somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভালোবাসা , মুরগী-বসন্ত ও একজন সিংহপুরুষের আত্মোপলবদ্ধি B:-) B:-)

১৬ ই এপ্রিল, ২০১১ রাত ১০:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিঃ দ্রঃ আমার মত সিংহপুরুষ কিভাবে মুরগী-বসন্ত বাধালো -এটা ভাবা ছাড়া গত কয়েকটা গৃহবন্দী দিন,আমার আর কিছুই করার ছিল না । কথায় আছে,নেই কাজ তো খই ভাজ । আর এই ভাজাভাজির ভুক্তভোগী হবার সৌভাগ্য ( :P) যাদের হয়েছে,আমি সেই সব বিদেহী পাঠকের রূহের মাগফিরাত কামনা করি ।


প্রেম করবো। নাহ প্রেমে করবো না বলে বলা হয়ত প্রেমে পড়বো বলাটাই শ্রেয় । প্রেমে পড়ার মধ্যে কেমন একটা নাটকীয় রোমান্টিসিজম কাজ করে। আর তাছাড়া প্রেম করাটা লং টার্ম । আমার মধ্যে সেইটা নেই। হঠাৎ শখ হয়েছে -“প্রেম চাই,দিবি কিনা বল” –এই টাইপের শখ।


অনেকেই হয়ত এটুকু শুনেই ভেবে বসে আছেন, গরীবের ঘোড়ারোগ, নির্ঘাত ছেলে চালচুলোহীন,নিজের কিছুর ঠিক-ঠিকানা নেই,প্রেম করবো প্রেম করবো ভাব ধরেছে ।

তাদের জ্ঞ্যাতার্থে বলছি, প্রেমের বাজারে আমার বাজারদর মন্দ না । বউ পালা আর হাতি পালা নাকি একি জিনিস । এর আজকাল্কার দিনে গার্লফ্রেন্ড পালা তো তাইলে ডাইনোসর পালা । তো,নিতান্ত ছোটখাট একটা ডাইনোসর আমি পালতেই পারি। লেখাপড়ায়ও মন্দ নাহ। পড়ছি দেশের সর্বশ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠের একটির সবচাইতে বাজারদরোয়ালা সাব্জেক্টে । ঠিক টল-ডার্ক-হ্যান্ডসাম না হলেও মানিব্যাগটা বেল্টের নিচে ফুলে ফেপে ওঠা ভুড়ির প্রায় সমানুপাতিক বলে আমার সাতটা না হোক এরকম দু-এক্টা খুন মাফ করাই যায় । গাড়ি হাকিয়ে মাঝে মাঝেই ভার্সিটি থেকে বাড়ি যাই । আর বাসা সেটাও লাল্মাটিয়ার মত জায়াগায় ২৮০০ স্কয়্যার ফিটের এলাহী কারবার।
এবার যারা ভাবছেন বড়লোকের এই নষ্ট দুলাল লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে নিজের ঢোল নিজেই পিটায়ে ফাটায় ফেল্লো,তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা । ছোটখাট ডাইনোসর পালতে পারবো তবে সেগুলো পাব্লিক ভার্সিটি জাতের হতে হবে, প্রাইভেট প্রজাতি আমার আয়ত্তের বাইরে( এই ব্যাপারে একটা জিনিস মনে রাখা অবশ্য কর্তব্য, ব্যতিক্রম জিনিস কখনো উদাহরণ হতে পারেনা) । বাজারদরোয়ালা সাব্জেক্টে অনেকেই পড়েন,যারা কিনা টল-ডার্ক-হ্যান্ডসাম । এর গাড়ি-বাড়ি, ওটা অর্থ নয় সম্মানকেই আজীবন আকড়ে ধরা সরকারী চাকুরে বাবার জন্য গনপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কতৃক বরাদ্দকৃত ।

বছর দুয়েক পর যখন বাবা রিটায়ারমেন্ট এ যাবেন, তখন এই সরকারী পাজেরো এর কোয়ার্টার কোনোটাই থাকবে নাহ । হয়ত তখন আমিও টিপিকাল মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির বড় ছেলের মত সকাল সন্ধ্যা চাকুরী খুজে ফিরবো নয়তো এখন টিউশনি করে যা টাকা কামাই তার দুই-তৃতীয়াংশ বেচনের চাকুরী করে সংসারের হাল ধরবো ।নব্বই এর দশকের উপন্যাসের নায়ক হলে আমার ছট একটা কলেজ পড়ুয়া বোন ও থাক্তো। সেই বোনের এক অতীব সুন্দরী বান্ধবী থাকতো, যে কিনা হতো আমার প্রেমে পাগল । কিন্তু, তিন তিনটি ছেলে সন্তানের জন্ম দিয়ে আমার পিতা-মাতা আমার সেই নায়ক হবার আশায় গুড়ে-বালি দিয়েছেন বহু আগেই। আচ্ছা, একটু ভেবে বলুন ত, হুমায়ুন-মিলনের শেষ কোন উপন্যাসে তিন ভাই ওয়ালা ফ্যামিলি ছিল? হয় তিন বোন, নাইলে দুই বোন এক ভাই, কিংবা বাবা-মার এক্মাত্র ছেলে ।এর বাইরে আমাদের উপন্যাস বের হতে পারেনি, এর পারলেও সেখানে পাঠকের জন্য সুখাদ্য কোন গল্প হয়নি ।

