somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তুরগুত আল্পের সংক্ষিপ্ত জীবনী

২০ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:২৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পরিচয়ঃ- নাম তুরগত বে, তুর্কি ইতিহাসের কয়েকটি বিবরণে তারগুত আল্প নামে পরিচিত। তিনি কুড়াল চালনায় সবচেয়ে পারদর্শী ছিলেন, সুঠাম দেহী, শক্তিশালী বাহু, সাহসী ও বিশ্বস্ত যুদ্ধাদের মধ্যে একজন ছিলেন। আর্তুগ্রুল গাজীর বিশ্বস্ত বন্ধু ( সহোদর ) হিসেবে সবসময়ই পাশে থাকতেন। এবং তার প্রতিটি কথা গুলো তিনি মেনে চলতেন। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাতে হাত রেখে তিনি আর্তুগ্রুল গাজীর সঙ্গে যুদ্ধ করতেন। তাছাড়া, তিনি তার ছেলে এবং উসমান গাজীর সঙ্গে যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করে কাফেরদের কয়েকটি দূর্গ জয় করেছিলেন। উসমান গাজীর ছেলে উরহান গাজীকেও তিনি যথেষ্ট সহযোগিতা করেছিলেন। এই বীর যুদ্ধা, যিনি উসমানীয়া সাম্রাজ্যের প্রাথমিক গাজী বা যুদ্ধা হিসেবে পরিচিত।
জীবনীঃ - তুর্কি ইতিহাসের বিবরণ অনুযায়ী তুরগুত আল্প প্রায় ১২০০ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম গ্রহণ করেছিলেন।
তিনি ছিলেন তুর্কি ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং খ্যাতিমান যোদ্ধাদের একজন। আর্তুগ্রুল গাজীর ঘনিষ্ঠ বিশ্বাসী, আজীবন পাশে থাকা ব্যাক্তি, এবং রক্তের ভাই।
সেইসাথে তার সেরা অনুসারী এবং সমর্থক, খুব স্মার্ট এবং সক্ষম মানুষ ছিলেন। যদিও তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে খুব কম তথ্য জানা যায়, তবে এটি খুব সুপরিচিত যে, "তিনি কেবল একটি ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বই নন, বরং একজন কিংবদন্তী সাহসী ব্যক্তি যিনি লোক বর্ণনায় উপস্থিত হন"।



এইসবের পাশাপাশি, তার যোদ্ধের উদ্যোগ এবং মহৎ কর্মকান্ড গুলো প্রথম উসমানীয় ইতিহাসে এবং কিছু বাইজেন্টাইন ইতিহাসে ( সুত্রে) স্বযত্নে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। তিনি ৩৫ বছর বয়সে আর্তুগ্রুল'বে-কে মোঙ্গল বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা করেছিলেন, নিজের জীবনকে তুচ্ছ ভাবতেন যখন যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করতে যেতেন।

বৈবাহিক জীবনঃ- তুরগুত আল্পের বৈবাহিক জীবন নিয়ে তুর্কির ইতিহাসে মতভেদ রয়েছে। গবেষক ও ইতিহাসবিদ গণের মতে তিনি দুইটি বিয়ে করেছিলেন।
উস্তার দেলিদেমিরের সুন্দরী কন্যা আইকিস হাতুনকে বিয়ে করেন। আইকিস শহীদ হওয়ার পর তিনি আলিয়ার'বের বোন আসলিহান হাতুনকে বিয়ে করেন এবং সেখানেই আর্তুগ্রুল গাজীর কথা রক্ষার্থে বেইমের ( প্রধানের) দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

উসমান গাজির শাসনামলে তুরগুত আল্পের বীরত্বঃ
আর্তুগ্রুল গাজীর মৃত্যুর পর, তুরগুত আল্প প্রধান সমর্থক হয়ে ওসমানের ঘনিষ্ঠ আত্মবিশ্বাসী হন,
যতক্ষণ না বার্সা অবরোধের সময় ওসমানের মৃত্যু হয়। মাত্র ৬৭ বছর বয়সে উসমান গাজীর মৃত্যু হয় এবং তিনি তার শাসনমালে উসমান গাজীকে যথেষ্ট সমর্থন ও সহযোগীতা করে গেছেন।
উসমানীয় ইতিহাসের বিবরণ অনুসারে, ১২৯১ খ্রিষ্টাব্দে কারাকাহিসার দুর্গের দ্বিতীয় বিজয়ের সময় , তুরগুত আল্প উসমান বে'র পাশে ছিলেন, নাইটদের সঙ্গে যুদ্ধ করে অসামান্য অবদান রেখেছিলেন।
এবং পরবর্তী সময় গুলোতে তিনি উসমানের সমস্ত বিজয়ে অংশ নিয়েছিলেন।
১২৯৯ খ্রিস্টাব্দে উসমান গাজী এই বীর সাহসীকে ইনেগুলের গভর্নরশিপ হিসেবে নিযুক্ত করেন। কয়েকটি গ্রাম নিয়ে গঠিত এই অঞ্চলটি ওসমান তাকে দিয়েছিলেন, সেখানে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এবং প্রজাদের মন জয় করেছিলেন। তিনি সেখানে ৩৬ বছর শাসন করেছেন, এবং সেই সময় মানুষ শান্তি ও সমৃদ্ধিতে বসবাস করেছে। উক্ত অঞ্চলটিকে তুরগুত-ইলি (তুরগুতের ভূমি) নাম দেওয়া হয়। বুরসার অবরোধের সময়, মিগাল গাজীর সাথে তুরগুট আল্প ১৩২৫ সালে আট্রানোস ক্যাসেল (ওরহানেলি) বিজয়ে অংশ নিয়েছিল যা বুরসা বিজয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

উরহান গাজীর শাসনামলে তুরগুত আল্পের ভূমিকাঃ
উসমানের মৃত্যুর পর, যদিও তিনি স্বয়ং বৃদ্ধ বয়সে উপনীত হয়েছিলেন, তার পুত্র দ্বিতীয় সুলতান উরহান গাজীকে একইভাবে সমর্থন প্রদান অব্যাহত রেখেছিলেন, এবং প্রতিটি বিজয়ে তিনি উরহান গাজীকেও অনুসরণ করতেন। তাঁর সবচেয়ে বিশ্বস্ত উপদেষ্টা হিসাবেও কাজ করেছিলেন, যতক্ষণ না তিনি একটি যুদ্ধে নিহত হন।
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে অক্টোবর, ২০২১ রাত ১০:২৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×