somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারী দিবসের শতবর্ষ : আন্দোলনের উদ্ভব, বিকাশ এবং বর্তমান পরিস্থিতি-১ম খণ্ড

০৮ ই মার্চ, ২০১০ দুপুর ১২:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

নারী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় চলতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের শততম বার্ষিকী পালিত হচ্ছে। অধিকার আদায়ের স্মারক হিসেবে আজ থেকে একশ' বছর আগে ১৯১০-এর ৮ মার্চ প্রথম নারী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এ দিবসের পেছনে রয়েছে ঐতিহাসিক তাৎপর্য। মানুষ হিসেবে একজন নারী পরিপূর্ণ অধিকারের দাবিতে সুদীর্ঘকাল আন্দোলন চালিয়ে আসছে। সামাজিক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন ধারায় দেখা যায়, নারী কোন অংশেই পুরুষের পেছনে ছিল না। ফ্রান্সের প্যারি কমিউন, ফরাসি বিপ্লব, যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক আন্দোলনসহ ভারত উপমহাদেশে ব্রিটিশ বিরোধী সংগ্রামে পুরুষের সাথে নারীকে দেখা যায়। কিন্তু, কাক্সিত দাবি নারী সমাজ অর্জন করতে পারেনি। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সর্বত্র নারীরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। কর্মক্ষেত্রে নারীর মজুরি পুরুষের চেয়ে কম। আন্তর্জাতিক ট্রেড ইউনিয়ন কনফেডারেশনের ২০০৯-এর এক রিপোর্ট অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বে পুরুষের চেয়ে নারী ১৬ ভাগ পারিশ্রমিক কম পায়। অপর এক পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, পৃথিবীতে নারীরা কাজ করছে শতকরা ৬৫ ভাগ। বিপরীতে, তার আয় মাত্র শতকরা দশ ভাগ। পৃথিবীতে নারী-পুরুষের সংখ্যানুপাত প্রায় সমান। অথচ, দুনিয়ার মোট সম্পদের একশ' ভাগের মাত্র এক অংশের মালিক নারী। নারীর গৃহস্থালী কাজের আর্থিক স্বীকৃতি এখনো দেয়া হয়নি। অর্থাৎ, তা অর্থনৈতিক মূল্যে অদৃশ্যই থাকে। অন্যদিকে, দক্ষিণ এশিয়াসহ উন্নত বিশ্বে নারী সহিংসতার শিকার হচ্ছে। নির্যাতনের ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ার পরিসংখ্যান ভয়াবহ। এখানে প্রতি দুইজনের মধ্যে একজন পুরুষ কর্তৃক নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। শতকরা ৬০ জন নারী এর বিরুদ্ধে নীরব থাকে। অধিকার আদায়ের জন্য বিশ্বজুড়ে নারীদের কণ্ঠস্বর হাল আমলে ব্যাপকতা পেয়েছে। কিন্তু, এক্ষেত্রে সমস্যাও রয়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে এ আন্দোলনের অভিন্ন কোন নেটওয়ার্ক অদ্যাবধি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। উপরন্তু নানা মত-পার্থক্যের কারণে নারী আন্দোলন বিভিন্ন অংশে বিভক্ত। তারপরেও , নারীরা ন্যায্য অধিকারের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে। শুরুর দিকে নারী দিবস স্বল্প পরিসরে পালিত হত। হাল আমলে বিশ্বজুড়ে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এ দিবসকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। ১৯৭৫-এ জাতিসংঘ দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। ২০০৯-এ বিশ্বের ২৯টি দেশে সরকারি ছুটিসহ প্রায় ৬০টি দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে দিবসটি পালিত হয়েছে। নারী সংগঠনের পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সাংস্কৃতিক সংগঠন, এনজিওসহ বিভিন্ন মহল দিবসটি আনুষ্ঠানিকভাবে পালন করে থাকে।