তো এতসব কেচ্ছা-কাহিনী বলার মানে কী? মানে হল এটা বোঝানো যে কোনরকম প্ররচনা,অনুপ্রেরণা বা পারিপার্শ্বিকতার জন্য নয়, আমার প্রেম করার শখ নিতান্তই একজন সাধারণ যুবকের হরমোন-তাড়িত মস্তিষ্ক প্রসূত ভাবনা।

তো প্রেম করার এই শখ পুরোন করতে গিয়ে- আমি এক অমোঘ সত্য আবিস্কার করলাম , আবিস্কার ঠিক নাহ, আত্মোপলবদ্ধি বলা চলে । কিছু ছেলে আছে ধুপ করে যাদের প্রেমে পড়ে যাওয়া যায়, আর এক প্রকার আছে যাদের সাথে প্রেমটা করা যায় অর্থাৎ চালিয়ে যাওয়া যায় আর কি । প্রথম প্রকারের প্রেমটা এক তীব্র ঝাপ্টায় ভাসিয়ে নিয়ে যায়,নিয়ে কোথায় যে আছড়ে ফেলবে তার ঠিক-ঠিকানা নেই। বেশিরভাগ সময়ই এই প্রাথমিক ঝাপ্টার পরের অধ্যায়টা হয় আশাভঙ্গের কথকতা । কারণটা ও অজানা নয়। আজকাল মেয়েরা প্রথমে প্রথমে কেয়ারলেস ছেলের প্রেমে পড়ে। কিন্তু পরস্পরকে মুগ্ধ করার প্রাথমিক পর্বের রেশ কাটতেই যখন মেয়েটি আবিস্কার করে যে ছেলেটি আসলেই যাবতীয় বিষয়ে কেয়ারলেস, তখন সেই ভালবাসা বলেন আর ভাললাগাই বলেন, তা পিছনের দরজা দিয়ে পালায়।
তো আমি মহাশয় এই ক্যাটাগরীতে পড়ি ।এইজন্যই প্রেমে পড়ার খুব শখ, করা তো আমার দ্বারা হবে নাহ। এবার সত্যি সত্যি হাত তুলেন তো, কয়জন ভেবেছেন-“এই ছেলে আসলে খেলুড়ে-বালক(playboy এর একটা হাল-ফ্যাশ্নের বাংলা করার প্রচেষ্টা,আজকাল এইগুলা ব্লগে ভালো চলে।উদা- মুঠোফোন) ।” যদি ভেবে থাকেন ত আপনার অর্ধেক নম্বর কাটা যাবে, কেননা চিন্তা-চেতনা-মননে পুরোপুরি খেলুড়ে-বালক এই ছেলেটি খেলোয়াড়ের অভাবে আজো শুন্য রানে নট-আউট এবং যতই দিন যাচ্ছে তার ততোই মনে হচ্ছে যে স আজীবন নন-স্ট্রাইকিং এই শুন্য রানে নট-আউট থেকে যাবে।

আমার সবসময় মনে হয় প্রতিটা মানুষ একটা নয়,অর্ধেক্টা হৃদয় নিয়ে জন্মায় । বাকী অর্ধেকটা থাকে অন্য একজনের কাছে । সেই একজন- যার জন্য গভীর রাতের নিঃসংগতাও দুঃখবিলাস হয়ে ওঠে, যার যাদুতে দুই টাকার বাদামও আধা ঘন্টা ধরে খাওয়া যায় ,যার উপর অভিমান করে সারাটা দিন পার করে দেয়া যায় অবলীলায়,যার ছোটছোট জিনিসগুলো ও এক অদ্ভুত ভালোলাগার জন্ম দেয় মনের গহীনে.............. সেই অন্য একজন,বিশেষ একজন,কাছের একজন ,ভালোবাসার একজন ।


অকর্মন্য লোক যে একদম কিছু পারেনা তা ঠিক না। একটা কাজ তারা খুব ভালো পারে, আর তা হলো তাদের ব্যর্থতার কারণ দাড় করানো।শুধু দাড় করিয়েই তারা ক্ষ্যান্ত দেন না, সেই অসার কারণের পেছনে একশ একটা যুক্তিও দাড় করান । আমিও তেম্নী উপরে কত-শত বিচার বিশ্লেষণ ই না করলাম।
তারপরও, পৃথিবীর অন্য কোন কোণায় আথবা হয়ত অতি কাছেই, আমার মতোই আরেক অকর্মন্য বসে আছে -আমার হৃদয়ের বাকী অর্ধেক্টা নিয়ে। বসে আছে, একবুক অসার ভালোবাসার একশ-এক্টা ব্যর্থ যুক্তি নিয়ে- এটা ভাবতে আমার ভালোই লাগে । সেই ভালো লাগা নিয়েই আমার বেঁচে থাকা, আমার পথ চলা, আমার অপেক্ষা ।

২৫টি মন্তব্য ২৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×