somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

Tsuritama Anime Review

০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



জনরাঃ কমেডি, স্লাইস অফ লাইফ, স্পোর্টস, সাই-ফাই

“Even if the world ends tomorrow, I just want to fish!”

আচ্ছা, আপনারা কেউ কখনো বড়শি দিয়ে মাছ ধরেছেন? কেমন লাগে ব্যাপারটা? কাঠির গায়ে সুতো বেঁধে পানিতে টোপ ফেলে চুপ করে বসে বোরিং সময় কাটানোর মাঝে কি এমন থাকতে পারে, যা নিয়ে হারু আর কোকো এত হাইপড? কিংবা বড়শিতে মাছ গাঁথার পর সেটাকে খেলিয়ে ডাঙায় তোলা কি এমন কঠিন কাজ, যার জন্যে নাতসুকিকে “প্রিন্স” উপাধি দেয়া হয়েছে? কি এমন রয়েছে এই মাছধরাতে, যে দুনিয়া উল্টে গেলেও কিছু যায় আসে না??

কিংবা মনে করুন, আপনি একজন ট্রান্সফার স্টুডেন্ট। কিন্তু অনেক লোকজনের সামনে আপনি অত্যন্ত অকওয়ার্ড ফিল করেন। তাও কষ্টেসৃষ্টে ফার্স্ট ইমপ্রেশনটা ঠিক রাখার জন্য অনেক প্রস্তুতি নিয়ে ক্লাসে গেলেন। বুকের ভেতর হাতুড়ি পেটানোর শব্দ শুনতে শুনতে আপনি স্পীচ দেয়া শেষ করে কেবল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন, এমন সময় হঠাৎ কোত্থেকে এসে উদয় হল রাস্তায় দেখা হওয়া সেলফ প্রোক্লেইমড এলিয়েন ছেলেটি! কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিজেকে আবিষ্কার করলেন পুরো ক্লাসের সামনে, হাত নেড়ে এনোশিমা ডান্স করা অবস্থায়!! গেল আপনার সাধের ফার্স্ট ইম্প্রেশন!

অথবা, সবসময় একটা হাঁস বগলদাবা করে ঘুরে বেড়ানো ইয়ামাদার আসল উদ্দেশ্যটা কি? হারুর ব্যাপারে সে এত সতর্ক কেন? ইউকি আর নাতসুকিকে জোর করে মাছ ধরতে নিয়ে যাওয়ার মত পাগলামি ছাড়া তো আর তেমন কিছুই করেনা সে। কিংবা হারুই বা সমুদ্রে মাছ ধরতে এত আগ্রহী কেন? এনোশিমার প্রাচীন লোকগাঁথার সাথে কি ওদের কোন সম্পর্ক আছে?



অ্যানিমেটার শুরুটা এমনই ওলট পালট মার্কা, কোথা থেকে কি হচ্ছে আমি কিছু ঠাহর করে উঠতে পারছিলাম না। মাথায় মাছের জার নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সেলফ প্রোক্লেইমড এলিয়েন হারুর কাজকর্ম দেখে হাসি পাচ্ছিল, আবার ওর সরলতা দেখে মায়াও লাগছিল। কিন্তু যত এগোলাম, তত যেন কাহিনীটা আমাকে ভেতরে টানতে থাকল! ভেবেছিলাম কি, আর শেষে হলটা কি! সিম্পল একটা মনকে খুশি করে দেয়া হাসিখুশি স্লাইস অফ লাইফ অ্যানিমে হঠাৎ হয়ে গেল একটি জমজমাট রূদ্ধশ্বাস সাইফাই অ্যানিমে! এবং সবচেয়ে অবাক করা ব্যাপারটি হল, এতকিছুর মধ্যেও অ্যানিমেটা আমার মুখ থেকে একবারের জন্যেও হাসিটা মুছতে দেয়নি!

অ্যানিমেটার আর্টওয়ার্ক অতিরিক্ত সুন্দর। উজ্জ্বল, ঝলমলে রঙ ব্যবহার করে এনোশিমা নামক সমুদ্র উপকূলের শহরটিকে খুব মনোমুগ্ধকর উপায়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে; দেখে যে কারও মনে হতে বাধ্য, একবার যদি এনোশিমায় যেতে পারতাম! ক্যারেক্টার ডিজাইন বেশ উদ্ভট, আর এই উদ্ভট ডিজাইনের কারণেই যেন অ্যানিমেটা প্রাণ পেয়েছে। নাতসুকির মাছধরা বিষয়ক জ্ঞান, ইউকি ও হারুর এ বিষয়ে অজ্ঞানতা, শুধুমাত্র এই ফিশিং এর কারণে চারটা ছেলের জীবনে পরিবর্তন, তাদের মানুষ হিসেবে পরিণত হয়ে উঠতে দেখলে নিজের অজান্তেই তাদেরকে আপন মনে হতে থাকবে!

অ্যানিমেটার ওএসটি খুবই চমৎকার, ওপেনিং এন্ডিং একটাও স্কিপ করার মত না। আর ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক প্রতিটা সিচুয়েশনে পার্ফেক্টভাবে ব্যবহৃত হয়েছে। মাছধরা থেকে শুরু করে ক্লাইম্যাক্স, সবখানেই নিখুঁত আবহ তৈরি করেছে এর ওএসটি।

সবমিলিয়ে অ্যানিমেটা আবার খুবই ভাল লেগেছে, ভিন্নধাঁচের স্লাইস অফ লাইফ ও সাই-ফাইয়ের মিশ্রণ দেখে আরও বেশি ভাল লেগেছে। অনেকদিন পরেও তাপিওকার “ডাক” মনে করে আমি হাসব, নাতসুকি, ইউকি, হারু আর ইয়ামাদার বন্ধুত্বের কথা মনে করে আনন্দ পাব। আর ক্লাইম্যাক্সের সেই লোম খাড়া করা মূহুর্তগুলো তো কখনোই পুরনো হবার নয়!

সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:২৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×