নারীর ঐতিহাসিক পরাজয়

বিভিন্ন নৃতাত্ত্বিক এবং দার্শনিকদের গবেষণায় দেখা যায়, সমাজ এক সময় মাতৃতান্ত্রিক ছিল। বর্তমানে পুরুষরা সমাজকে নিয়ন্ত্রণ করছে। তেমনি আদিম যুগের বড় সময়জুড়ে নারীরা সমাজ নিয়ন্ত্রণ করত। ওই সমাজকে মাতৃতান্ত্রিক সমাজ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের ‌‌‌'পরিবার, ব্যক্তিগত মালিকানা ও রাষ্ট্রের উৎপত্তি' এবং হেনরি লুই মর্গানের 'আদিম সমাজ'সহ আরো বিভিন্ন গ্রন্থে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা দেখা যায়। এঙ্গেলসের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৮৬০ সালের আগে নারী বা পরিবার নিয়ে ইউরোপে কোন গবেষণা হয়নি। আদিমকালে সমাজ উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় মানুষ এক সময় সভ্য জগতে প্রবেশ করে। সভ্য সমাজের পূর্বে বড় সময়জুড়ে মানুষ প্রকৃতির বিরুদ্ধে লড়াই করে অস্তিত্ব রক্ষা করে। ওই সময় কার্যত নারী-পুরুষের মধ্যে খুব একটা বিভক্তি ছিল না। মর্গানের মতে, নারী-পুরুষ দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়ে পরিবার বিকশিত হয়েছে। আদিম যুগে দেখা যায়, নারী-পুরুষের যৌন সম্পর্কে বিধি নিষেধ ছিল না। এই কারণে, সন্তানের পিতৃ পরিচয়ও ছিল না। ঐতিহাসিকদের ধারণা অনুযায়ী, অনেক দিন পর্যন্ত পুরুষরা সন্তান উৎপাদনের কারণ সম্পর্কে জানত না। ফলে পুরুষের পক্ষে সন্তানের কর্তৃত্ব নিয়ে চিন্তার সুযোগ ছিল না। নারীর পরিচয়ে সন্তান বড় হত। পাশাপাশি, একই সময় কৃষি নিয়ন্ত্রণ করত নারীরা। সন্তান জন্ম ও লালনের সময় পুরুষের সাথে নারী শিকারে যাওয়া থেকে বিরত থাকত। ওই অবসরে সে কৃষিকাজ আবিষ্কার করে। আহরিত ফলমূলের বীজ থেকে যে শস্য উৎপাদিত হয়, তা প্রথম নারীই খেয়াল করে। ফলে মানব ইতিহাসে কৃষিকাজ নারীর হাত ধরে বিকশিত হয়েছে। এ প্রক্রিয়ায়, নারী দীর্ঘদিন কৃষি নিয়ন্ত্রণ করত। কারণ, ওই সময় পুরুষরা শিকারে ব্যস্ত থাকত।
এরও অনেক কাল পরে মানুষের শ্রম বিভাজনের ঘটনা ঘটে। জার্মান Ideology-তে মার্কস এবং এঙ্গেলস বলছেন, মানুষের ইতিহাসে নারী এবং পুরুষের কাজের পরিধি নিয়ে প্রথম শ্রম বিভাজনের সূত্রপাত। পাশাপাশি প্রথম যে শ্রেণী নিপীড়ন সেটাও নারী এবং পুরুষের মধ্যে। একে আখ্যায়িত করা হয়েছে First great division of labour-হিসেবে। শ্রম বিভাজনে দেখা যায়, উৎপাদন এবং পুনরুৎপাদনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নারী-পুরুষের কাজ পৃথক হয়ে যায়। মানুষের বেঁচে থাকার অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে উৎপাদন। খাওয়া-দাওয়া, সম্পদ এবং আশ্রয়ের জন্য মানুষকে উৎপাদনে যুক্ত থাকতে হয়। আর এই উৎপাদন প্রণালীর নিয়ন্ত্রণ পুরুষের হাতে চলে যায়। অন্যদিকে পুনরুৎপাদনের জন্য নারীরা গৃহে আবদ্ধ হয়ে যায়। পুনরুৎপাদন বলতে সন্তান জন্ম দেয়াকে বুঝানো হয়ে থাকে। সন্তানের লালন পালনও এর সাথে যুক্ত। যা হোক, উৎপাদন কর্মকাণ্ডের ভার দীর্ঘ এক প্রক্রিয়ায় পুরুষের হস্তগত হওয়ার মাধ্যমে নারীর ঐতিহাসিক পরাজয় সূচিত হয়। হাজারো বছর ধরে এ পরাজয়ের বিরুদ্ধে নারীর অবস্থান দেখা যায়নি। মূলত ইউরোপজুড়ে যখন রেনেসাঁসের উদ্ভব, তখন নারীকে অধিকারের দাবিতে স্বল্প পরিসরে অবস্থান নিতে দেখা যায়। নারী দিবসসহ আরো বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে আজকের নারী তার অধিকারের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন। কিন্তু, তা একদিনে পরিণতি লাভ করেনি। পেছনে রয়েছে দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাস।

নারী আন্দোলনের উদ্ভব ও বিকাশ

নারীর অধিকার নিয়ে প্রথম কণ্ঠস্বর দেখা যায় ১৬৪৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে। ওই সময় মার্গারেট ব্রেন্ট নামক এক নারী ম্যারিল্যান্ডের অ্যাসেম্বলিতে প্রবেশের দাবি করেন। কিন্তু, পুরুষতন্ত্র তা সাথে সাথে নাকচ করে দেয়। ১৬৬২ সালে ওলন্দাজ নারী মার্গারেট লুকাস রচিত 'নারী ভাষণ' বিশ্বের জ্ঞাত ইতিহাসে প্রথম নারীবাদী সাহিত্য। এই সৃষ্টিকর্মে নারীর পরাধীনতা ও অসম অধিকারের বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন। ইতিহাসে প্রথম নারীবাদী হিসেবে পলেইন ডি লা ব্যারে'কে দেখা যায়। ডি লা ব্যারে ১৬৪৭ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৬৭৩ সালে নারী প্রসঙ্গে ‍'equality of the two sexes, speech physical and moral where it is seen the importance to demolish itself prejudge' প্রবন্ধটি লিখেন। তাছাড়া পরবর্তীতে তিনি নারী অধিকার প্রসঙ্গে আরো বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে কাজ করেন। ওই সময় তিনি বলেন, “পুরুষ কর্তৃক নারী সম্পর্কে যা কিছু লেখা আছে, তার ব্যাপারে সন্দেহ পোষণ করতে হবে। কারণ, এক্ষেত্রে পুরুষ একই সঙ্গে অভিযুক্ত এবং বিচারকের আসনে আসীন। ১৭৮৯ সালে ফরাসি বিপ্লবের সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতার আহ্বান বিশ্বব্যাপী নারী কর্মীদের কাছে অভূতপূর্ব সাড়া ফেলে। কিন্তু, ফরাসি বিপ্লবের পরও নারীর প্রত্যাশিত মুক্তি আসেনি। ১৭৯১ সালে ফরাসি নাট্যকার ও বিপ্লবী ওলিম্পে দ্যা গগ্স (Olympw de Gouges) 'নারী অধিকার এবং মহিলা নাগরিকদের ঘোষণা' প্রকাশ করেন। এতে তিনি বলেন, 'নারী জেগে উঠো; গোটা বিশ্বে যুক্তির সঙ্কেত ধ্বনি উচ্চারিত হচ্ছে। তোমার অধিকারকে আবিষ্কার করো। প্রকৃতির শক্তিশালী সাম্রাজ্য এবং পক্ষপাত, গোঁড়ামি, কুসংস্কার ও মিথ্যা দিয়ে অবরুদ্ধ নয়। সত্যের শিখা পাপ ও অন্যায় দখলের মেঘকে দূর করে দিয়েছে।' ১৭৯৩ সালে এ নারীকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়। সাথে সাথে নারীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করা হয়। মৃত্যু পূর্বে অসীম সাহসিকতা নিয়ে তিনি বলেন, 'নারীর যদি ফাঁসি কাষ্ঠে যাবার অধিকার থাকে, তবে পার্লামেন্টে যাবার অধিকার থাকবে না কেন?'
নারীবাদকে প্রথম সংগঠিত করেন ইংল্যান্ডের মেরি ওলস্ট্যানক্রাফট। তিনি ছিলেন একাধারে লেখক, দার্শনিক এবং নারীবাদী। ১৭৯২ সালে তার বিখ্যাত গ্রন্থ 'A Vindication of the Rights of Woman' বা 'নারী অধিকারের ন্যায্যতা' প্রকাশিত হয়। এ গ্রন্থে তিনি নারীদের উপর পুরুষতন্ত্রের নিপীড়নের ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরেন। বইয়ের মূল বক্তব্য হচ্ছে, নারী কোন ভোগের সামগ্রী বা যৌন জীব নয়। তারা বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ। তাই তাদের স্বাধিকার দিতে হবে। ১৮৪০ সালে আমেরিকায় দাসপ্রথা ও মদপান বিলোপ আন্দোলনের মাধ্যমে ঊনবিংশ শতাব্দীতে নারীবাদী চেতনা বিকশিত হয়। এলিজাবেথ কেডি স্ট্যান্টন, লুক্রেশিয়া মটো, সুশান বি অ্যান্টনি, লুসি স্টোন, অ্যাঞ্জেলিনা এম গ্রিমকে, সারা এম গ্রিমকে প্রমুখ নারীবাদী ওই সময় আলোড়ন সৃষ্টি করেন। তন্মধ্যে অ্যাঞ্জেলিনা এম গ্রিমকে এবং সারা এম গ্রিম'কের ভূমিকা ছিল বহুল আলোচিত। তারা ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম যুগের নারীবাদী সংগঠক। নিগ্রো এই দুই বোন দাসপ্রথা বিলোপ এবং নারী অধিকারের জন্য যুগপৎ আন্দোলন করেন। এর পূর্বে ১৮৩৭ সালে আমেরিকায় প্রথম দাসপ্রথা বিরোধী নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ১২টি রাজ্যের ৮১ জন ডেলিগেট সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনের অর্জনও কম ছিল না। এর মাধ্যমে মার্কিন নারীরা প্রথমবারের মত রাজনীতির সুযোগ পায়। ১৮৬৮ সালে এলিজাবেথ কেডি স্ট্যান্টন ও সুশান বি অ্যান্টোনি মিলে নারীবাদী সাময়িকী 'দি রেভ্যুউলিশন' প্রকাশ করেন। এখানে নর-নারীর অভিন্ন অধিকারের ব্যাপারে বিভিন্ন যুক্তি উপস্থাপন করা হয়। ১৮৯১ সালে কেডি স্ট্যান্টন এবং আরো ২৩ জন নারী মিলিতভাবে 'নারীর বাইবেল' রচনা করেন। ১৮৪৮ সালের ১৯-২০ জুলাই নারীবাদীদের উদ্যোগে নিউইয়র্কের সেনেকা ফলস-এ বিশ্বের প্রথম নারী অধিকার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আমেরিকার ঘোষণার অনুরূপ 'ডিকারেশন অব সেন্টিমেন্ট' ঘোষণা করা হয়। পরবর্তীতে আমেরিকার সংগ্রামী নারীদের লড়াই-সংগ্রাম নারীবাদী চেতনাকে আরো ত্বরান্বিত করে।

