somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিসু কাহিনীর পরের কাহিনী (ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী - ২)

১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
ফার্ষ্ট ডেট উইথ এ হিসু কাহিনী! (কিছু লাইনের জন্য ছোটদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাপূর্বক)

তারপর



জীবনে মনে হয় এতোবার কাউকে স্যরি বলি নাই। আজিব মেয়ে তো! আমি তো আর তার সাথে ইচ্ছে করে এমন করি নি। প্রকৃতি যেভাবে আমাকে নিঃসার্থ ভাবে ডাকা শুরু করেছিল আমি কিভাবে তাকে অমান্য করি! জানকে কত ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছি যে জান, আমি আসলেই অনেক স্যরি! আসলে আমার করার কিছু ছিল না। আমি চাচ্ছিলাম না প্রথম বারেই তোমার সামনে আমার ইজ্জত নিয়া ছিনিমিনি খেলতে। কিন্তু জান, বলে না কপালে থাকলে ঠেকায় কে! আমার এই অবস্থা হইছিল। প্লীজ, রাগ করো না। আমাকে ক্ষমা করে দাও। দেখ জান, তোমাকে যতবার স্যরি বলতেছি এতোবার স্যরি বললে মনে হয় প্রেমদেবীও আমাকে ক্ষমা করে দিবে। তুমি কেন করছ না?

প্রায় পনের মিনিট অতিক্রম হবার পর জানের মুখ খুলল। বলল দেখ, আমরা একে অপরের জান! (লুলামির ভাব) আমাদের মধ্যে লুকোচুরির তো কিছু নাই! আমাকে তো বললেই পারতে! (প্রথম দেখায় আমি কেমনে বলুম?) আমার ক্যাম্পাসে কত্ত সুন্দর ব্যবস্থা আছে! তুমি অনেক ভালো ফিল করতে! আচ্ছা, যাও, এইবারের মতো ক্ষমা করা হলো। আর যেন না হয়। আমার কাছে কিচ্ছু লুকাবা না। বুঝছ?

আবার জিগায়। জীবনেও আর এইরকম হবে না। কান ধরলাম। জান, চল না আজকে ঘুরতে যাই। সেইদিন তো কিছুই হয় নাই। আমার ফার্ষ্ট ডেট যে এইরকম হবে ভাবি নাই। যাবা জান?

(মিনিট খানেক ভাব নিয়ে) আচ্ছা চল। আমারো তোমাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। তুমি তো আমার সপ্নে দেখা রাজপুত্র! কই দেখা করবা বল?

- টিএসসি!

- ওকে। আমি ১ ঘন্টার ভিতরে আসছি। তুমিও আস।

আমি ভাবলাম মাইয়া মানুষ বলেছে ১ ঘন্টা। তাহলে তো ২ ঘন্টার আগে আসবে না ১১৫.৫% শিউর! আমিও একটু হেলে দুলে অন্যসব কাজ শেষ করে গেলাম। আমার পৌছতে প্রায় দেড় ঘন্টা লেগে গেল। গিয়ে যা দেখলাম তাতে আমি ভুত দেখার চাইতেই বেশী ভয় পেলাম। আমার জান বসে আছে! আমার জন্য অপেক্ষা করছে! হে আল্লাহ, আমাকে কোন পরিক্ষায় ফেললা? প্রতদিনই ঝামেলা লাগে কেন। ও কেমনে এতো তাড়াতাড়ি আসল? জান, তুমি এসে পরেছ? কখন আসলা?

বেশীক্ষন না। মাত্র ৪৫ মিনিট হয়েছে! তো আপনি কি কোন কাজে বিজি ছিলেন যে একটা মেয়ের চাইতেও বেশী দেরী আপনার হলো?

এইরকম সময়ে আমার চোখ দিয়ে প্রায়ই পানি আগমন করে। আজও ব্যাতিক্রম হয় নাই। আল্লাহ জানেন, এই পানি দেখেই মনে হয় আমার জানের মন গলে গেছিল। বেশী কিছু আর বলল না।

বসে আছি। নীল আকাশ দেখছি। আজকের আকাশটা যেন একটু বেশীই সুন্দর লাগলো। হয়ত একজন পরী আমার পাশে আছে বিধায়। ও যখন আমার হাতে হাত রাখলো তখন আমি জাষ্ট কেঁপে উঠলাম! মনে হচ্ছিল যে মনে হয় এই সময়টা পাওয়ার জন্য আমি বেঁচে ছিলাম এতোদিন। আমার কাধে যখন মাথা রাখলো তখন ভাবলাম আজীবন আমি তাকে আগলে রাখব। কখনো ছেড়ে যাব না।

কিন্তু আমার মতো অভাগার কপালে তো সুখ বেশী সয় না। এই রোমান্টিক মুহুর্তে লক্ষ্য করলাম একটা ছেলে বারবার আমার জানের দিকে তাকাচ্ছে! মেজাজটা বিলা হয়ে গেল! তারপরেও আমার চারিত্রিক বৈশিষ্ট অনুযায়ী ধৈর্য ধারন করলাম। অবশেষে যখন দেখলাম আর পারছি না তখন জানকে বললাম সোহরাওয়ার্দি উদ্যান থেকে বাদাম নিয়ে আসতে। ও নিমরাজি হয়ে গেল। জান চলে যাবার পর আমি ওই ছেলেটার কাছে গেলাম।

- ভাই, আপনার সমস্যাটা কি জানতে পারি?

- কিসের সমস্যা?

- আপনি আমার পাশের মেয়েটির দিকে এইভাবে তাকিয়ে ছিলেন কেন? আর আমার প্রতি অগ্নিমুর্তি ধারন করার কারনটাই বা কি?

- ওওওও!! আপনার বুঝি জ্বলে? তো পাশের মেয়েটা আপনার কি হয়?

- আমার গার্লফ্রেন্ড!

- ওওওও!! ও তোমার গার্লফ্রেন্ড হয়? ভালো! ভালো! তো কতদিন ধরে?

- কতোদিন ধরে মানে? কি বলতে চান?

আচমকা আমার শার্টের কলার ধরে ধাক্কা মারলো। আর এই ধাক্কা জিনিসটাই আমার চরম খারাপ লাগে। শুরু হয়ে গেল যুদ্ধ। আমরা এখনো জানি না যে কি কারনে যুদ্ধ করছি! কাপড় চোপড় ছিড়ে যা তা অবস্থা। অপরাজেয় বাংলার সামনে এই যুদ্ধ যেন সবাই উপভোগ করতে লাগল। কেউ এগিয়ে আসলো না। প্রায় মিনিট পাঁচেক পর দেখি আমার জান দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছে। ভুত দেখার পর যেমন অবস্থা হয় এইরকম অবস্থা হয়েছে ওর।
আমি বললাম জান, টেনশন কইর না। ওই পোলার চোখ খুইলা আজকে গুলি খেলা খেলুম! ওর হাড্ডি খুইলা ঢোল বাজামু। তুমি কোন টেনশন কইর না জান। আমি থাকতে তোমার কিচ্ছু হইব না। চরম পার্টে ছিলাম তখন!

- উনি আমার বড় ভাই!

কানের কাছে আসা বাক্যটা কেমন যেন লাগল।

- কি বললা?

- উনি আমার বড় ভাই!

টাইট ফরমাল পেন্ট পরে হিপহপ ডান্স করতে গিয়ে পেন্ট ছিড়লে যে অবস্থা হয় আমার অবস্থা তখন সেইরকম। কি করব বুঝতে পারছিলাম না। ভাইয়ার দিকে অনেক্ষন তাকিয়ে থাকলাম। মনে মনে ভাবলাম সপ্ন দেখছি! যখন ভাইয়ার হাতে আরেকটা চড় খেলাম তখন মনে হলো যে এই ধরাধমেই আমি আছি। আল্লাহকে তখন বলছিলাম “হে আল্লাহ, আমারে উঠাইয়া নিয়া যাও, নইলে দড়ি ফালাও, আমি বাইয়া উঠি।”

কিন্তু না। কিছুই হলো না। জানের হাত থেকে বাদাম নিয়ে ভাইয়াকে বললাম ভাইয়া, স্যরি। নেন বাদাম খান। আসলে আমি আপনাকে চিন্তে পারি নাই। দেখলাম, কোন রেসপন্স নাই। আমি ওই ভাইবোনের দিকে বার পাঁচেক তাকালাম। ভাইয়া দ্বিতীয় বার আমাকে মারতে আসার আগেই দিলাম দৌড়! গায়ে নাই শার্ট, নাই ইজ্জত, নাই গার্লফ্রেণ্ড, নাই কিচ্ছু।


সারাজীবন এমনে দৌড় দেয়াই কাটাতে হবে

আসলেই এই ফাটা কপালে সুখ আসবে না কখনো।

এটা একটা ফিকশন এবং ফান পোষ্ট। ভালো না লাগলে প্লীজ বকা দিবেন না।

সবাই ভালো থাকবেন। পেক পেক পেক
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই নভেম্বর, ২০১১ দুপুর ১২:১০
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×