ফতোয়া ২৭ - প্রসঙ্গ - মহানবী (স.)-এর মোজেযা
আমি আশা করি আপনি রসূল (স.)-এর মোজেযা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবেন।
উত্তর : মহানবী (স.)-এর মোজেযা সম্পর্কে আপনি যে ব্যক্তির প্রতিক্রিয়া উল্লেখ করেছেন, তার কিছু অংশ সঠিক আর কিছু অংশ ভুল।
মানুষ রসূল (স.)-এর মোজেযা সম্পর্কে যেসব কথা আলোচনা করে তার সবকিছু ভুল নয়। আবার সব সত্যও নয়। এক্ষেত্রে নিজেদের আবেগ এবং বিবেককে সত্যতা যাচাইয়ের মাপকাঠি নির্ধারণ করা ঠিক নয়; বরং এ ক্ষেত্রে আল্লাহর কেতাব ও সহীহ হাদীসের স্মরণাপন্ন হওয়াই আমাদের কর্তব্য।
রসূল (স.)-এর মোজেযা সম্পর্কে তিন শ্রেণীর মানুষ পাওয়া যায়।
১. এক শ্রেণীর লোক রয়েছে যারা সকল প্রকার মোজেযাকে সত্য বলে মনে করে। যেসব মোজোযার কথা মানুষের মুখে বা কেতাবে উল্লেখ পাওয়া যায় তা সবই তারা বিশ্বাস ও গ্রহণ করে। সকল প্রকার যঈফ বর্ণনাও তারা বিশ্বাস করে। সেসব বর্ণনা ইসলামের সার্বিক দৃষ্টিভংগীর সাথে সংগতিপূর্ণ হোক বা না হোক।
২. অন্য এক শ্রেণীর লোক রয়েছে, যারা সকল প্রকার মোজেযাকে অবিশ্বাস করে। তারা মনে করে, রসূল (স.)-এর একমাত্র মোজেযাই বিশ্বের মানুষদের চ্যালেঞ্জের ক্ষমতা রাখে। মক্কার কাফের এবং কোরায়শদেরকে যখন আল্লাহ তায়ালা চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, তারা যেন এই কোরআনের মতো একটি সূরা বা একটি আয়াত তৈরী করে আনে। এই চ্যালেঞ্জ গ্রহণে তারা ব্যর্থ হয়েছিলো।
মক্কার কাফের মোশরেকরা যখন রসূল (স.)-এর কাছে মোজেযা দাবী করেছিলো, আল্লাহ তায়ালা তাদের দাবী প্রত্যাখ্যান করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
'এরা বলে, আমরা কখনোই তোমার ওপর ঈমান আনবো না, যতোক্ষণ না তুমি আমাদের জন্যে এ যমীন থেকে এক প্রসবণ (ধারা) উৎসারিত করবে, কিংবা তোমার জন্যে খেজুরের অথবা আংগুরের একটি বাগান (তৈরী) হবে এবং তাতে তুমি অসংখ্য নদী নালা বইয়ে দেবে, অথবা যেমন করে তুমি (কেয়ামত সম্পর্কে) বলো, সে অনুযায়ী আসমানকে টুকরো টুকরো করে আমাদের ওপর ফেলে দেবে অথবা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা ও (তাঁর) ফেরেশতাকে আমাদের সামনে এনে দাঁড় করিয়ে দেবে, কিংবা থাকবে তোমার কোনো স্বর্ণ নির্মিত ঘর অথবা তুমি আরোহণ করবে আসমানে; তারপরও আমরা কিন্তু তোমার (আকাশে) চড়ার ঘটনাকে বিশ্বাস করবো না, যতোক্ষণ না তুমি (সেখান থেকে) আমাদের জন্যে একটি কেতাব নিয়ে আসবে, যাকে আমরা (নাযিল হতে দেখে) পড়তে পারবো। (হে নবী,) তুমি (এদের শুধু এটুকু) বলো, মহান পবিত্র (আমার) আল্লাহ তায়ালা, আমি তো কেবল একজন মানুষ (ও) রসূল বৈ কিছুই নই।' (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ৯০-৯৩)
অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ তায়ালা কাফের কোরায়শদের দাবী প্রত্যাখ্যানের কারণ ব্যাখ্যার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন,
'আমাকে (আযাবের) নিদর্শনসমূহ পাঠানো থেকে এ ছাড়া অন্য কোনো কিছুই নিবৃত করতে পারেনি যে, তাদের আগের লোকেরাও তা অস্বীকার করেছিলো। আমি সামুদ জাতিকে দৃশ্যমান নিদর্শন (হিসেবে) একটি উষ্ট্রী পাঠিয়েছিলাম, অতঃপর তারা (আমার) সে (নিদর্শনের) সাথে যুলুম করেছে, (আসলে) আমি ভয় দেখানোর জন্যেই (তাদের কাছে আযাবের) নিদর্শনসমূহ পাঠিয়ে থাকি।' (সূরা বনী ইসরাঈল, আয়াত ৫৯)