৮ মার্চ যেভাবে নারী দিবস হল

১৮৫৭ সালে নিউইয়র্কের সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকদের আন্দোলন থেকে মহান ৮ মার্চের উদ্ভব। তখন নিউইয়র্ক বস্ত্র কারখানায় হাজার হাজার নারী শ্রমিক কাজ করত। তাদের দৈনিক ১৫ ঘন্টার উপরে পরিশ্রম করতে হত। কিন্তু, সে অনুপাতে মজুরি দেয়া হত না। সুঁচ, সুতা, বিদ্যুৎসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক যেসব জিনিসপত্র নারীরা ব্যবহার করত, মালিকরা সে বাবদ বেতন থেকে কেটে রাখত। বিলম্বে ফ্যাক্টরিতে যাওয়া, কাজের ক্ষতি করা অথবা টয়লেটে বেশি সময় নেয়ার জন্য শ্রমিকদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হত। মালিক গোষ্ঠীর এ অমানবিক শোষণের বিরুদ্ধে ১৮৫৭-এর ৮ মার্চ নিউইয়র্কের সেলাই কারখানায় নারী শ্রমিকরা উপযুক্ত বেতন ও দশ ঘন্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামে। আন্দোলন দমনে পুলিশ নারীদের উপর গুলি চালায়। ধারণা করা হয়, এই ঘটনার মাধ্যমে নারী আন্দোলনের ইতিহাসে পুলিশ প্রথম গুলি চালায়। ফলে আন্দোলন আরো জোরদার হয়। পরবর্তীতে, নারীর ভোটাধিকার ইস্যু আন্দোলনের অন্যতম কর্মসূচি হিসেবে সামনে আসে। আন্দোলনের মাধ্যমে পরিপূর্ণ অধিকার আদায় সম্ভব না হলেও অর্জন নিতান্তই কম ছিল না। সংগ্রামের ধারাবাহিকতায়, ১৮৬০ সালে নিউইয়র্ক শহরের সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকরা দাবি আদায়ের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে সমর্থ হয়।
নারী শ্রমিকদের এ সংগ্রামকে স্মারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রধান ভূমিকা পালন করেন কারা জেটকিন। তিনি ১৮৫৭ সালের ১৫ জুলাই জার্মানীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা জেসেফিন ফিটেল আইসনার ছিলেন একজন শিক্ষিতা নারী। তিনি ফরাসি বিপ্লবের অবাধ স্বাধীনতা ও ভ্রাতৃত্বের আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। মায়ের আদর্শে প্রভাবিত হয়ে কারা রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত হন। পড়াশুনায়ও তিনি বেশ কৃতিত্ব দেখান। ১৮৭৮ সালে তিনি সিবার ইনস্টিটিউট থেকে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হন। এর মাধ্যমে কারা শিক্ষকতার সনদ অর্জন করেন। ফ্রেডরিক এঙ্গেলস, অগাস্ট বেবেল, মার্কসের কন্যা ল্যারা লাফার্গ, কার্ল লাইভনেখত, রোজা লুক্সেমবার্গ, লেনিনসহ আরো অনেক বিশ্ব নেতার সাথে তার গভীর হৃদ্যতা ছিল। তিনি ১৯০৫ সালে 'গ্রিকহাইট' নামক তার বিখ্যাত প্রকাশনা ও সম্পাদনা শুরু করেন। ১৯০৭ সালে আন্তর্জাতিক নারী সংস্থা (International women's Bureau) প্রতিষ্ঠিত হলে কারা তার সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে কমিউনিস্টদের দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কারা ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণার প্রস্তাব দেন এবং তা সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত হয়। পরের বছর অস্ট্রিয়া, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড এবং জার্মানিতে প্রথমবারের মতো নারী দিবস পালিত হয়। ১৯১৩ ও '১৪ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রতিবাদ হিসেবে পালিত হয়। নারী আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘের সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণায় নারী-পুরুষের সমঅধিকারের ব্যাপারে স্বীকৃতি দেয়া হয়। ১৯৭৫ সালে জাতিসংঘ দাপ্তরিকভাবে ৮ মার্চকে নারী দিবস ঘোষণা করে। তৎপরবর্তী, জাতিসংঘের সকল সদস্য রাষ্ট্র ৮ মার্চ নারী দিবস পালন করে আসছে। উল্লেখ্য, ১৯১০ থেকে ১৯১৩ পর্যন্ত মার্চের যে কোন দিন বিভিন্ন দেশে নারী দিবস পালন করা হত। কিন্তু, ১৯১৪ থেকে সুনির্দিষ্টভাবে ৮ মার্চ নারী দিবস পালিত হচ্ছে।

