“কিরে মজা লাগে নাই?”
“না লাগসেতো।”
“তাইলে মেন্দা মাইরা আসস কেন? দরকার হইলে আবার লাগা।”
“আবার লাগামু!”
“হ লাগা।”
মেয়েটা ততক্ষণে বুঝে গেছে শব্দ করে লাভ নেই। এখান থেকে সে আর বের হতে পারবে না। এরই মধ্যে চারজন লোক তার সাথে জোরপূর্বক যৌনকর্ম করেছে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় সেলোয়ার কামিজ পড়ে বের হয়েছিলো। এখন তার জামাটা গলার কাছে কুচি করা, বক্ষবন্ধনীটা ছিড়ে ফেলা হয়েছে। পায়জামাটাও যায়গা মত নেই, ওটা হাটুর নিচে। চারজন লোকের একজন এগিয়ে আসছে ওর দিকে আবারো মনে হয় জোরপূর্বক যৌনকর্ম করবে। লোকটা তার যৌনাঙ্গ বের করলো। একটু আগেও এই লোকগুলোর সাথে ধস্তাধস্তি করেছিলো এখন আর ওর শক্তি নেই। শরীরের শিরায় শিরায় রন্ধ্রে রন্ধ্রে ব্যাথা। এখন সে প্রচন্ড ক্লান্ত।
প্রথম লোকটা যখন ওর সাথে যৌনকর্মে লিপ্ত আরেকটা লোক তখন ওর হাতের ওপর বসে ছিলো। তারপরও নড়াচড়া করছিলো দেখে লোকটা তাকে কষে থাপ্পড় লাগিয়ে দেয়। দ্বিতীয় লোকটা ওর সেলোয়ারটা তুলে বক্ষবন্ধনীটা টান দিয়ে ছিড়ে সেটা দিয়ে তার হাত বেধে তার উপর বসে পড়ে। প্রথম লোকটা হাতের কাছে একটা ইটের ব্লক পেয়ে সেটা দিয়ে ওর পায়ের গোড়ালিতে বেশ কয়েকটা বাড়ি মারে। ও ককিয়ে উঠে। হাতের উপর বসে থাকা লোকটা কে কল করতে দেখে ও। প্রথম লোকটার মনে হয় শেষ হয়ে গেছে সে উঠে পড়েছে। এরই মধ্যে দুইজন লোক এসে পড়ে তাদের হাতে লাঠি। হাতের উপর বসে থাকা লোকটা লাঠি নিয়ে ওকে মারতে শুরু করে। ও কণ্ঠচিরে বেরিয়া আসে আর্তচিতকার। লোকটা বলতে থাকে,
“কাঠাল কিন্তু কিলায়া পাকাইতে হয়।”
কাদতে কাদতে ওর গলা শুকিয়ে আসে, ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাদতে থাকে। পরে লোকগুলোর একজনকে ভিতু দেখায়। আরেকজন বলে,
“আরে ডরাইস না মজা লইতে আইসস মজা লইবি, ল স্টিক টান।”
ভয় পাওয়া লোকটাকে একটা কুচকানো সিগারেট প্যাকেট থেকে বের করে এগিয়ে দেয়। সিগারেটে আগুন ধরাতেই উৎকট গন্ধ এসে নাকে লাগে ওর। হঠাত ব্যাথা লাগায় ককিয়ে উঠে ও। তখন সিগারেট টানতে থাকা লোকটা এগিয়ে এসে ওর মুখে লাথি বসিয়ে দেয়। নাক থেকে রক্ত বের হওয়া শুরু করে। দ্বিতীয় লোকটা হঠাত কেপে উঠে ওর বুকের উপর মাথা রেখে বলে,
“নারে তোরে বউ করা উচিত আছিলো।”
ওকে লাথি মারা লোকটা এবার এগিয়ে এসে ওর বুকে পিঠে ঘুসাতে শুরু করে। কিছুক্ষণ পর লোকটা হাপাতে হাপাতে বলে,
“আওয়াজ করলে মাইরা ফালামু।”
ও ভাবতে থাকে মেরে ফেলুক তবু এই খেলা বন্ধ করুক। লোকটা এবার ওর সাথে যৌনকর্ম শুরু করে। ওর মুখ দিয়ে আওয়াজ বের হলেই থাপ্পড় মারছে। ওর মুখের মাংসপিন্ডের দপ দপ আওয়াজ ও শুনতে পারছে। কানের ভিতর টা ভেজা ভেজা লাগছে। মনে হয় রক্ত পড়ছে। ও আল্লাহকে ডাকছে, বিনতি করছে।
