আমি যদি চরম হাদারাম হই, আর আমার সাথে যারা হাদারাম হয় সবাই এই হাদারামগিরির গুনকীর্তন পরস্পর করবে এটাই স্বাভাবিক। আমার মত হাদারামদের দ্বারা রচিত হাদারামগিরির গুণকীর্তনে লেখা বহু বই পড়ে হাদারাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হলেও প্রকৃতপক্ষে আমি বিখ্যাত হাদারাম ছাড়া কিছু নই ।
যারা বুদ্ধিমান তাদের চোখেই আমার হাদারামগিরি ধরা পড়ে । যখন তারা আমার হাস্যকর কর্মকান্ড দেখে হাসে আমি তাদের প্রতি চোটে যায় এবং সুযোগ পেলে এক হাত নিয়ে নেই । একজন পাগলের সমালোচক নিশ্চয়ই পাগল হয় না ।আপনি বোকা হলে একমাত্র আপনার মত আরেকজন বোকা বাদে সবাই আপনার সমালোচনা করবে । আপনার মত আরেকজন বোকাই শুধু আপনার সাথে তাল মিলিয়ে কথা বলবে ।
অতএব যিনি আপনার সমালোচনা করে তিনিই আপনার বোকামিকে আঙ্গুলি নির্দেশ করে দেখিয়ে দিতে পারে আপনার বোকামিত্ব । আপনি তখন নিজেকে সংশোধন করে বুদ্ধিমানদের কাতারে শামিল হওয়ার সুযোগ পাবেন। আর সমালোচককে শত্রু ভাবলে আপনি আপনার নিজের পায়েই কুড়াল মারলেন।
একজন বোকার বোকামি কর্মকান্ডের সমালেচানা যদি সংশোধনের উদ্দেশ্য না করে শুধু হাস্যরসিকতার উদ্দেশ্যও যদি করে থাকে তথাপিও তা আপনার জন্য কল্যাণকর । এক্ষেত্রে সমালোচকের সমালোচনার পদ্ধতি যদিও নিন্দনীয়।অতএব যিনি আপনার মতের পক্ষে কথা বলে তার কথা শোনা আপনার জন্য বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং যিনি আপনার সমালেচনা করেন তার কাছ থেকেই আপনার শেখার বহু কিছু আছে।
নিজের বুঝ নিজের নিজের কাছে তো সঠিক মনে হবেই ।যখনই আপনি মানতে পারবেন যে আপনার বুঝ আপনার কাছে যত সঠিক মনে হোক না কেন, মানুষ হিসাবে জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা হেতু আপনার বুঝ যে কোন সময় ভূল প্রমানিত হতে পারে,আর সে ভূল আপনার সমালোচকই ধরে দেবে। আপনার চিন্তা যদি ভূল হয় তা আপনার পক্ষে যে কথা বলে সেও তো ভুলের মধ্যে আছে। তার থেকে আপনি আর নতুন কি শিখবেন? সে যদি আপনাকে কিছু শেখায় তা আপনাকে আপনার বোকিমিত্ব বজায় রাখার কৌশল এবং বোকমিত্বকে টিকিয়ে রাখতে যে গোজামেলির আশ্রয় নিতে হবে তার চাতুরীপূর্ণ কিছু কথা ছাড়া আর কি?
সত্যের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট হল সমালোচনাকে স্বাগত জানানো । আলোচনা-সমালোচনার মাধ্যমেই সত্য মানুষের কাছে বেশি সুস্পষ্ট হয়। যদি কোন ধর্ম/দর্শন/মতবাদ সমালোচনা প্রতিরোধে এগিয়ে আসে, তাহলে সে ধর্ম/মতবাদ যে মিথ্যা তা বোঝার জন্য আর বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন হয় না।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে জুন, ২০১৬ রাত ১০:৫৪