" মামা, পরোটা আর ডাল-ভাজি...ঝোল মাইরা দিও । "
আজকে এই নিশীথ-ভোজনের কোন সাথী পাইনি আমি । এমনি হয়, দরকারের সময় আমি কিছু পাই নাহ, হোক তা পরীক্ষার admit card বা বন্ধুদের খোজ।
পেনাং এর এই মামাটার যেন আজ মাঘ মাসের বাঘ মারা শীত পড়েছে। ফূলহাতা শার্ট এর হাতা, তার ফূল হাতা জামার ভিতর দিয়ে উকি মারছে । অবশ্য, আমি নিজেও এমন কোনো কেতাদুরস্ত মানুষ না। নিজে পরে আছি আমার প্রিয় হাফ প্যান্ট ও টি-শার্ট (আমার জা্তীয় পোষাক) । তার উপর চাপিয়েছি কালো চাদর, তাও যতটা না শীতের জন্য তার থেকে বেশী বোধহয় আমার- " শীতকালে চাদর না জড়ালে ভার্সিটির ছাত্র ছাত্র ভাব আসেনা " জাতীয় ভ্রান্ত ধারনার কারণে।
এমন সময় চোখ পড়লো পেনাং এর সামনে থামা চার চাক্কার বাহন এর দিকে। সেখান থেকে নেমে এলেন এক মধ্য বয়স্ক লোক , তার পিছন পিছন নাম্লেন এক লাল-নীল পরী । মুখে প্রসাধনীর যথেচ্ছ ব্যাবহারের জন্যই বোধ হয় তার গায়ের চাপা রঙ ঢাকা পড়ে যাবার বদলে আরও অবাধ্য ভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। লাল-নীল পরীর সেই নিষিদ্ধ সৌন্দর্য্য অবলোকন করতে করতেই চলে আস্লো আমার খাবার। সবাই বলে, "হল এ থাকলে নাকি ওজন কমে ।" আমার উলটা,এর কারণ যে, "ডেইলী ব্যাসিস" এ শেষ রাতের এই পেনাং ভ্রমণ তা আশা করি আর বলতে হবে না ।যাই হোক, এত কিছু ভাবাভাবির সময় নাই, চরম ক্ষুধা লাগসে আমার আজকে। গরম পরোটা ছিড়ে মুখে দিতেই, "ওয়াক ! মামা, কিসের ঝোল দিসেন ? নারকেল নারকেল লাগতেসে
"মামা, আপ্নের বিল হইসে ৩২টাকা ।" মামার এহেন মিথ্যাচারীতার কারণ জিজ্ঞাসা করতে জানলাম এক নতুন তথ্য, বাংলাদেশ সরকার এর বিধি মোতাবেক এখন থেকে ১৫ পারসেন্ট ভ্যাট দিতে হবে । " তাইলে ত, এই টাকাটা তোমার বকশিশ এর থেকে যাবে মামা ।" এই কথা বলতেই মামা লাইন এ
পেনাং থেকে বের হয়ে হাটা ধরলাম।রাস্তার পাশে খুপ্রি দোকানটা দেখে কেন জানি প্রচণ্ড সিগ্রেট এর পিপাসা পেল।অথচ, আমি ত সিগ্রেট খাই না, বরং সিগ্রেটখোর বন্ধুদের কে বুক ফুলিয়ে বলি-"এ ঠোট আজো কুমারী
এতকিছু ভাবতে ভাবতে কখন যে হলের গেট এ এসে পড়েছি খেয়াল নেই। ভালোলাগার" জা্র্নি অন ফুট" টার হঠাৎ যবনিকা । ঠিক আমার আর " আমার ওর " মত।ভালো সময়গুলো শুরুর হবার আগেই কেন শেষ হয়ে যায়
"It's raining in my thoughts, everything will be washed away
A new bright way will open up"
চরম প্রিয় এই গানটা মুঠোফোনে বেজে উঠতেই সম্বিত ফিরে পেলাম।অবশেষে এল,সেই পরম আরাধ্য কল
বিঃ দ্রঃ
উপ্রোক্ত সব ঘটনাই বাস্তব ও সত্য, শুধু শেষ প্যারাটা বাদে। গল্পের মত, জীবনেও যদি সবসময় "হ্যাপি এন্ডিং" থাকত
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে ডিসেম্বর, ২০১০ ভোর ৫:৫১

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




