somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এদেশেও শূন্য টাকার নোট চালু হোক

০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১০ রাত ৮:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথমেই একটা কৌতুক বলি - মৃত্যুর পর জন এফ কেনেডি, ইন্দারা গান্ধী এবং বঙ্গবন্ধু ঈশ্বরের মুখোমুখি। প্রথমে কেনেডি ঈশ্বরের কাছে জানতে চাইলেন প্রভু আমাদের মহান আমেরিকা কবে দূনীর্তিমুক্ত হবে? ১০০ লাগবে ঈশ্বরের উত্তর। এবার ইন্দারা গান্ধীর প্রশ্ন- প্রভু আমাদের মহান ভারত কবে দূনীর্তিমুক্ত হবে? ২০০ বছর লাগবে ঈশ্বরের জবাব। জবাব শুনে নিরবে কাদঁতে লাগলো ইন্দিরা। এবার দুরু দুরু বুকে বঙ্গবন্ধু গেলেন ঈশ্বরের সামনে - প্রভু আমার সোনার বাংলা কবে দূনীর্তিমুক্ত হবে? প্রশ্ন শুনে স্বয়ং ঈশ্বরই হাউ মাউ করে কাদঁতে লাগলেন। হতচকিত বঙ্গবন্ধু ঈশ্বরকে জিজ্ঞেস করলেন - প্রভু আমি কি কোন অন্যায় করে ফেলেছি। - ওরে নারে, তোর প্রশ্ন শুনে কাদঁছি। কারন সোনার বাংলা যতদিনে দূর্নীতিমুক্ত হবে ততদিন আমি নিজেও বেচেঁ থাকবো না।

কৌতুক যদিও কৌতুকই, সত্যির লেশমাত্র নেই তবুও একথা অনস্বীকার্য যে এদেশে দূর্নীতির প্রকোপ এত মারাত্মকভাবে বিস্তৃত লাভ করেছে যে এখন এদেশে কোথায় দূর্নীতি হয় একথা জিজ্ঞেস না করে কোথায় দূনীর্তি হয় না একথা জিজ্ঞেস করাই যুক্তিযুক্ত। আমাদের পাশ্ববর্তীদেশ ভারতও দূর্নীতির উর্দ্ধে নয়।



কয়েক বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী এক ভারতীয় অধ্যাপক নিজের দেশে বেড়াতে এসে সমাজের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতির বল্গাহীন বিচরণে বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। তিনি ভারতে এসে দেখলেন, সেখানে কোনো কাজই ঘুষ ছাড়া হচ্ছে না। সরকারি দপ্তরগুলোয় একজন নাগরিকের একটি সাধারণ সেবাও ঘুষ ছাড়া হচ্ছে না। এসব দেখে তিনি চিন্তিত হয়ে পড়লেন। তখন থেকেই তাঁর চিন্তা কিভাবে এই ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ সৃষ্টি করা যায়। নিজের ভাবনা থেকেই সৃষ্টি করলেন ফিফথ পিলার ইন্ডিয়া নামের একটি সংগঠন। এই সংগঠন শূন্য টাকার নোট ছাপিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিতরণ শুরু করেন।
২০০৭ সাল থেকে ফিফথ পিলার ইন্ডিয়া এই শূন্য টাকার নোট সাধারণ মানুষকে বিলিয়ে আসছে। এই নোট সম্পর্কে বিজয় আনন্দ বলেন, এটি ঘুষকে ‘না’ বলার একটি চমত্কার ব্যবস্থা। কোনো সাধারণ নাগরিক কোনো দপ্তরে গিয়ে ঘুষের দাবির মুখে পড়লে এই নোট ঘুষ চাওয়া ব্যক্তির দিকে বাড়িয়ে দেবেন। এতে দুটো জিনিস হবে, ঘুষ যিনি চাচ্ছেন তাঁকে না বলা হবে, আবার তাঁকে কিছুটা অপ্রস্তুত অবস্থায় ফেলে বুঝিয়ে দেওয়া যাবে—তিনি যে দাবি করছেন, তা অযৌক্তিক ও অন্যায়।
এই শূন্য টাকার নোট একবার তামিলনাড়ুর এক সরকারি কর্মকর্তার মধ্যে দারুণ অপরাধ বোধের জন্ম দিয়েছিল বলে জানা যায়। তামিলনাড়ুর একটি গ্রামে বিদ্যুত্ সঞ্চালনের বিনিময়ে কারও কাছে বেশ ভালো অঙ্কের অর্থই দাবি করেছিলেন সেই কর্মকর্তা। যাঁর কাছে ঘুষের দাবি জানানো হয়, তিনি অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গেই ফিফথ পিলার ইন্ডিয়ার মুদ্রিত শূন্য টাকার নোট সেই কর্মকর্তার দিকে বাড়িয়ে তাঁর দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। এতে সেই সরকারি কর্মকর্তা বিব্রত হন এবং অপরাধ বোধে আক্রান্ত হয়ে তাঁর সংগৃহীত সব ঘুষের টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছিলেন।
বিজয় আনন্দের মতে, এই শূন্য টাকার নোট দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের একটি চমত্কার অস্ত্র। তিনি মনে করেন, দুর্নীতি যারা করে, ঘুষ যারা নেয়, তাদের এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিরোধ বা প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দেখা যায় না। তাই ওইসব দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোরের দুঃসাহসও বেড়ে যায়। এই শূন্য টাকার নোটের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজেরাও বুঝবে, তাদের কর্মকাণ্ডে জনগণও সোচ্চার।
শূন্য টাকার নোটের কোনো গাণিতিক মূল্য হয়তো নেই, কিন্তু এর নৈতিক মূল্য অনেক। এই নোট ইতিমধ্যেই ভারতে অসাধারণ সাড়া ফেলেছে। মানুষ মনে করছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে এই শূন্য টাকার নোট এক অনন্য শাণিত হাতিয়ার হিসেবেই দেখছে ভারতীয়রা।

আজ আমাদের বড় বেশী প্রয়োজন হয়ে পড়েছে শূন্য টাকার নোটের। যদিও জানি না এতে আমাদের দূনীর্তির কোন হেরফের হবে কিনা?

তথ্যসূত্র :
১২টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=হিংসা যে পুষো মনে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৫৮


হাদী হাদী করে সবাই- ভালোবাসে হাদীরে,
হিংসায় পুড়ো - কোন গাধা গাধিরে,
জ্বলে পুড়ে ছাই হও, বল হাদী কেডা রে,
হাদী ছিল যোদ্ধা, সাহসী বেডা রে।

কত কও বদনাম, হাদী নাকি জঙ্গি,
ভেংচিয়ে রাগ মুখে,... ...বাকিটুকু পড়ুন

গণমাধ্যম আক্রমণ: হাটে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন নূরুল কবীর ও নাহিদ ইসলাম !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:০৫


জুলাই গণঅভ্যুত্থানের রক্তস্নাত পথ পেরিয়ে আমরা যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলাম, সাম্প্রতিক মব ভায়োলেন্স এবং গণমাধ্যমের ওপর আক্রমণ সেই স্বপ্নকে এক গভীর সংকটের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নিউ এজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৪৯

রিকশাওয়ালাদের দেশে রাজনীতি

সবাই যখন ওসমান হাদিকে নিয়ে রিকশাওয়ালাদের মহাকাব্য শেয়ার করছে, তখন ভাবলাম—আমার অভিজ্ঞতাটাও দলিল হিসেবে রেখে যাই। ভবিষ্যতে কেউ যদি জানতে চায়, এই দেশটা কীভাবে চলে—তখন কাজে লাগবে।

রিকশায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিএনপিকেই নির্ধারণ করতে হবে তারা কোন পথে হাটবে?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:০৫




অতি সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমানের বক্তব্য ও বিএনপির অন্যান্য নেতাদের বক্তব্যের মধ্যে ইদানীং আওয়ামীসুরের অনুরণন পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিএনপি এখন জামাতের মধ্যে ৭১ এর অপকর্ম খুঁজে পাচ্ছে! বিএনপি যখন জোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী বিপ্লবীর মৃত্যু নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:৩৭



শরিফ ওসমান হাদি। তার হাদির অবশ্য মৃত্যুভয় ছিল না। তিনি বিভিন্ন সভা-সমাবেশ, আলোচনা ও সাক্ষাৎকারে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি অনেকবার তার অস্বাভাবিক মৃত্যুর কথা বলেছেন। আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতবিরোধী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×