অন্য একটি আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, মোজেযা দাবীর ক্ষেত্রে আল্লাহ তায়ালা কোরআন নাযিল করেছেন। এই কোরআন একাই সকল মোজেযার মোকাবেলায় যথেষ্ট। আল্লাহ তায়ালা বলেন,
'(হে নবী,) এদের কাছে এটাই কি যথেষ্ট নয় যে, স্বয়ং আমিই তোমার ওপর কেতাব নাযিল করেছি, যা তাদের কাছে তেলাওয়াত করা হচ্ছে !' (সূরা আল আনকাবুত, আয়াত ৫১)
হেকমত বা যুক্তির দাবীতে দেখা যায়, মোহাম্মদ (স.)-এর মোজেযা বস্তুগত বা অলৌকিক কোনো কিছুর চেয়ে বরং বিবেকসম্মত এবং সাহিত্য পর্যায়ের হওয়াই ছিলো বাঞ্ছনীয়। যাতে করে এই পৃথিবী যতোদিন টিকে থাকবে ততোদিন পর্যন্ত যেন এই মোজেযা মানুষের জন্যে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে টিকে থাকে।
নিজেদের মতামতের সপক্ষে এরা একটি সহীহ হাদীস উল্লেখ করে।
মহানবী (স.) বলেন, প্রত্যেক নবীকে আল্লাহ তায়ালা কিছু নিদর্শন এবং মোযেজা দিয়েছেন সেসব নিদর্শনের সংখ্যা অনুপাতে সেই নবীদের প্রতি বিশ্বাসীদের সংখ্যাও ছিলো। আমাকে যে মোজেযা দেয়া হয়েছে সেটি হচ্ছে কোরআন। (বোখারী)
৩. এক শ্রেণীর লোক মধ্যম ধরনের বিশ্বাস পোষণ করে। এরা সকল মোজেযা অস্বীকারও করে না আবার সকল মোজেযা স্বীকারও করে না। এই শ্রেণীর লোকদের মতামতই আমার কাছে গ্রহণযোগ্য মনে হয়। এই মতামতের ব্যাখ্যা নিম্নরূপ -
ক. নিঃসন্দেহে কোরআন হচ্ছে রসূল (স.)-এর সর্বশ্রেষ্ট মোজেযা। এই দুনিয়ার মেয়াদকাল পর্যন্ত এই কোরআন দুনিয়ার সকল মানুষের জন্যে একটি চ্যালেঞ্জ এবং রসূল (স.)-এর সত্যতার বাস্তব প্রমাণ।
খ. এই মোজেযা ছাড়াও আল্লাহ তায়ালা রসূল (স.)-কে আরো কিছু মোজেযা দিয়েছেন। কিন্তু সেসব মোজেযা চ্যালেঞ্জস্বরূপ বা লোকদের যুক্তি প্রমাণের জন্যে দেয়া হয়নি, বরং এসব মোজেযা ছিলো রসূল (স.)-এর প্রতি মর্যাদাসূচক এবং সাহায্য ও রহমত স্বরূপ। এ কারণেই এ সকল মোজেযা কাফেরদের দাবী অনুযায়ী হয়নি বরং কোনো বিপদের সময়ে এ সকল মোজেযার প্রকাশ ঘটেছে। যেমন বদরের যুদ্ধের সময় বৃষ্টি হয়েছিলো। সেই বৃষ্টিতে মোমেনরা উপকৃত হয়েছিলো, কাফেররা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলো। অথচ কাফেররা মোমেনদের চেয়ে মাত্র কয়েক গজ দূরে অবস্থান করছিলো। অথবা উদাহরণ হিসেবে মে'রাজের ঘটনার কথা বলা যায়। কোরআন এবং হাদীসে এ সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে।
গ. সেসকল মোজেযাই আমরা বিশ্বাস করি, যেসব মোজেযার কথা পবিত্র কোরআনে অথবা সহীহ হাদীসে রয়েছে। কোরআন বা সহীহ হাদীস দ্বারা যেসব মোজেযা প্রমাণিত হয়নি আমাদের দৃষ্টিতে সেসব মোজেযার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।
সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত কয়েকটি মোজেযার কথা নীচে উল্লেখ করা যাচ্ছে।
১. মিম্বর তৈরীর আগে রসূল (স.) খেজুর গাছের একটি গুঁড়ির ওপর দাঁড়িয়ে খোতবা দিতেন। মিম্বর তৈরীর পর রসূল (স.) সেই খেজুর গাছের গুঁড়ি ব্যবহার বন্ধ করেন। এর ফলে সেই গুঁড়ি কাঁদতে শুরু করলো। রসূল (স.) সেই গুঁড়ির কাছে এসে তার ওপর হাত রাখলেন, এতে সেই গুঁড়ির কান্না বন্ধ হলো।
