somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাহান্নামের চিত্র - পর্ব ৮

২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৪:৩৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জাহান্নামীরা আফসোস করবে

জাহান্নামীদেরকে যখন ফেরেশতারা এক হাতে চুলের মুঠি এবং অন্য হাতে পা ধরে চ্যাংদোলা করে জাহান্নামে নিক্ষেপ করতে নিয়ে যাবে, তখন জাহান্নামের পাহারাদারগণ জিজ্ঞেস করবে, তোমাদের কাছে কি কোন সুসংবাদ দাতা এবং ভীতি প্রদর্শনকারী পৌঁছেনি? তখন কাফেরগণ বলবে, হ্যাঁ, পৌঁছেছিলো কিন্তু আমরা তাদেরকে ঠাট্টা বিদ্রূপ করতাম এবং মিথ্যা মনে করতাম। তখন আফসোস করবে এবং,
তারা বলবে, কতো ভালো হতো (যদি সেদিন) আমরা (নবী রসূলদের কথা) শুনতাম এবং (তা) অনুধাবন করতাম, (তাহলে আজ) আমরা জ্বলন্ত আগুনের বাসিন্দাদের মধ্যে গণ্য হতাম না। (সূরা আল মূলকঃ আয়াত ১০)

সূরা আল আনয়ামে বলা হয়েছে,
তুমি যদি (সত্যিই তাদের দেখতে পেতে যখন এই (হতভাগ্য) ব্যক্তিদের (জ্বলন্ত) আগুনের পাশে এনে দাঁড় করানো হবে, তখন তারা (চীৎকার করে) বলবে, হায় ! যদি আমাদের আবার (দুনিয়ায়) ফেরত পাঠানো হতো, তাহলে আমরা (আর কখনো) আমাদের মালিকের আয়াতসমূহকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতাম না এবং আমরা (অবশ্যই) ঈমানদার লোকদের দলে শামিল হয়ে যেতাম। (সূরা আল আনয়ামঃ আয়াত ২৭)

তাদের এ আবেদন নিবেদন ব্যর্থ হয়ে যাবে। আলাহ্‌ সরাসরি তাদের কথাকে প্রত্যাখান করবেন। বলা হচ্ছে,
... (আসলে) যদি তাদের আবার দুনিয়ায় ফেরত পাঠানোও হয়, তবু তারা তাই করে বেড়াবে যা থেকে তাদের নিষেধ করা হয়েছিলো, তারা (আসলেই) মিথ্যাবাদী। (সূরা আল আনয়ামঃ আয়াত ২৮)

সূরা যুমারে বলা হয়েছে
যেসব লোক কুফরী করেছে তাদের দলে দলে জাহান্নামের দিকে তাড়িয়ে নেয়া হবে; এমনি (তাড়া খেয়ে) যখন তারা জাহান্নামের কাছে পৌঁছবে তখন (সাথে সাথেই) তার (সদর) দরজা খুলে দেয়া হবে এবং তার রক্ষী (ফেরেশতা)-রা ওদের বলবে, তোমাদের কাছে কি তোমাদের মধ্য থেকে কোনো রসূল আসেনি, যারা তোমাদের কাছে তোমাদের মালিকের (কেতাবের) আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করতো এবং তোমাদের এমনি একটি দিনের সাক্ষাৎ সম্বন্ধে সতর্ক করে দিতো; ওরা বলবে (হ্যাঁ), অবশ্যই এসেছিলো, কিন্তু কাফেরদের ব্যাপারে (আল্লাহ তায়ালার সে) আযাব (সম্পর্কিত) ওয়াদাই আজ বাস্তবায়িত হয়ে গেলো। (সূরা আঝ ঝুমারঃ আয়াত ৭১)

মানুষ যখন হতাশ ও পেরেশান হয়ে যায় তখনই তার মুখ দিয়ে হতবাক কথা বের হয়। উপরোক্ত দৃষ্টান্তটি তার নমুনা।


অপরাধীরা পৃথিবীতে ফিরে আসতে চাইবে

তারা বলবে, হে আমাদের মালিক, তুমি তো দু'বার আমাদের মৃত্যু দিলে, আবার দু'বার জীবনও দিলে, আমরা আমাদের অপরাধ স্বীকারও করেছি, অতএব (এখন আমাদের এখান থেকে) বেরিয়ে যাওয়ার কোনো রাস্তা আছে কি? (সূরা আল মোমেনঃ আয়াত ১১)

