somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আর্সেনাল vs বার্সেলোনাঃ উত্তেজনাপূর্ণ এক ম্যাচের রিভিউ

১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১০:১২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফুটবল আমার প্রিয় খেলা। বিশেষ করে ইউরোপিয়ান ফুটবল খুবই চিত্তাকর্ষক। সিরি এ, লা লিগা ও প্রিমিয়ার লীগের খেলা নিয়মিত দেখার চেষ্টা করি। আর চ্যাম্পিয়নস লীগের জৌলুসতো আরো বেশি। দ্বিতীয় রাউন্ডের ড্র হওয়ার পর থেকেই এই ম্যাচকে ঘিরে উত্তেজনা ছড়াচ্ছিল। একে দুই ইউরোপিয়ান জায়ান্ট তার উপর গতবছরের ম্যাচের প্রেক্ষাপট। সেবার প্রথম লেগ ২-২ গোলে ড্র হওয়ার পর ন্যুক্যাম্পে দ্বিতীয় লেগে লিওনেল মেসির অতিমানবীয় পারফর্ম্যান্সে আর্সেনালকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠেছিল বার্সেলোনা। যার জন্য এই ম্যাচকে ঘিরে একটা প্রতিশোধের আবহ তৈরি হয়েছিল। বলা যায় প্রথম লেগ ২-১ গোলে জিতে প্রতিশোধ নেওয়ার পাশাপাশি লড়াইয়ে আপাতত এগিয়ে রইল আর্সেনাল।

কিক অফের পরপরই ম্যাচে উত্তেজনা চলে আসে। শুরুতেই আক্রমণের ঢেউ তোলে ক্যাটালান সংস্কৃতির ধারক-বাহক বার্সেলোনা। অপরদিকে আর্সেনাল কাউন্টারআ্যাটাক নির্ভর খেলা খেলছিল। তেমনি পাল্টা আক্রমণ ৬ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছিল আর্সেনাল। অধিনায়ক সেস্ক ফ্যাব্রেগাস মাঝমাঠ থেকে বল ধরে দ্রুতগতিতে কয়েকজনকে কাটিয়ে বল ক্রস করেছিলেন ধাবমান স্ট্রাইকার রবিন ফন পার্সির দিকে। পার্সির জোরালো হেড প্রচেষ্টা বার্সা কিপারের তৎপরতায় নস্যাৎ হয়। পরের মিনিটেই মেসি মাঝবৃত্ত থেকে বল নিয়ে দুরন্ত গতিতে এগিয়ে যাওয়ার সময় আর্সেনালের এ্যালেক্স সং তাকে ফাউলের মাধ্যমে থামান। বিনিময়ে হলুদ কার্ড পান তিনি।

১৪ মিনিটের ম্যাচের সবচেয়ে সহজ সুযোগ নষ্ট করেন মেসি। মাঝমাঠ থেকে মেসি এবং ভিয়া ওয়ান টু ওয়ান খেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ মেসি দিকপরিবর্তন করে চকিতে বক্সের ভেতর ঢুকে যান। সাথে সাথ ভিয়ার ডিফেন্সচেরা পাস খুঁজে পায় মেসিকে। চ্যাম্পিয়নস লীগে অভিষিক্ত আর্সেনাল কিপারকে একা পেয়েও বল বাইরে মারেন তিনি। তার আলতো চিপ বার ঘেষে চলে যায়।

২৬ মিনিটে আসে ম্যাচের প্রথম গোল। দ্রুত গতিতে বল নিয়ে উপরে উঠে বক্সে লব করেছিলেন ফ্যাব্রেগাস কিপার ভালদেস বলের ফ্লাইট বুঝতে না পারলেও এরিক আবিদাল হেড করে বিপদমুক্ত করেন। মেসি সেই বল ধরে ড্রিবল করে দুজনকে ছিটকে ফেলে এগিয়ে যান। পাস বাড়ান ভিয়ার দিকে বিপদ বুঝতে পেরে আর্সেনাল কিপার পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি আলতো টোকায় বল জালে জড়ান ভিয়া।

