তা পরিমাপ করার মত কোন ডিভাইস এখনো আবিষ্কার হয়েছে কি না আমার জানা নেই। আপনি কিভাবে বুঝবেন যে কারো পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে ? পকেটমার, ছিঁচকে চোর, মলম পার্টির সদস্য, ঘুষখোর পুলিশ, দুর্নীতিবাজ সরকারি কর্মচারী যেই হোক না কেন সবার অপকর্মের পেছনেই দেখবেন তাদের জোরদার যুক্তি রয়েছে। পকেটমার, ছিঁচকে চোর আর মলম পার্টিকে জিগ্গেস করুন, বলবে-"পেটের দায়ে"; পুলিশ আর সরকারি কর্মচারীকে জিগ্গেস করুন, বলবে- "ঘুষ না নিয়ে বাঁচবো কিভাবে....সংসার চলেনা, বৌ-বাচ্চা নিয়ে দুবেলা খাবার জোটেনা"। ছোটোবেলা থেকে আমরা নিত্যনৈমিত্যিক কিছু দুর্নীতির সাথে পরিচিত হই, ফলস্বরুপ তা এমনভাবেই আমাদের মজ্জাগত হয়ে যায়। যেমন খুচরা মূল্য প্যাকেট এর গায়ে যাই লিখা থাকুক, পাড়ার মোড়ের ছোট্ট দোকানটিতে অবধারিত ভাবে তার দাম জিনিসভেদে ৫/১০ টাকা বেশীই হবে। টি এন্ড টির লাইনম্যান কে মাসোহারা না দিলে বাসার ল্যান্ড ফোনটিতে ডায়াল টোন থাকবে না নিশ্চিত। থানায় একটা জিডি করতে গেলে দারোগার পকেটে দেয়া লাগবে সিগারেটের প্যাকেট অথবা ক্যাশ টাকা। প্রাত্যহিক জীবনে অথবা নাটকে সিনেমায় দেখতে দেখতে একসময় এসব দুর্নীতি গুলোই কেমন করে জানি আমাদের মজ্জাগত হয়ে যায়। নীতি তে পরিনত হয়ে যায়। "পাখি সব করে রব...." শেখার সাথে সাথে আমাদের সন্তানরা এটাও শিখে ফেলে যে এই অদ্ভুত দেশটিতে অনিয়মই নিয়ম। আবার সেই দেয়ালের প্রসংগটি চলে আসে। মেরুদন্ড সোজা করে, সাদা কে সাদা আর কালো কে কালো আমরা যতদিন না বলবো, চোখের সামনে ঘটে যাওয়া ছোট ছোট অন্যায়ের প্রতিবাদ না করে যতদিন মুখ বুঁজে সহ্য করবো ততদিনই আমাদের তথাকথিত এই মধ্যবিত্ত মানসিকতা আমাদেরকে কেঁচো করে ফেলবে। আমাদের মজ্জাতেই বোধহয় কিছু একটা ঘাটতি রয়েছে। সত্যিকারের একটা অগ্নিস্ফুলিংগের অভাবে লক্ষ টন বিষ্ফোরক পড়ে থাকতে পারে নির্জীব জড় বস্তুর মত.......আর সত্যিকার একটা মেরুদন্ডী মানুষের অভাবেও সমাজ সংসার হয়ে যেতে পারে অথর্ব্য। আমরাই পারি আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের মেরুদন্ডটা যাতে আমাদের মত না হয় সে চেষ্টাটা একটু করে দেখতে। যারা করে দেখাতে পারবে, কথা বড় না হয়ে কাজে বড় হবে, আর আমাদের মত জুজুকে ভয় না পেয়ে জুজুকেই ভয় দেখাবে। আসুন, নিজের সন্তানটির সামনে একদিনের জন্য হলেও অন্যায়ের প্রতিবাদ করি, একদিনের জন্য হলেও তার মধ্যে একটা অগ্নিস্ফুলিংগের সৃষ্টি করি। একজন দুজন করে এরাই একদিন আমাদের সব জন্জাল সাফ করে মাথা উচু করে দাড়াবে। আমার খুব ইচ্ছা করে নিজের দেশটাকে অন্তত: মালয়েশিয়া অথবা সিংগাপুরের মত অবস্থায় দেখতে......আপনার কি করে ?
আলোচিত ব্লগ
ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)
ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
মামুনুলের মুক্তির খবরে কাল বৃষ্টি নেমেছিল
হেফাজত নেতা মামুনুল হক কারামুক্ত হওয়ায় তার অনুসারীদের মধ্যে খুশির জোয়ার বয়ে যাচ্ছে। কেউ কেউ তো বলল, তার মুক্তির খবরে কাল রাতে বৃষ্টি নেমেছিল। কিন্তু পিছিয়ে যাওয়ায় আজ গাজীপুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'
নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ
আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা
গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন