জাতির পিতা সাধারণত হন একজন পরিশ্রমী মানুষ, যিনি প্রাণপাত করে তার দেশকে উন্নত করেছেন। অথবা যিনি দেশের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। দুর্ভাগ্য বাংলাদেশের। এদেশের জাতির পিতা ছিলো গলির মোড়ে আড্ডা পেটানো এক বখাটে টাইপের লোক। নামকোবাস্তে পেশায় বীমা কোম্পানীর দালাল, আর বাস্তবে পাকিস্তানী শিল্পপতিদের কাছ থেকে মাসোহারা পাওয়া এক উমেদার রংবাজ। যার কাজ ছিলো সোহরাওয়ার্দী ভাষানী এরকম বড় নেতাদের পেছন পেছন দৌড়ানো। আর এখানে ওখানে মারামারি করে জেলে যাওয়া। মারামারি করতে করতে নেতা হয়ে সংসদে গিয়ে চেয়ার ছুড়ে মেরে সংসদের স্পিকারকে পর্যন্ত মেরে লেছিলো এই পান্ডা।
ঠিকমতো বিচার না হলে কি হয় তার আসল উদাহরণ শেখ মুজিবুর রহমান। শাহেদ আলীকে হত্যার দায়ে তার বিচার হওয়া উচিত ছিলো। কিন্তু হলো না, ফলে এক সময়ের সেই বখাটে আরেক সময়ে গিয়ে অনুন্নত এবং পশ্চাতপদ দেশটার জনগণের আবেগকে কাজে লাগিয়ে ফেললো।
তবে ন্যাচারাল পান্ডা হলে যা হয়! সরাসরি মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই, সবসময় পেছন দরজা দিয়ে বের হয়ে ষড়যন্ত্রের অভ্যাস। আগেও ভারতীয়দের সাথে আগরতলায় দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করেছিলো মুজিব। একাত্তরে করলো হানাদার পাকিস্তানীদের সাথে। নেগোসিয়েশন করে পুরো দেশের মানুষকে পাকিস্তানি আর্মির হিংস্রতার মুখে ছেড়ে দিয়ে পাকিস্তান চলে গেলেন জাতির আব্বা। খুবই দায়িত্ববান আব্বা বটে!
শেখ মুজিবের সারা জীবনের সব কাজকর্মই তার ছোটলোকামির খাঁটি উদাহরণ। এই ছোটলোকামো তার সন্তান নাতি নাতনীর রক্তেও বংশপরম্পরায় প্রবাহিত। এ ধরণের লোকরা যোগ্য লোকদের মুখোমুখি হতে পারেনা। মুজিবও কখনো পারেনি।
নিজ দলের তাজউদ্দিনকেই যে হিংসা করতে পারে, অন্যদলের ফজলুল কাদেরের বিষয়ে তার অনুভূতি জানার জন্য মুন্নী সাহা হওয়ার দরকার নেই। জেলখানায় বিষ খাইয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নেতাকে হত্যার কাপুরুষতা তার পক্ষেই সম্ভব ছিলো। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বাবা ফজলুল কাদের চৌধুরীকে এভাবে হত্যা করেছিলো বাঙালি জাতির এই তথাকথিত জনক আব্বা।
আওয়ামী প্রতিহিংসা ভয়াবহ এক জিনিস। বাবা হত্যা করেছিলো যাকে, মেয়ে এসে হত্যা করছে তার ছেলেকে।
ফজলুল কাদের পাকিস্তানপন্থী মুসলিম লীগ নেতা ছিলেন, কিন্তু শত্রুও স্বীকার করবে তার সাহসিকতার কথা। তার ছেলে সালাউদ্দিন কাদেরও আধিপত্যবাদ ও দালালী- বিরোধী সাহসিকতার জন্য প্রাণ হারাতে যাচ্ছেন। যুদ্ধের সময় বাংলাদেশে ছিলেন না তো কি হয়েছে, বাপ তো পাকিস্তানপন্থী নেতা ছিলেন। যথেষ্ট হয়েছে, শাহবাগি জাস্টিস অনুযায়ী সকল অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে। বিখ্যাত গল্প, একবার নদীতে পানি খেতে থাকা নাদুসনুদুস গাধাকে দেখে বাঘের খুব লোভ হলো। তাকে বললো তুই পানি ঘোলা করছিস, সুতরাং তোকে আমি এখন খাবো। নিরীহ গাধা বললো হুজুর আমি তো ভাটিতে দাঁড়িয়ে পানি খাচ্ছি, পানি আসছে আপনার ঐদিক থেকে। আমি কিভাবে আপনার পানি ঘোলা করলাম? তখন বাঘ চিন্তাভাবনা করে রায় দিলো, তো কি হইছে? তোর বাবা দাদারা আগে উজানে গিয়ে পানি ঘোলা করছিলো তাই আমার অনেক অসুবিধা হইছে। বাংলাদেশের দলান্ধ জুডিশিয়ারীও চিন্তাভাবনা করে পেয়েছে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী যুদ্ধাপরাধী ছিলো।
এখন পুরো দেশের মিডিয়া, শাহবাগি আর আওয়ামী লীগারের দল প্লাস হিস্টিরিয়াগ্রস্থ দেশপ্রেমিক জনতা সেই জাতির পিতা মুজিবের যোগ্য অনুসারী হিসেবে দলবদ্ধ জংলী নাচানাচিতে নেমে পড়েছে। রক্তের মাঝে আদিম সেই ক্যানিবালিজমের মোক্ষম টান। নেমে আসছে রাত, হাজার বছরের পুরনো সেই রাত!
যাইহোক এ ফাসির রায় অবশ্য কোনভাবেই অপ্রত্যাশিত কিছু না। শেখ মুজিবের মতো একটা বাটপার যেই জাতির আইকনিক ফিগার হয়, সেই জাতির মাঝে সাহসী লোকদের অস্তিত্ব সহ্য না হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। এখন শুধু দেখার বিষয় হলো সাহসী সালাউদ্দিন কাদের কতটা সাহসী? তিনি বাংলাদেশের ডাইনীর কাছে প্রাণভিক্ষা করবেন? না কি কাদের মোল্লা এবং কামারুজ্জামানের মতো অবাঙালি- সুলভ সত্যিকার সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে নিজেদের টাউট মুজিব আব্বার সন্তান না হওয়াটা শেষপর্যন্ত প্রমাণ করতে পারবেন?