এপ্রিল মাস আগমনের সাথে সাথে এপ্রিল ফুল নিয়ে কথা শুরু হয়। আর এর ইতিহাস হিসেবে বলা হয় স্পেন এ মুসলিমদের ধোঁকা দিয়ে মেরে ফেলার ঘটনাকে। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাল তারিখ কিছুই উল্লেখ করা হয় না। এটা এপ্রিল ফুল এর একটা কারণ হতে পারে কিন্তু এটা মতেও মূল কারণ নয় এটা জোর দিয়ে বলা যায়। আর প্রথম সারির ইসলামী সাইটগুলোতেও এটাকে মূল কারণ হিসেবে বলা হয় নি। এর প্রচলন কিভাবে তা এখনো সঠিক ভাবে বের করা যায়নি কারণ এর মতই কিছু অনুষ্ঠান খ্রিস্টের আগে থেকে চলে আসছে।
এপ্রিল ফুল এর প্রচলন ফ্রান্স এ চালু হয় ১৬ শতক এর দিকে। ফ্রান্সে অনেকেই এপ্রিল এ নববর্ষ পালন করত। কিন্তু গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী জানুয়ারি প্রথম মাস। যারা এপ্রিল এ পালন করত তাদের এপ্রিল ফুল বলা হত।
তবে এপ্রিল ফুল এর সাথে সূর্য আর প্রকৃতি উপাসনার বেশ কিছু সম্পর্ক আছে। আগে এপ্রিল মাসের প্রথম দিনকে বসন্তের সূচনা ধরা হত। শীতের পড়ে বসন্তের রূপকে তখন মানুষ প্রকৃতির ছলনা মনে করত। আর সেখান থেকে মানুষ নিজেরাও এই দিনটিকে মিথ্যা বলে ছলনা দিতে শুরু করে। এটা খ্রিস্ট ধর্মেরও আগের কথা। তাছাড়া এই দিনটিকে প্যাগানরাও বসন্তের সূচনা হিসেবে পালন করত। আর তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের একটা অংশ ছিল আজকের এপ্রিল ফুলের মতই।
‘এপ্রিল ফুল’ শব্দ যুগল প্রথম ব্যাবহার করে ইংলিশ ম্যাগাজিন Dreck Magazine., ১৬৯৮ সালে। তারা এতে বলে ১ এপ্রিল Tower of London এ একদল কালো মানুষকে ধুয়ে ফরসা করা হবে! তবে সবচেয়ে বড় ঘটনা ঘটায় ইংলিশ দৈনিক Evening star, ১৭৪৬ এ। তারা বলে ১ এপ্রিল Islington এ বানরের প্যারেড অনুষ্ঠিত হবে। দলে দলে লোক সেদিন দেখতে যায় কিন্তু কিছুই দেখে না। শেষে বুঝে যে তারাই সেই বানর, তাদের বোকা বানানো হয়েছে।
এছাড়া রয়েছে ইরানের নববর্ষ অনুষ্ঠান নরুয(বানানটা ভুল হতে পারে, মূল-Norouz) যেখানে এপ্রিল ফুলের মতই ধোঁকা দেয়া হত মানুষকে। এটা খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৬ সাল থেকে প্রচলিত। আর এতাকেই সবচেয়ে পুরাতন কারণ হিসেবে ধরা হয়।
আর রয়েছে ১৪৯২ এ গ্রেনাডার ইতিহাস। এর পিছনেও একটা ইতিহাস আছে। তারেক এর নেতৃত্বে মুসলিমরা স্পেন এর দক্ষিন অঞ্চল দখল করে। শুরুতে তারা কুরান,হাদিস অনুযায়ী ভালভাবেই শাসন করছিল কিন্তু ১৪৫০ এর পর তারা অমুসলিমদের বিনা কারণে অত্যাচার শুরু করা। আর তখন খ্রিষ্টানরা গ্রেনাডা আক্রমন করে আর ১ এপ্রিল তা জয় করে। আর সেদিন অনেক মুসলিমকে বিনা দোষে হত্যা করা হয়। তবে এর কারনেই যে এপ্রিল ফুল এর প্রচলন তা জানা যায়নি। যদিও অনেকেই এটাকেই কারণ হিসেবে বলে।
এপ্রিল ফুলের ইতিহাস যাই হোক এটা বর্জনীয় তাতে সন্দেহ নেই। কারণ মিথ্যা কখনই আনন্দের খোরাক হতে পারে না। ধর্মীয় দিক যদি বাদ দেই তবুও একজন মানুষ মিথ্যা বলে আনন্দ পেতে পারে না। আর পৃথিবীতে মনে হয় না এমন ধর্ম আছে যেখানে মিথ্যা বলাকে পাপ বলা হয়নি। সুতরাং যেই ধর্মের হন না কেন এই উৎসব(!) বর্জন করা উচিত নিজের মানবিকতা থেকে। কারণ আপনার একটা মিথ্যা একজনের জীবন নাশের কারণ হতে পারে। আর যারা মিথ্যা বলে, ধোঁকা দিয়ে আনন্দ পায় তারা কোন ধরনের মানুষ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আসুন আমরা মিথ্যাচার থেকে বেঁচে থাকি।
তথ্যসুত্রঃ১.www.islamqa.com
২.wikipedia
৩.national geographic

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