তৃতীয় লোকটার শেষ হলে বাকি থাকা লোকটা শুরু করলো। হালকা চাদের আলোয় দেখলো প্রথম লোকটার হাতে একটা বোতল। দাঁড়িয়ে থাকা তিনজন পালা করে খেলো। তৃতীয় লোকটা বোতলটা ওর মুখের কাছে এনে বললো,
“খা জোর পাবি।”
বলে ওর মুখে বোতলটা কাত করে কিছু তরল ঢেলে দিলো। কিছু গড়িয়ে নিচে পড়ে গেলো কিছু ওর নাকে ঢুকে গেলো। নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য মুখ খুললে, লোকটা তার মুখে বোতলের তরল ঢেলে দিলো। তরলটার তিক্ত স্বাদ আর উৎকট গন্ধ সত্ত্বেও নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য ও গিলে ফেললো। বুক জলতে শুরু করলো। পেট উগরে বমি এলো। তৃতীয় লোকটা বোতল দিয়ে ওর মুখে বাড়ি মারলো। মুখ যায়গায় যায়গায় কেটে গেল। ও শরীরের সব শক্তি এক করে উঠে পড়তে চাইলো। হাতের উপর বসে থাকা লোকটা বেসামাল হয়ে গেল। চতুর্থ লোকটা বিরক্ত হয়ে উঠে পড়লো। এবার সবাই মিলে শুরু করলো পিটানো। ও বুঝতে পারলো, এই লোকগুলো কোন অন্যায় করছে না, বরং এদের বাধা দিয়ে সে অপরাধ করেছে। ও আল্লাহকে ডেকে যায়। ও শরীরটা ছেড়ে দিচ্ছে আর সংগ্রাম করতে পারছে না। ও থেমে যায়।
চতুর্থ লোকটা আবার শুরু করে। কিছুক্ষণ পরে লোকটার শেষ হয়। তৃতীয় লোকটাকে মনমরা হয়ে থাকতে দেখে তাকে আবার যৌনকর্মে লিপ্ত হতে বলে।
শুরু হলো আবার, সে চুপ করে থাকে। নাক দিয়ে, কান দিয়ে, মুখ দিয়ে অনবরত রক্ত ঝড়ে পড়ে। ওর হঠাত মনে পড়ে, আগামীকাল ছোট ভাইটার জন্মদিন ওর জন্য কেকটা কেনা হলো না। আগামী সপ্তাহে মামার বিয়ে। মায়ের কাছে শাড়ি কেনার টাকাটা পড়ে আছে এখনো কেনা হলো না। ও যেই ছেলেটাকে পড়ায় আগামী মাসে ওর পরীক্ষা অথচ ইংরেজীর সিলেবাসটা পুরোই বাকি। তার উপর এখন দশটার বেশি বাজে নিশ্চয় আব্বু এখন আম্মুর সাথে ওর দেরি হওয়া নিয়ে ঝগড়া করছে। এতগুলো দায়িত্ব তার মাথায় কে পালন করবে এখন এগুলো। হঠাত ওর নিজেকে চিন্তা মুক্ত লাগলো। ও মনে মনে সব দায়িত্ব আল্লাহকে বুঝিয়ে দিচ্ছে। সময় যত যাচ্ছে চোখের পাতা ভারী হচ্ছে। আবছা আলোয় দেখছে লোকগুলো ওকে ঘিরে দাঁড়িয়ে হাসছে। হঠাত একজন বলে,
“ব্যাপারতো ভালো ঠেকে না। চল কাইটা পড়ি”
একজন ওর শরীরে লাথি দেয়। আরেকজন থুতু মেরে বলে,
“খানকি মাগী মজাটাই নষ্ট করে দিসে।”
ওর অনেক ঘুম পাচ্ছে, দূর থেকে কেউ ওকে ডাকছে।
…………পরদিন কিছু মানুষ একটা জীবনহিন শরীর খুজে পায়।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই আগস্ট, ২০১৬ বিকাল ৪:০৭