দু'বার মৃত্যু এবং দু'বার জীবন দান অর্থ - মানুষ অস্তিত্বহীন ছিলো অর্থাৎ মৃত ছিলো, আলাহ জীবন দান করেছেন। আবার মৃত্যু দেবেন এবং পুনরায় কিয়ামতের দিন জীবিত করে উঠাবেন। এ কথা কয়টি স্বয়ং আলাহ্‌ রাব্বুল আলামীন সূরা আল বাকারায় স্পষ্ট করে বলেছেন,
তোমরা আল্লাহকে কিভাবে অস্বীকার করবে? অথচ তোমরা (প্রথম দিকে) ছিলে মৃত, তিনিই তোমাদের জীবন দিয়েছেন, পুনরায় তিনি তোমাদের মৃত্যু দেবেন, অতঃপর (সর্বশেষে) তিনিই আবার তোমাদের জীবন দান করবেন এবং (এভাবেই) তোমাদের একদিন তাঁর কাছে ফিরে যেতে হবে। (সূরা আল বাকারাঃ আয়াত ২৮)

অপরাধীরা প্রথম তিনটি অবস্থা অবিশ্বাস করতো না, কেননা এ তিনটি অবস্থা তাদের চোখের সামনেই ঘটতো। কিন্তু শেষাবস্থা তারা প্রত্যক্ষ করতে পারেনি বলে উপহাস করে উড়িয়ে দিতো। কেননা শেষ অবস্থার খবর একমাত্র নবী রাসূলগণই দিয়েছেন। কিয়ামতের দিন কার্যত যখন এ অবস্থা ঘটে যাবে তখন তারা স্বীকার করবে এবং কাকুতি মিনতি করবে পৃথিবীতে পুনরায় ফিরে আসার জন্য।

সূরা ফাতির এ বলা হয়েছে,
(আযাবের কষ্টে) তারা সেখানে আর্তনাদ করে বলবে, হে আমাদের মালিক, তুমি (আজ) আমাদের এ (আযাব থেকে) বের করে দাও, আমরা ভালো কাজ করবো, (আগে) যা কিছু করতাম তা আর করবো না; ... (সূরা ফাতেরঃ আয়াত ৩৭)

অতঃপর তাদেরকে প্রতি উত্তরে আল্লাহ তায়ালা বলবেন,
...আমি কি তোমাদের দুনিয়ায় এক দীর্ঘ জীবন দান করিনি? সাবধান হতে চাইলে কেউ কি সাবধান হতে পারতে না? (তাছাড়া) তোমাদের কাছে তো সতর্ককারী (নবী)-ও এসেছিলো; সুতরাং (এখন) তোমরা আযাবের মজা উপভোগ করো, (মূলত) যালেমদের (সেখানে) কোনোই সাহায্যকারী নেই ! (সূরা ফাতেরঃ আয়াত ৩৭)


আত্মীয় স্বজন ও দুনিয়ার সব মানুষকে বিনিময় দিয়ে হলেও জাহান্নামীরা বাঁচতে চাইবে

... সেদিন অপরাধী ব্যক্তি আযাব থেকে (নিজেকে) বাঁচাতে মুক্তিপণ হিসেবে তার পুত্র সন্তানদের দিতে পারলেও তা দিতে চাইবে, (দিতে চাইবে) নিজের স্ত্রী এবং নিজের ভাইকেও, এবং নিজের পরিবারভুক্ত এমন আপনজনদেরও, যারা তাকে (জীবনভর) আশ্রয় দিয়েছিলো, (সম্ভব হলে) ভূমন্ডলের সবকিছুই (সে দিতে চাইবে), তারপরও (জাহান্নাম থেকে) বাঁচতে চাইবে, (সূরা আল মায়া'রেজঃ আয়াত ১১-১৪)

সূরা আল মোমেনুনে বলা হয়েছেঃ
... সেদিন (মানুষ এমনি দিশেহারা হয়ে পড়বে যে,) তাদের মধ্যে আত্মীয়তার বন্ধন (বলতে কিছুই) অবশিষ্ট থাকবে না, না তারা একজন আরেকজনকে কিছু (একটা) জিজ্ঞেস করতে যাবে ! (সূরা আল মোমেনুনঃ আয়াত ১০১)

অন্যত্র বলা হয়েছে,
(সেদিন) এক বন্ধু আরেক বন্ধুর খবর নেবে না, (সূরা আল মায়া'রেজঃ আয়াত ১০)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ১১:৫৩
৮টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×