somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এ জা্র্নি অন ফুট

২৬ শে নভেম্বর, ২০১০ ভোর ৪:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

" মামা, পরোটা আর ডাল-ভাজি...ঝোল মাইরা দিও । "

আজকে এই নিশীথ-ভোজনের কোন সাথী পাইনি আমি । এমনি হয়, দরকারের সময় আমি কিছু পাই নাহ, হোক তা পরীক্ষার admit card বা বন্ধুদের খোজ।

পেনাং এর এই মামাটার যেন আজ মাঘ মাসের বাঘ মারা শীত পড়েছে। ফূলহাতা শার্ট এর হাতা, তার ফূল হাতা জামার ভিতর দিয়ে উকি মারছে । অবশ্য, আমি নিজেও এমন কোনো কেতাদুরস্ত মানুষ না। নিজে পরে আছি আমার প্রিয় হাফ প্যান্ট ও টি-শার্ট (আমার জা্তীয় পোষাক) । তার উপর চাপিয়েছি কালো চাদর, তাও যতটা না শীতের জন্য তার থেকে বেশী বোধহয় আমার- " শীতকালে চাদর না জড়ালে ভার্সিটির ছাত্র ছাত্র ভাব আসেনা " জাতীয় ভ্রান্ত ধারনার কারণে।:P

এমন সময় চোখ পড়লো পেনাং এর সামনে থামা চার চাক্কার বাহন এর দিকে। সেখান থেকে নেমে এলেন এক মধ্য বয়স্ক লোক , তার পিছন পিছন নাম্লেন এক লাল-নীল পরী । মুখে প্রসাধনীর যথেচ্ছ ব্যাবহারের জন্যই বোধ হয় তার গায়ের চাপা রঙ ঢাকা পড়ে যাবার বদলে আরও অবাধ্য ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। লাল-নীল পরীর সেই নিষিদ্ধ সৌন্দর্য্য অবলোকন করতে করতেই চলে আস্লো আমার খাবার। সবাই বলে, "হল এ থাকলে নাকি ওজন কমে ।" আমার উলটা,এর কারণ যে, "ডেইলী ব্যাসিস" এ শেষ রাতের এই পেনাং ভ্রমণ তা আশা করি আর বলতে হবে না ।যাই হোক, এত কিছু ভাবাভাবির সময় নাই, চরম ক্ষুধা লাগসে আমার আজকে। গরম পরোটা ছিড়ে মুখে দিতেই, "ওয়াক ! মামা, কিসের ঝোল দিসেন ? নারকেল নারকেল লাগতেসে X( " মামার উত্তরের সারাংশ এই যে, ঝোল শেষ হয়ে যাওয়ায় আজকে ভাজির সাথে "মুরগির স্যুপ " নামক আমার চরম অপছন্দনীয় বস্তুর তথাকথিত ঝোল দেয়া হইছে । মেজাজটাই খারাপ হয়ে গেল। শালার আজকেই সব খারাপ কিছু আমার সাথেই হবার ছিলX(( নিতান্ত অনিচ্ছা সত্তেও খাওয়া শুরু করলাম।

"মামা, আপ্নের বিল হইসে ৩২টাকা ।" মামার এহেন মিথ্যাচারীতার কারণ জিজ্ঞাসা করতে জানলাম এক নতুন তথ্য, বাংলাদেশ সরকার এর বিধি মোতাবেক এখন থেকে ১৫ পারসেন্ট ভ্যাট দিতে হবে । " তাইলে ত, এই টাকাটা তোমার বকশিশ এর থেকে যাবে মামা ।" এই কথা বলতেই মামা লাইন এ ;) কয়-"যান আপ্নের দেওন লাগব না। "

পেনাং থেকে বের হয়ে হাটা ধরলাম।রাস্তার পাশে খুপ্রি দোকানটা দেখে কেন জানি প্রচণ্ড সিগ্রেট এর পিপাসা পেল।অথচ, আমি ত সিগ্রেট খাই না, বরং সিগ্রেটখোর বন্ধুদের কে বুক ফুলিয়ে বলি-"এ ঠোট আজো কুমারী :P" । তবে আজ কেন যে জিনিসটার কোন অভিজ্ঞতাই নেই,তার অভাব বোধ হচ্ছে? কারো জন্য অপেক্ষারত অথবা চিন্তিত বা টেনশিত, এমন সময় হাতে সিগ্রেট ,মুখের ধোয়ায় উড়িয়ে দিচ্ছি সব অপেক্ষা, সব চিন্তা, সব টেনশন-ব্যাপারটার মধ্যে কেমন যেন একটা অন্তঃসারশূন্য হিরোইজ্‌ম এর গন্ধ পাই আমি। তবুও, আজ কেন জানি তেমন হিরো হতে খুব ইচ্ছা করছে।আমি আজ অন্তঃসারশূন্য বলেই হয়ত।


এতকিছু ভাবতে ভাবতে কখন যে হলের গেট এ এসে পড়েছি খেয়াল নেই। ভালোলাগার" জা্র্নি অন ফুট" টার হঠাৎ যবনিকা । ঠিক আমার আর " আমার ওর " মত।ভালো সময়গুলো শুরুর হবার আগেই কেন শেষ হয়ে যায়:((


"It's raining in my thoughts, everything will be washed away
A new bright way will open up"

চরম প্রিয় এই গানটা মুঠোফোনে বেজে উঠতেই সম্বিত ফিরে পেলাম।অবশেষে এল,সেই পরম আরাধ্য কল :)


বিঃ দ্রঃ
উপ্রোক্ত সব ঘটনাই বাস্তব ও সত্য, শুধু শেষ প্যারাটা বাদে। গল্পের মত, জীবনেও যদি সবসময় "হ্যাপি এন্ডিং" থাকত /:)/:)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:৫১
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×