somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাগ্রত হউক মানবিক বিবেক ।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি সমাজের কতটা মূল্যবোধের অবক্ষয় হলে প্রতিদিন ই সংবাদের শিরোনাম হিসেবে পেতে হয় ধর্ষনের খবর । মানুষরুপী পশু গুলির যৌন পিপাসা কতটা নিলজ্জ হলে লোকলজ্জা মানবিকতা সব ভুলে গিয়ে একটি আসহায় মানুষকে ধর্ষন গনধর্ষন বা ধর্ষনের পরে খুন করতে পারে ।ধর্ষকের কাছে ধর্ষণের ইচ্ছা কতটা অদম্য , ধর্ষণের উত্তেজনা কতটা তৃপ্তিদায়ক যে ধর্ষনের অভিলাশ সম্পর্কের কথা ও ভুলিয়েদেয় । ধর্ষকের নষ্ট বিবেক পুরো সমাজকেই নষ্টকরে দেয় । যখন দেখি একটি তিন বছরের শিশু পঞ্চাশোর্ধ করো দ্বারা ধর্ষনের শিকার কিংবা পিতা কতৃক তার দশ বছরের মেয়ে ধর্ষনের শিকার তখন নিজের ভাষা নিজেই হারিয়ে ফেলি । হয়তো অনেকেই ভাববেন আমি তরা কথা বলছি যে নাকি সেনাবাহিনীতে চাকুরী শেষ করে নিজের স্ত্রীকে তালাক দিয়ে সম্প্রতি তার নিজ মেয়েকে স্কুলে নেয়ার কথা বলে নিজ গাড়ীতেই ধর্ষন করেছে অভিযোগ উঠেছে । না আমি শুধু মাত্র তার কথা বলছি না আজ আমাদের সমাজে যে এমন কত মানুষ রুপী পশু আছে যার কাছে আত্মীয় সম্পর্ক সব কিছুই মুল্যহীন ।বিকৃত যৌন লালসাই যেন ওদের কাছে জীবনের সব কিছু । তবে বিকৃতমনস্ক এমন মানুষদের দিয়ে তো আর সব মানুষকে বিচার করা ঠিক হবে না । বাস্তবে এটাই সত্য যে পিতা ই তার সন্তানের নিরাপদ আশ্রয় ।প্রত্যেক পিতাই তার জীবন বিসর্জন দিয়ে নিজ সন্তানের মান ইজ্জত রক্ষা করেন । মানুষ ই মানুষে প্রয়োজনে এগিয়ে আসে । অর্থাৎ জন্ম থেকে মৃত্যু জীবনে প্রতিটি ক্ষেত্রেই একজন মানুষকে অন্য মানুষের উপর নির্ভর করতে হয় ।

মাঝে মাঝে এই ধর্ষণকে ঘিরে আমাদের সমাজ নানান বিকৃত রুপধারন করে । যেমন ধরা যাক সম্প্রতি আলোচনায় আসা সাবেক ঐ সেনাকর্মকর্তার কথা । নিজ মেয়েকে ধর্ষনকরেছেন এমন অভিযোগ এনেছেন ঐ সাবেক সেনাকর্মকর্তার সাবেক স্ত্রী অর্থাৎ মেয়েটির মা । মেয়েকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) গিয়ে মেয়ের শারীরিক পরীক্ষার পর ডাক্তার যখন নিশ্চিত হন যে মেয়েটি ধর্ষনের শিকার হয়েছেন তখন ই মেয়েটির মা অর্থাৎ অভিযুক্ত ঐ সাবেক সেনাকর্মকর্তার স্ত্রী রাজধানীর রমনা থানায় মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে তার বাবার বিরুদ্ধে মামলা করেন ।এই বাবা মেয়েকে আসলেই ধর্ষণ করেছেন কি না, তা তদন্তের পর আইনের আওতায় নির্ধারিত হবে।তবে আমাদের কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিভিন্ন ভাবে ঐ শিশুটির বাবা ও মায়ের চরিত্র হননের জন্য আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছে। কিছু কিছু সংবাদ মাধ্যমের সাংবাদিক ঘটনার অভিযোগের পরে মেয়েটির মাকে এমন ভাবে প্রশ্নমুখর করে তুলেছেন যাতে করে ভদ্র মহিলা নিজেই শেষ পর্যন্ত বিব্রতকর অবস্হার মধ্য পরেন । সংবাদিকরা শিশুটির মাকে তার পিতার নাম জানার জন্য বার বার যখন নানা ভাবে তাগিদ দিচ্ছিল তখন মেয়েটির মা তার সাবেক স্বামীর নাম-পরিচয় না দিয়ে বলতে বাধ্য হন আপনারা এমনিতেই জেনে যাবেন।

ওখানে উপস্হিত সাংবাদিক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা ঐ ঘটনা নিয়ে নানান ভাবে আলোচনা ও সমালোচনা করেছেন তারা কি একটি বার ভাবেনি যে ঐ শিশুটির পিতা ও মায়ের পরিচয়ের সঙ্গে তার পরিচয় পুরোপুরি জড়িত ? অনেকেই শিশুটির পিতার পক্ষনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম গড়ম করে ফেলেছেন । অনেকেই বলছেন ,এই মা তো স্বামীকে তালাক দিয়েছেন। এই মায়ের নামে অনেক খারাপ কথা আছে। এই মা সাবেক স্বামীকে ফাঁসানোর জন্য মেয়েকে দিয়ে ধর্ষণের নাটক সাজিয়েছেন এ ধরনের অনেক বক্তব্যে ভরে গেছে একেকজনের ফেসবুকের ওয়াল। অনেকে সরাসরিই বলছেন, এই মা অন্য কাউকে দিয়ে মেয়েকে ধর্ষণ করিয়ে সাবেক স্বামীর নামে অভিযোগ করছেন। এই মা তো আগেও সাবেক স্বামীর নামে কয়েকটা মামলা করেছেন, তাই এবারও মামলা সাজাতে পারেন। আবার অনেকে বিচারকের আসনে বসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েটির পিতার নানান ছবি দিয়ে বলছেন এই সেই বাবা, যে তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করেছেন।এই পশুরুপী বাবার শাস্তি মৃত্যুদন্ড ছাড়া আর কি হতে পারে ইত্যাদি ইত্যাদি । সত্যিকারে আমরা যারা এই ঘটনা নিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে শিশু মেয়েটির বাবা ও মায়ের পরিচর প্রকাশ করে পক্ষান্তরে মেয়েটির পরিচয় প্রকাশ করেছি তারা কি একটি বার ভেবেছি এই ঘটনায় মেয়েটির ভবিষ্যৎ কোথায় নিয়ে দাড় করাবে ? মেয়েটি এই সমাজেই বড় হবে, কিন্তু সে বাবার মাধ্যমে ধর্ষণের শিকার, তা কিন্তু পরিচিতজনেরা ভুলতে পারবেন না। বিভিন্ন কায়দাকানুন করে মেয়েটিকে কেউ কেউ সেই স্মৃতি মনে করিয়ে দিতেও ভুলবেন না।আবার এই বাবা মেয়েকে আসলেই ধর্ষণ করেছেন কি না, তা তদন্তের পর আইনের আওতায় নির্ধারিত হবে। যদি এমনটি হয় যে উনি কোন না কোন ভাবে ষড়যন্ত্রের শিকার তাহলে এমন মিথ্যা অপবাদে তার বর্তমান মানষিকতা কোথায় গিয়ে দাড়িয়েছে সেটা হয়তো কারো ই বোধগম্য নয় এবং ভবিষ্যতে সমাজ ই বা তাকে কি ভাবে গ্রহন করবে সেটা ও ভাবনার বিষয় ।আর আমরা যারা ঐ শিশু মেয়েটির মায়ের চরিত্র নিয়ে টানা হেঁচরা করছি ঐ ভদ্র মহিলার ই বা আমাদের সমাজে সামাজিক অবস্হান কোথায় এনে দাড় করাবে ? আমারা মাঝে মাঝে আবেগের কাছে অনেক বাস্তবতাই ভুলে যাই আর এই আবেগঘন মুহুর্ত এই অনেকের জন্য ভবিষ্যতের মহাশত্রু হয়ে উপস্হিত হয় । আমাদের সমাজ তথা রাষ্ট্র ধর্ষকের কালো থাবা থেকে মুক্তি পাবে । প্রতিটি মানুষের ভিতর মানবিক বিবেক শুভ বুদ্ধি জগ্রত হবে এমনটি প্রতিটি বিবেকবান মানুষে স্বপ্ন ।


সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ রাত ১২:৩৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×