অন্যান্য দেশে সমসাময়িক আন্দোলন

১৮৭১ সালে ফ্রান্সের শ্রমজীবী জনগণ প্রথম সাম্যবাদী সমাজ নির্মাণের উদ্দেশ্যে প্যারি কমিউন প্রতিষ্ঠা করেন। এ আন্দোলনে হাজার হাজার শ্রমজীবী নারীর অংশগ্রহণ নারীবাদকে নতুন গতি দেয়। প্যারি কমিউন রক্ষার্থে ১০ হাজার নারী যুদ্ধে অংশ নেয়। পরবর্তীতে, প্যারি কমিউন পতনের পর যুদ্ধ পরিষদ ১০৫১ জন নারীকে অভিযুক্ত করে। এদের মধ্যে লুই মিচেল এবং এলিজাবেথ ডিট্রিভের নাম ইতিহাসে বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে আছে। উল্লেখ্য, একজন মানুষ হিসেবে নারীর পূর্ণ অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে দেশে দেশে উদার, গণতান্ত্রিক মানসিকতা সম্পন্ন মহৎ পুরুষরাও যুক্ত হন। ১৮৬৬ সালে দার্শনিক ও আইনজ্ঞ জন স্টুয়ার্ট মিল নারী অধিকারে দৃঢ়ভাবে অবস্থান নেন। স্টুয়ার্ট মিল ব্রিটেন পার্লামেন্টের সদস্য হবার পর নারীর ভোটাধিকারের পক্ষে জোরালো যুক্তি তুলে ধরেন। ১৮৬৯ সালে ভোটাধিকারসহ অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে তিনি 'নারীর অধীনতা' রচনা করেন।

ভারতবর্ষে নারী আন্দোলন

ভারতবর্ষে নারীর দুরবস্থার বিরুদ্ধে প্রথম সোচ্চার হন একজন পুরুষ। নারীবাদী এই কিংবদন্তি পুরুষের নাম রাজা রামমোহন রায়। ১৮১৮ সালে তিনি কলকাতায় সহমরণ এবং সতীদাহ প্রথা বিলোপের জন্য জনমত তৈরি করেন। ফলাফল হিসেবে, ১৮২৯ সালে লর্ড বেন্টিঙ কুসংস্কারাচ্ছন্ন এই প্রথা বিলোপে আইন পাস করেন। এছাড়া নারী শিক্ষায় দ্বারকানাথ ঠাকুর, প্রসন্ন কুমার ঠাকুর, রাজা রাধাকান্ত দেবসহ আরো বেশ কিছু ব্যক্তির মনোভাব ছিল ইতিবাচক। ১৮২২ সালে রাধাকান্ত দেবের উৎসাহে গৌরমোহন তর্কালঙ্কার স্ত্রী শিক্ষা বিধায়ক শিরোনামে একটি বই লিখেন।
নারীকে ধর্ম শাস্ত্রের নিপীড়ন থেকে রক্ষা করতে সচেষ্ট হন আরেক মহান পুরুষ ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর। তিনি ১৮৫০-৫৫ সালে বিধবা বিবাহের সপক্ষে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলেন। বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায়, ওই সময় বিধবা বিবাহ প্রথার সূচনা হয়। তারই ধারাবাহিকতায়, ১৮৫৬ সালে ভারতবর্ষে বিধবাদের পুনর্বিবাহ আইন পাস হয়। সামাজিক স্বীকৃতি প্রতিষ্ঠিত করতে তিনি ১৮৬৭ সাল নাগাদ ৬০টি বিধবা বিবাহের আয়োজন করেন। বাংলায় নারী শিক্ষার প্রথম অধ্যায় শুরু হয় ১৮১৮ সালে। রবার্ট মে নামক লন্ডন মিশনারী সোসাইটির জনৈক সদস্য ১৮১৮ সালে কলকাতার কাছে চুঁচুড়ায় একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। এরপর চার্চ মিশনারী সোসাইটি মেয়েদের শিক্ষা প্রসারে এগিয়ে আসে। চার্চ মিশনারীর সহায়তায় মিস মেরী অ্যান কুক ১৮২৩ থেকে ১৮২৮ পর্যন্ত কলকাতা ও তার আশেপাশে প্রায় ৩০টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেন। নারী শিক্ষায় বাঙালি নারীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে কলকাতা ভিক্টোরিয়া গার্লস হাই স্কুল। ১৮৪৯-এর মে মাসে এ স্কুল স্থাপিত হয়। প্রতিষ্ঠাতা জে.ই.ডি বেথুনের নামানুসারে প্রতিষ্ঠানটি বেথুন স্কুল নামে পরিচিত। অক্সফোর্ডের মেধাবী ছাত্র বেথুন ১৮৪৮-এ ভারতে আসেন। তার সমস্ত সম্পদ স্কুলটির পেছনে ব্যয় করেন।
ইতিহাসে দেখা যায়, ১৮৬৩ সালে কেশব চন্দ্র সেন কয়েকজন শিষ্যসহ উমেশচন্দ্র দত্তের নেতৃত্বে 'বামাবোধিনী সভা' স্থাপন করেন। ওই বছরই তারা বামাবোধিনী পত্রিকা প্রকাশ করেন। বাঙালি নারী আন্দোলনে এ পত্রিকাটি অসামান্য ভূমিকা রাখে। ১৮৬৯ সালে কেশব চন্দ্র সেন ঢাকায় আসেন। তার সহযোগিতায় ১৮৭১ সালে 'ঢাকা শুভসাধনী' নামে আরেকটি সমাজ সংস্কারক সমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। সেই সভার উদ্যোগে ১৮৭৩ সালে ঢাকায় প্রাপ্ত বয়স্কা মহিলাদের জন্য একটি স্কুল স্থাপন করা হয়। ১৮৭৬ সালে মেরি কার্পেন্টার ঢাকায় এসে স্কুলটি পরিদর্শন করেন। স্কুলের ব্যবস্থাপনা দেখে তিনি বেশ চমৎকৃত হন। প্রতিষ্ঠানের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে তিনি সরকারের কাছে একটি চিঠিও লিখেন। সেই প্রশংসা পত্রের সুবাদে সরকার ১৮৭৮ সালের জুন মাসে এটিকে বালিকা বিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করে। লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার এ্যাশলি ইডেনের নামানুসারে স্কুলটির নামকরণ হয় ইডেন গার্লস হাই স্কুল। ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে স্কুলটি সরকারি করা হয়। এই স্কুলটিই আজকের ইডেন কলেজ।
বাংলায় প্রথম নারীবাদী সংগঠন 'সখি সমিতি' প্রতিষ্ঠা করেন স্বর্ণকুমারী দেবী। ১৮৮৫ সালে তিনি লাঠি এবং অস্ত্র চালনা প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে দেশপ্রেম সঞ্চারের চেষ্টা করেন। ১৮৮৯ সালে বোম্বেতে অনুষ্ঠিত ভারতীয় কংগ্রেস সম্মেলনে ৬ জন নারীকে যোগ দিতে দেখা যায়। সরোজিনী নাইডু ও সরলা দেবী চৌধুরানী প্রমুখ নারী নেত্রী কংগ্রেসের বিভিন্ন ইউনিটে সভাপ্রধানের পদেও উন্নীত হন। ১৮৮৯ সালে ভারতবর্ষে নারীবাদী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ মহারাষ্ট্রের পণ্ডিত রমাবাঈ প্রকাশ্যে আন্দোলনে নামেন। ওই সময় পুনায় তিনি নারী মুক্তির বিষয়ে ভাষণ দেন। অন্যদিকে, বাংলায় প্রথম নারীবাদী হিসেবে খ্যাতি পান সরলা দেবী চৌধুরানী। তিনি ১৯১০ সালে সর্বভারতীয় নারী সংগঠন 'স্ত্রী মহামণ্ডল' প্রতিষ্ঠা করেন। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে 'স্ত্রী জাতির অবনতি’ প্রকাশের মাধ্যমে বাংলায় যে অনন্য সাধারণ নারীবাদী প্রবক্তার উত্থান হয়, তার নাম বেগম রোকেয়া। তিনি লিখেছেন, 'আপনারা কি কোনদিন আমাদের দুর্দশার বিষয় চিন্তা করিয়া দেখিয়াছেন? এই বিংশ শতাব্দীর সভ্য জগতে আমরা কি? দাসী! পৃথিবী হইতে দাস ব্যবসা উঠিয়া গিয়াছে শুনিতে পাই, কিন্তু আমাদের দাসত্ব গিয়াছে কি? না। আমরা দাসী কেন? কারণ আছে।' রোকেয়ার সমগ্র জীবন ও কর্ম নারী অধিকারের জন্য উৎসর্গকৃত ছিল। সমাজ বিজ্ঞানীদের মতে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত, সরলা দেবী এবং পণ্ডিত রমা বাঈ হলেন অবিভক্ত ভারতবর্ষের নারী আন্দোলনের জননী।
এ ছাড়া রাজনৈতিক আন্দোলন, শ্রমিক আন্দোলন, তেভাগা, নানকা, টংক বিদ্রোহসহ আরো বিভিন্ন সংগ্রামে ভারতবর্ষের নারীদের সক্রিয় উপস্থিতি দেখা যায়। জ্যোতির্ময় গাঙ্গুলী, মাতঙ্গিনী হাজরা, উর্মিলা দেবী, আশালতা সেন, কমলা দেবী চট্টোপাধ্যায়, প্রভাবতী বসু, লীলা নাগ, জোবেদা খাতুন চৌধুরী, দৌলতন নেছা খাতুন, রাজিয়া খাতুন, হালিমা খাতুন, হোসনে আরা খাতুন, শামসুন্নাহার মাহমুদ, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার, কল্পনা দত্ত, শান্তি ঘোষ, রীনা দাস, ইলা মিত্র, হেনা দাস, সন্তোষ কুমারী দেবী প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য।

৫টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ মিসড কল

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ৯:৫৫



নতুন নতুন শহরে এলে মনে হয় প্রতি টি ছেলেরি এক টা প্রেম করতে ইচ্ছে হয় । এর পেছনের কারন যা আমার মনে হয় তা হলো, বাড়িতে মা, বোনের আদরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

হিটস্ট্রোক - লক্ষণ ও তাৎক্ষণিক করণীয়

লিখেছেন ঢাকার লোক, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:০৭

সাধারণত গরমে পরিশ্রম করার ফলে হিটস্ট্রোক হতে পারে। এতে দেহের তাপমাত্রা অতি দ্রুত বেড়ে ১০৪ ডিগ্রী ফারেনহাইট বা তারও বেশি হয়ে যেতে পারে।

হিটস্ট্রোক জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। চিকিৎসা... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহকে অবিশ্বাস করার সংগত কোন কারণ নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০২ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩



সব কিছু এমনি এমনি হতে পারলে আল্লাহ এমনি এমনি হতে সমস্যা নাই। বীগ ব্যাং এ সব কিছু হতে পারলে আল্লাহও হতে পারেন। সব কিছুর প্রথম ঈশ্বর কণা হতে পারলে আল্লাহও... ...বাকিটুকু পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×