গোল খেয়ে হতোদ্যম হয়নি আর্সেনাল বরং আরো গুছিয়ে উঠে। এর মধ্যে ২৮মিনিটে মেসির একটি গোল অফসাইডের কারনে বাতিল হয়। ২৯ মিনিটে পার্সির আরেকটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। তবে মাঝ মাঠে বার্সেলোনাকে অগোছালো মনে হয়েছে। ইনিয়েস্তা ছিলেন নিষ্প্রভ। অবশ্য মাঝে মাঝে জাভির ঝলক দেখা যাচ্ছিল। অন্যদিকে লেফট ব্যাক দানি আলভেস ছিলেন যথেষ্ঠ উজ্জ্বল। ১-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় বার্সেলোনা।

বিরতির পর নতুন উদ্যমে শুরু করে আর্সেনাল। এসময় দুই সৃষ্টিশীল মিডফিল্ডার সামির নাসিরি ও ফ্যাব্রেগাস মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রন নেন। ফলে আাক্রমণভাগকে অনবরত বল যোগান দিয়ে যান। ৫৭ মিনিটে ফ্যাব্রগাসকে ফাউল করে পিকে হলুদ কার্ড দেখেন। পরপর দুম্যাচ হলুদ কার্ডের কারনে দ্বিতীয় লেগে তাকে সাইডবেঞ্চে বসে কাটাতে হবে। ৬৫ মিনিটে ভালদেসের দক্ষতায় আবার রক্ষা পায় বার্সেলোনা। ৬৮ মিনিটে একটি হাফচান্স মিস করেন মেসি।

৭৮ মিনিটে একটি সংঘবদ্ধ আক্রমণ থেকে গোল পায় আর্সেনাল। উইং থেকে পাওয়া ক্রস চমৎকারভাবে হেড করে জালে পাঠান পার্সি। গোল পেয়ে আরো উজ্জীবিত হয়ে উঠে আর্সেনাল। ফলশ্রুতিতে প্রবলবেগে ঝাপিয়ে পড়ে প্রতিপক্ষের উপর।

কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ফলও পান। ৮৩ মিনিটে প্রায় মাঝমাঠ থেকে সামির নাসিরির দিকে লম্বা এক থ্রু বাড়ান পুরো ম্যাচে অসাধারণ খেলা ফ্যাব্রেগাস। থ্রু ধরে কিছুটা এগিয়ে তিনি পাস বাড়ান আগুয়ান স্ট্রাইকার আন্দ্রে আরশাভিনের দিকে কাল বিলম্ব না করে কিক নেন গোলে। ভালদেস কিছু বুঝে ওঠার আগেই বল জালে জড়ায়। উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা এমিরেটস স্টেডিয়াম।

বাকিসময় কোনদলই আর গোল আদায় করতে পারেনি। বার্সোলোনার অর্জন বলতে মুল্যবান এক এ্যাওয়ে গোল। ৮ই মার্চ পরবর্তী লেগে তারা নিজেদের মাঠে খেলতে নামবে।

ম্যাচের কিছু উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যানঃ

অন টার্গেটে আর্সেনাল কিক নিয়েছে ৭টি, বার্সেলোনা ৫টি। কর্ণার পেয়েছে আর্সেনাল ৪টি, বার্সেলোনা ১টি। আর্সেনাল ফাউল করেছে ১৬বার, বার্সেলোনা ১৩ বার। আর্সেনাল হলুদ কার্ড পেয়েছে ৪টি, বার্সেলোনা ২টি। বল পজিশন আর্সেনাল ৩৯%, বার্সেলোনা ৬১%। আর অফ টার্গেটে দুদলই ৩টি করে কিক নিয়েছে।

ডিসক্লেইমারঃ গতরাতে খেলা দেখার পর এই পোস্ট লিখতে বসেছিলাম। অর্ধেক লেখার পর জুমের লিমিট শেষ হয়ে যায়। সকালে দুইবার অর্ধেক করে লেখার পরপরই বিদ্যুৎ বিভ্রাটে আর লেখা হয়নি। ক্রিকেট উম্মাদনার মধ্যে এই পোস্ট দেওয়ার জন্য দুঃখিত।
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১১ রাত ১১:২৫
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যুক্তরাষ্ট্রে ইসরাইল বিরোধী প্রতিবাদ বিক্ষোভ

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ০৩ রা মে, ২০২৪ সকাল ৮:০২

গাজায় হামাস উচ্ছেদ অতি সন্নিকটে হওয়ায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিউইয়র্ক ও লসএঞ্জেলসে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পরেছিল। আস্তে আস্তে নিউ ইয়র্ক ও অন্যান্ন ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভকারীরা রীতিমত তাঁবু টানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছিল।


... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×