somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএনপির সাম্প্রতিক আত্মরতিমূলক কার্যকলাপ নিয়ে কিছু কথা

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সম্প্রতি শেষ হওয়া পৌর ও সংসদ উপনির্বাচনে বিএনপি আশাতীত সাফল্য অর্জন করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনটিই বলছেন। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এই ফলাফল স্বাভাবিক। আওয়ামী শাসনামলের গত দুইবছরে সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন হয়নি। বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে পূর্বের চেয়ে আরো খারাপ হয়েছে। আর সেই প্রতিক্রিয়া সাধারণ জনগণ সুযোগ পাওয়া মাত্রই দেখিয়ে দিয়েছে। এতে আওয়ামী লীগ কতটা আশাহত তা পুরোপুরি বুঝা না গেলেও ওবায়দুল কাদেরের মতো যারা ক্ষমতার শীর্ষে আরোহণ করতে পারেনি তাদের নসিহতমূলক প্রেসক্রিপশন দেখে বুঝা যায় এত তাড়াতাড়ি এরকম একটা ধাক্কা তারাও আশা করেনি। এখন কথা হলো, রাজনীতিবীদরা কি আশা করবে না করবে তাতে জনগণের কিছু যায় আসেনা, তারা সুযোগ পাওয়া মাত্রই সমুচিত জবাব দিবে।

পৌর ও সংসদ উপনির্বাচন মোটামুটি সুষ্ঠু হয়েছে বলা যায়। সেটা যে শুধু আমার ক্ষুদ্র দৃষ্টিতে তা নয় বরং নির্বাচন সংশ্লিষ্ট পর্যবেক্ষক মহলের ধারণাও তাই। যেটুকু সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে এটাই ঢের বেশি। সেটা এই জন্য যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় এর নজির খুব একটা নেই। এটা আমাদের কলুষিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির একটা অংশও বটে। স্বৈরাচার এরশাদের আমলে যদি এই সংস্কৃতি চালু হয়ে থাকে, তাহলে সেটা পূর্ণতা পেয়েছে বিএনপির দুই আমলে। তথাকথিত গণতান্ত্রিক সরকারের সময় এই জবরদস্তি তথা বাহুবলের মাধ্যমে নির্বাচনের রায় নিজের পক্ষে নেয়ার ধারা শুরু করে বিএনপি বিগত নব্বইয়ের দশকে মাগুরা উপনির্বাচনের সময়। আর ছিয়ানব্বইয়ের প্রহসনের নির্বাচনের কথা নতুন করে নাইবা বললাম। সে ধারা তারা অব্যাহত রাখে তাদের সর্বশেষ পিরিয়ডেও। ভুরু চাছা ম্যাডামের কাছের মানুষ বলে প্রচারিত ফালুকে উপনির্বাচনে জিতিয়ে আনার জন্য তারা দলীয় সন্ত্রাসী বাহিনী এবং রাষ্ট্রীয় ঠ্যাঙ্গারে বাহিনীকে যেভাবে ব্যবহার করেছে তা আমার স্বচক্ষে দেখা। ক্ষমতা থাকলে সেটার অপব্যবহার যে কত বেশি পরিমাণে করা যায় সেটা সর্বক্ষেত্রে খুব ভালো ভাবেই দেখিয়েছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ যে খুব একটা পিছিয়ে তা কিন্তু নয়।

সদ্য সমাপ্ত উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত হবিগঞ্জে একটি আসন তারা হারিয়েছে। তাও হাজারখানেক ভোটের স্বল্প ব্যবধানে। ক্ষমতার অঙ্গুলি হেলনের মাধ্যমে চাইলেই তারা ফলাফল নিজেদের অনুকূলে আনতে পারত। কিন্তু সেটা তারা না করে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়ার যে চেষ্টা করেছে এইজন্য তারা সাধুবাদ পেতেই পারে। সম্ভবত এটা বিএনপির ভালো লাগেনি। কারণ তারা এমনটি চায়নি, তারা চেয়েছিল তাদের সময়ে তারা যেভাবে নির্বাচনে চুরি-চামারি করেছিল আওয়ামী লীগও তা করবে। এতে তারা রাজপথে ঘেউ ঘেউ করার কিছু সুযোগ পেত। কিন্তু নষ্টামি যাদের রক্তের সাথে মেশা তারা কি এগুলো না করে পারে। তাই এরা বেছে নিল বি-বাড়িয়া উপনির্বাচন। বলল এখানে আওয়ামী লিগ আমাদের মতো পুকুর চুরি করেছে। আমরা যেভাবে কেন্দ্র দখল করে সীল মারতাম, তারাও তাই করেছে। অতএব, এ নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে পুনঃনির্বাচন দিতে হবে। এমনকি বিএনপির কেন্দ্রের নির্দেশে আজ বি-বাড়িয়ায় হরতাল পালিত হয়েছে। এসংক্রান্ত ঘেউ ঘেউ ইদানীং করছেন নজরুল ইসলাম খান। সম্ভবত মাতাল দেলোয়ারের মুখে মদের দুর্গন্ধের তীব্রতায় কেউই ঠিকতে পারছিল না। যাইহোক, আওয়ামী লীগের আসনে পাস করলে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়, আর ফেল করলে কারচুপি হয় বিএনপির এধরণের কথা এখন পাবলিক আর খায় না। আর এই বিষয়গুলো এতা সস্তা এবং বহুল পরিচিত যে পাবলিকের এইগুলো সিটিএন। এরপরও ক্রমাগত ঘেউ ঘেউ করেই যাবে। এধরণের চুতিয়াগিরি যত কম করবে দেশ ও নিজের ততই ক্ষতি। ভুরু চাছা ম্যাডাম এবং তার ভাঁড়বৃন্দ এটা উপলব্ধি করলেই হলো।

সর্বশেষ সংসদে যাওয়া নিয়েও বিএনপি আছে দোদুল্যমানতায়। দৃশ্যত এখন তাদের সংসদে যোগ দিতেই হবে। না হলে ফাও বেতন-ভাতা তোলা বন্ধ হয়ে যাবে। এরকম চরম মুহূর্তেও তারা আত্মরতি চালিয়ে যাচ্ছে। আজ তাদের চীফহুইপ দিলেন নতুন শর্ত। সেটা হলো আত্মস্বীকৃত রাজাকার সাকা চৌধুরীকে সংসদে যাওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। আরে, চুতিয়ারা তার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের তদন্ত হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা তাদের এই অনায্য দাবি তারা নিজেরাই নিজেদের পশ্চাৎদেশে ঢুকিয়ে দিবে। কারণ এছাড়া সদস্যপদ বাচিয়ে রাখার আর কোনো উপায় নেই।

এখন বিএনপির উচিত স্বমেহন বাদ দেয়া। কারণ অতিরিক্ত স্বমেহনের পরিণতি ভালো না। নাহলে জনগণ এমন দাওয়াই দিবে যে ত্রিশ সিটের দলের টিকে থাকাই দায় হবে।
৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×