প্রথমেই একটা কৌতুক বলি - মৃত্যুর পর জন এফ কেনেডি, ইন্দারা গান্ধী এবং বঙ্গবন্ধু ঈশ্বরের মুখোমুখি। প্রথমে কেনেডি ঈশ্বরের কাছে জানতে চাইলেন প্রভু আমাদের মহান আমেরিকা কবে দূনীর্তিমুক্ত হবে? ১০০ লাগবে ঈশ্বরের উত্তর। এবার ইন্দারা গান্ধীর প্রশ্ন- প্রভু আমাদের মহান ভারত কবে দূনীর্তিমুক্ত হবে? ২০০ বছর লাগবে ঈশ্বরের জবাব। জবাব শুনে নিরবে কাদঁতে লাগলো ইন্দিরা। এবার দুরু দুরু বুকে বঙ্গবন্ধু গেলেন ঈশ্বরের সামনে - প্রভু আমার সোনার বাংলা কবে দূনীর্তিমুক্ত হবে? প্রশ্ন শুনে স্বয়ং ঈশ্বরই হাউ মাউ করে কাদঁতে লাগলেন। হতচকিত বঙ্গবন্ধু ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করলেন - প্রভু আমি কি কোন অন্যায় করে ফেলেছি। - ওরে নারে, তোর প্রশ্ন শুনে কাদঁছি। কারন সোনার বাংলা যতদিনে দূর্নীতিমুক্ত হবে ততদিন আমি নিজেও বেচেঁ থাকবো না।
কৌতুক যদিও কৌতুকই, সত্যির লেশমাত্র নেই তবুও একথা অনস্বীকার্য যে এদেশে দূর্নীতির প্রকোপ এত মারাত্মকভাবে বিস্তৃত লাভ করেছে যে এখন এদেশে কোথায় দূর্নীতি হয় একথা জিজ্ঞেস না করে কোথায় দূনীর্তি হয় না একথা জিজ্ঞেস করাই যুক্তিযুক্ত। আমাদের পাশ্ববর্তীদেশ ভারতও দূর্নীতির উর্দ্ধে নয়।
কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক ভারতীয় অধ্যাপক নিজের দেশে বেড়াতে এসে সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতির বল্গাহীন বিচরণে বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি ভারতে এসে দেখলেন, সেখানে কোনো কাজই ঘুষ ছাড়া হচ্ছে না। সরকারি দপ্তরগুলোয় একজন নাগরিকের একটি সাধারণ সেবাও ঘুষ ছাড়া হচ্ছে না। এসব দেখে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তখন থেকেই তাঁর চিন্তা কিভাবে এই ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ সৃষ্টি করা যায়। নিজের ভাবনা থেকেই সৃষ্টি করলেন ফিফথ পিলার ইন্ডিয়া নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠন শূন্য টাকার নোট ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ শুরু করেন।
২০০৭ সাল থেকে ফিফথ পিলার ইন্ডিয়া এই শূন্য টাকার নোট সাধারণ মানুষকে বিলিয়ে আসছে। এই নোট সম্পর্কে বিজয় আনন্দ বলেন, এটি ঘুষকে ‘না’ বলার একটি চমত্কার ব্যবস্থা। কোনো সাধারণ নাগরিক কোনো দপ্তরে গিয়ে ঘুষের দাবির মুখে পড়লে এই নোট ঘুষ চাওয়া ব্যক্তির দিকে বাড়িয়ে দেবেন। এতে দুটো জিনিস হবে, ঘুষ যিনি চাচ্ছেন তাঁকে না বলা হবে, আবার তাঁকে কিছুটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলে বুঝিয়ে দেওয়া যাবে—তিনি যে দাবি করছেন, তা অযৌক্তিক ও অন্যায়।
এই শূন্য টাকার নোট একবার তামিলনাড়ুর এক সরকারি কর্মকর্তার মধ্যে দারুণ অপরাধ বোধের জন্ম দিয়েছিল বলে জানা যায়। তামিলনাড়ুর একটি গ্রামে বিদ্যুত্ সঞ্চালনের বিনিময়ে কারও কাছে বেশ ভালো অঙ্কের অর্থই দাবি করেছিলেন সেই কর্মকর্তা। যাঁর কাছে ঘুষের দাবি জানানো হয়, তিনি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গেই ফিফথ পিলার ইন্ডিয়ার মুদ্রিত শূন্য টাকার নোট সেই কর্মকর্তার দিকে বাড়িয়ে তাঁর দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। এতে সেই সরকারি কর্মকর্তা বিব্রত হন এবং অপরাধ বোধে আক্রান্ত হয়ে তাঁর সংগৃহীত সব ঘুষের টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছিলেন।
বিজয় আনন্দের মতে, এই শূন্য টাকার নোট দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের একটি চমত্কার অস্ত্র। তিনি মনে করেন, দুর্নীতি যারা করে, ঘুষ যারা নেয়, তাদের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ বা প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দেখা যায় না। তাই ওইসব দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোরের দুঃসাহসও বেড়ে যায়। এই শূন্য টাকার নোটের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজেরাও বুঝবে, তাদের কর্মকাণ্ডে জনগণও সোচ্চার।
শূন্য টাকার নোটের কোনো গাণিতিক মূল্য হয়তো নেই, কিন্তু এর নৈতিক মূল্য অনেক। এই নোট ইতিমধ্যেই ভারতে অসাধারণ সাড়া ফেলেছে। মানুষ মনে করছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই শূন্য টাকার নোট এক অনন্য শাণিত হাতিয়ার হিসেবেই দেখছে ভারতীয়রা।
আজ আমাদের বড় বেশী প্রয়োজন হয়ে পড়েছে শূন্য টাকার নোটের। যদিও জানি না এতে আমাদের দূনীর্তির কোন হেরফের হবে কিনা?
তথ্যসূত্র :
আলোচিত ব্লগ
জীবন চলবেই ... কারো জন্য থেমে থাকবে না
নাইমদের বাসার ঠিক সামনেই ছিল দোকানটা । দোকানের মাথার উপরে একটা সাইনবোর্ডে লেখা থাকতও ওয়ান টু নাইন্টি নাইন সপ ! তবে মূলত সেটা ছিল একটা ডিপার্টমেন্টাল স্টোর। প্রায়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন
যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশি নির্মমতা
সমগ্র যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসগুলোতে বিক্ষোভের ঝড় বইছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ কর্মসূচী অব্যাহত রয়েছে। একাধিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভ দমনের প্রচেষ্টা চালালেও তেমন সফল... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ ০১
নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন
হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়
সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।
হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন
আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই
সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন