somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রতিশোধ-> লজ্জার বদলে লজ্জা (ফার্ষ্ট ডেট উইথ হিসু কাহিনী পার্ট - ৪)

০৭ ই ডিসেম্বর, ২০১১ রাত ৯:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী! (কিছু লাইনের জন্য ছোটদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক)
হিসু কাহিনীর পরের কাহিনী (ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী - ২)
আমার জানের বড় ভাইয়ের অবৈধ প্রেম ও আমার লজ্জা পাওয়া! (হিসু কাহিনী পার্ট ৩)

তারপর

এত বড় একটা লজ্জা পাব আমি কল্পনাও করি নি। এই লজ্জা আমি কিভাবে ঢাকব বুঝতে পারছি না। কিছু তো একটা করতেই হবে। কিন্তু কি করবো? আমার প্রিয় ম্যাডামের সামনে আমি লজ্জা পেয়েছি ভাবতেই জানি কেমন লাগে! ম্যাডামকে কালার করা ঠিক হবে না। কারণ তার হাতে আমার মার্কস নির্ভর করে। মেজাজ চরম বিলা হয়ে আছে। মনে হচ্ছে যদি এক দিনের জন্য তিনি আমার ম্যাডাম না হতেন তাহলে দেখাতাম মজা কাকে বলে। উনাকে হিপনোটাইজ করে ফেলতাম আর তাকে এমন কিছু করতে বলতাম যাতে নিজেকে নিজের মাথায় সারাদিন ঠোয়ায়! কিন্ত এমন কিছু করাতো আর সম্ভব না। তাই মনে হচ্ছিল ওর বড় ভাইয়ের উপরই ঝাল মিটাবো। মন চাচ্ছিল তাকে বুড়িগঙ্গার কালা পানি দিয়া সেমাই বানিয়ে খাওয়াই! তারপর মনে হলো উনি আমাকে যেভাবে লজ্জা দিয়েছেন উনাকে এর থেকে বেশী মাত্রায় দেয়া দরকার। উনার ভালো মানষের মুখোশ আমার সামনে যেহেতু প্রকাশ পেয়েছে সেহেতু মজাটা ভালোই নেয়া যাবে এবং কাজটা এমনভাবে করতে হবে যাতে সাপও মরে আর লাঠিও না ভাঙ্গে! মানে আমি যে এইগুলা করবো উনি যাতে বুঝতে না পারেন। একদম ভারতীয়দের মতো! তাদের বুদ্বি তো সুইয়ের চেয়েও চিকন। পাকিস্তানিদের মতো মোঠা না। এজন্য তারা আমাদের ডান্ডার বাড়ি দিয়ে উর্দু গিলাতে চেয়েছিল কিন্ত ভারতীয়রা কি সুন্দর সিরিয়াল আর সিনেমা দিয়ে আমাদের হিন্দী গিলিয়ে দিচ্ছে। প্রথমে ফেবুতে “তানি” নামে একটা একাউন্ট খুললাম। তারপর উনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েষ্ট পাঠিয়ে সব প্রাইভেসি দিয়ে রাখলাম যাতে উনি আমার কিছ দেখতে না পারেন। প্রোফাইলে দিলাম একটা ফুলের ছবি। উনি দেখলাম কিছুক্ষনের ভিতরেই আমাকে ফ্রেন্ড বানালেন।(সারাদিনই মনে হয় ফেবুতে থাকে!) তারপর কয়েকদিন উনার সাথে চ্যাট করলাম। রসের আলাপ করলাম। তাকে বুঝাতে সম্ভব হলাম যে উনি একটা মেয়ের সাথেই চ্যাট করছেন। উনিও লুল কম না। আমাকে পরীক্ষা করার জন্য উনার নাম্বারে ফোন দিতে বললেন। সাধু! সাধু! সামুতে মনে হয় একটা গল্প পড়েছিলাম চাইনিজ মোবাইল দিয়ে একজনকে হেনস্তা করার বিষয়ে। আমি ভাবলাম এমন কিছুও তো করা যায়। আমার এক বন্ধুর একটা চাইনিজ় মোবাইল আছে যেটাতে ভয়েস কনভার্ট করা যায়। আমি তাকে বললাম যাতে সে মোবাইলটা কয়েক সপ্তাহের জন্য আমাকে দেয়। সেও দিয়ে দিল। এইদিন রাতে আমি তাকে ফোন দিলাম অন্য নাম্বার থেকে যেটা আমার জানের কাছেও নাই। তারপর ফোনের ভয়েসটাকে মেয়ে কন্ঠে দিয়ে দিলাম। দিয়ে তার সাথে কথা বললাম।

- হ্যালো।
- (মেয়ে কন্ঠ শুনে একটু নরম গলায়)হ্যালো! কে বলছেন প্লীজ।
- হায় আল্লাহ! কে বলছি চিনলা না এখন? সারারাত তো ঠিকই চ্যাট করতে
পারো। বলতে পারো ফোন দিতে। আর এখন দিলাম তো চিনলা না।
ভালো! অনেক ভালো! আমি তানি। এখন চিনেছেন জনাব?
- ওহ মাই গড! আমি কি সত্যি তোমার গলা শুনছি? আমার তো বিশ্বাস
হচ্ছে না। (মেয়ে তো ভালোই পটাইতে পারে!);)
- জ্বি সত্যিই শুনছেন। তা কেমন আছেন আপনি?
- ভালো (অনেক নরম গলায়)
- আচ্ছা, একটা কথা বলি? তুমি কি সত্যিই ছেলে? এতো নরম করে কথা
বলো কেন?
- মানে কি? আমি তো ছেলেই!
- শিউর?
- (একটু ভেবে) আমার আম্মুও বলে আমি ছেলে, একটু আগেও দেখলাম যে
আমি ছেলে আর তুমি এখন বলছ আমি শিউর কি না? হুম আমি শিউর!
- বাহ! অনেক সময় নিলা তো উত্তর দিতে। কনফিউজড ছিলা বুঝতে
পারলাম। হি হি হি।
- আরে ধুর, কি যে বল। আচ্ছা, শোন এখন রাখি। একটা কাজে আছে।

বলেই ঠাস করে ফোন রেখে দিল। আবার ফোন দিয়ে দেখি ওয়েটিং! ম্যাডামের নাম্বারে ফোন দিয়ে দেখি উনার নাম্বার ও বিজি। ভাবলাম দুই সাইডেই ব্যাটিং করছেন উনি। সাধু!

এভাবে কথা বলতে বলতে ভালোই কুলুজ (!)হলাম আমরা। একদিন তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে তিনি পেরেম করেন কি না।

- খোদার কসম আমি প্রেম করি না। আমি তো শুধু তোমাকেই...............
না কিচ্ছু না।
- কিচ্ছু না মানে? থেমে গেলা কেন? কি বলতে চাইছিলা বলো?
- আরে বাদ দাও তো। এমনি।
- তুমি বলবা নাকি আমি ফোন রেখে দিব?

এই কথা বলে ঠাস করে ফোন রেখে দিলাম। দেখলাম কিছুক্ষন পরেই ফোন ব্যাক করলো।

- আমি স্যরি। আসলে আমি এইভাবে বলতে পারবো না। তুমি কি আমার সাথে দেখা করবা?

দেখলাম বিষয়টা বড় হয়ে যাচ্ছে। আমার মনেও একটা অপরাধবোধ কাজ করছে। ভাবলাম শেষ করে দেয়া দরকার জিনিসটা। তবে নিশ্চয়ই তাকে শিক্ষা দিয়ে। আমি বললাম যে “কোথায় দেখা করতে চাও”। সে বলল যে “H2O” তে। ভাবলাম ওই জায়গায় ও দেখা করতে চায় কেন? যাই হোক। আমি ওর সামনে যেতে পারবো না। তাহলে যদি সে বুঝতে পারে সব আমার কাজ ছিল তাহলে আমি আমার জানকে একবারে হারিয়ে ফেলবো। এইজন্য আমার এক ক্লোজ ফ্রেন্ডকে সব খুলে বললাম। এবং তাকে তানি হয়ে কথা বলতে বললাম। সে রাজি হলো। নির্দিষ্ট দিনে ভাইয়া তানিকে ফোন দিয়ে বললেন আসতে। আমিও অন্য এক নাম্বার থেকে অচেনা সেজে ম্যাডামকে ফোন দিয়ে বললাম তিনি যাতে তাড়াতাড়ি করে H2O তে আসেন। উনার জন্য সারপ্রাইজ আছে! আমি ও আমার বন্ধু আরো আগেই এসে পৌছেছিলাম। ওকে থাকতে বলে আমি দূরে এক জায়গায় দিয়ে বসলাম যাতে দেখা না যায়।
তখন ভাইয়া ফোন দিল।

- তুমি কই?
- আজিব! আমি তো তোমার জন্য কখন থেকে বসে আছি।
- কই তুমি? দেখছি না তো!

তারপর বন্ধুটা নিজে থেকেই গিয়ে খুজে বের করলো। বসে আলাপ করতে লাগলো। ঠিক ওইসময় ম্যাম এসে হাজির। আমি তো হাত ধুয়ে বসে পড়লাম মজা দেখার জন্য। ভাইয়া কি সুন্দর তানির হাত ধরে কথা বলছে! এই জিনিসটা ম্যাডামের ঠিক চোখের সামনে হলো! তিনি চিৎকার করে ভাইয়ার নাম ধরে ডেকে উঠলেন। ভাইয়া ম্যাডামকে দেখে মনে হলো তিনি আমাদের দেশের “মরুভুমির নামে নামধারী” এক মানুষকে দেখেছেন। এতোই ভয় পেয়েছিলেন উনি।

- (ম্যাডাম কিছু না বলে একটা চড় দিলেন) ফাজলামো করো – না?
আমাকে বললা কাজে যাচ্ছ। এই তোমার কাজ? আরেকটা মেয়ের হাতে
হাত রেখে আড্ডা দেয়া তোমার কাজ। (তানির দিকে লক্ষ্য করে) তুমিও
কেমন মেয়ে, আরেকজনের লাভারের সাথে এসে ইস্টিং ডিস্টিং করছ?
ফাজিল মেয়ে কোথাকার? যাও এখান থেকে।

তানি জানত এমন কিছু হবে। তাই সেও সুযোগটা মিস করে নি। কিছুক্ষন দাঁড়িয়ে ভাইয়ার গালে বসিয়ে দিল একটা রাম চড়।

- তুমি না আমাকে বলেছিলে তোমার গার্লফ্রেন্ড নেই। এখন তিনি কই থেকে
আসলেন? আসলে তোমার মতো মানুষের এই অবস্থাই হওয়া উচিত।
জীবনে আর আমাকে ফোন দিবা না। যদি দাও তাহলে খবর আছে।

ভাইয়া বাংলা পাঁচের মতো মুখ করে কিছুক্ষন বসে রইলো। সব মানুষ তার দিকে তাকিয়ে আছে। মনে হচ্ছে অনেক লজ্জা পেয়েছেন। আমি তো এইটাই চাচ্ছিলাম। লজ্জার বদলে লজ্জা।

যাক, আমার প্রতিশোধ আমি নিলাম। ঘুম হচ্ছিল না রাতে। আজকে ভালো একটা ঘুম হবে।

একটা বিশেষ লাইনের জন্য ফেবুর এক বড় ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ।

প্রথম পাতায় আসতে অনেক সমস্যা করছে। বারবার দেয়ার জন্য স্যরি।

ভালো থাকবেন সবাই।
২৬টি মন্তব্য ২৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×