২. সহীহ হাদীসসমূহে একাধিক জায়গায় এ রকম ঘটনার উল্লেখ রয়েছে যে, যুদ্ধের সময় বা সমস্যা সংকুল সময়ে পানির সংকট দেখা দিলে তিনি অপ্রচলিত উপায়ে পানি সংগ্রহ করেন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, রসূল (স.) সাহাবাদের সঙ্গে জাওবা নামক জায়গায় অবস্থান করছিলেন। তিনি পানিপূর্ণ একটি পাত্র আনালেন এবং সেই পাত্রে হাত ঢোকালেন। তাঁর আঙ্গুল থেকে পানির ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হতে লাগলো। সেই পানি দ্বারা তিনি এবং তাঁর সাহাবারা ওযু করেন। হোদায়বিয়ার সন্ধির সময়ে রসূল (স.) শুকনো কূয়ায় ওযুর অবশিষ্ট পানি ফেলে দিয়ে দোয়া করেন, ফলে সেই কূয়া পানিতে পূর্ণ হয়ে যায়।
৩. সহীহ হাদীসসমূহে এ রকম ঘটনার বিবরণও রয়েছে যে, রসূল (স.) দোয়া করেছেন এবং আল্লাহ তায়ালা সাথে সাথে সেই দোয়া কবুল করেছেন। যেমন বদরের যুদ্ধের সময় বৃষ্টির জন্যে দোয়া এবং সেই যুদ্ধে জয়লাভের জন্যে দোয়া। এই দোয়া কবুল হয়েছিলো। তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাসে (রা.)-র জন্যে দোয়া করেছিলেন যেন দ্বীনী জ্ঞানে বুৎপত্তি লাভ করতে পারেন। হযরত আনাস (রা.)-এর জন্যে সন্তান সংখ্যাধিক্যের এবং দীর্ঘায়ু লাভের দোয়া করেছিলেন। এসব দোয়া অক্ষরে অক্ষরে কবুল হয়েছিলো।
৪. সহীহ হাদীসসমূহে রসূল (স.)-এর কিছু কিছু ভবিষ্যত বাণীর উল্লেখ পাওয়া যায়। যেসব ভবিষ্যত বাণী অক্ষরে অক্ষরে পূর্ণ হয়েছিলো। যেমন ইয়েমেন, বসরা এবং পারস্যের ওপর মুসলমানদের জয়লাভ। হযরত আম্মার (রা.)-এর ক্ষেত্রে ভবিষ্যত বাণী করেছিলেন যে, তাকে একদল অত্যাচারী লোক হত্যা করবে। বাস্তবে তাই ঘটেছিলো। অথবা কনস্টাটিনোপল মুসলমানরা অধিকার করবে, এ রকম ভবিষ্যতবাণীও যথাযথ প্রমাণিত হয়েছিলো।
হিজরতের সময় পাহাড়ের গুহায় কবুতরের ডিম পাড়ার ঘটনার কথা কোনো সহীহ হাদীসে উল্লেখ পাওয়া যায় না। মাকড়শার জাল তৈরীর ঘটনার কথাও তেমনি বর্ণনায় যঈফ। কোনো কোনো বর্ণনায় আলেমরা সঠিক বলেছেন। কোরআনের ভাষায় বোঝা যায়, আল্লাগ তায়ালা রসূল (স.)-কে অদেখা জিনিস দ্বারা সাহায্য করেছিলেন, অথচ কবুতরের ডিম বা মাকড়শার জাল তো কোনো অদেখা জিনিস নয়। এ কারণে এ রকমের বর্ণনা বিশ্বাস করা যথাযথ মনে হয় না।
*** জবাব দিয়েছেন শায়খ ইউসুফ আল কারদাওয়ী ***
*** অনুবাদ করেছেনঃ হাফেজ মুনির উদ্দীন আহমদ ***
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে
আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।
প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।
ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন
জাম গাছ (জামুন কা পেড়)
মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান
গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন
অনির্বাণ শিখা
রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।
আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=
©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....
মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।
ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন
এশিয়ান র্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!
যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন