বক্তারা বলেন, তিতাসের উপর মাটির বাঁধ দিয়ে তার উপর রাস্তা তৈরী করা হয়েছে। বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে সকল স্থানেই পূর্ব থেকেই নদী ও খালের উপর সেতু ছিল, নিয়মিত রাস্তা ও সেতুসমূহের মেরামত প্রক্রিয়াও চলমান। কিন্তু ট্রানজিট ও ট্র্যান্সশিপমেন্টের আওতায় ১৪০ চাকার অতি ভারী যানবাহনের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করার জন্যই এসকল অতিরিক্ত নির্দয় বাঁধগুলো বসিয়েছে ভারতীয় একটি বেসরকারী কোম্পানী। বাংলাদেশের পানি উন্নয়ন বোর্ড, জেলা প্রশাসন এবং সড়ক বিভাগ কেন এই বিষয়ে কোন পদপে গ্রহণ করেনি তা সরকারের তদন্ত করা উচিত।
বক্তারা বলেন, বাঁধের প্রেক্ষিতে তিতাস নদী ও অন্যান্য নদী-খাল আজ বিভক্ত, স্রোতহীন জলাশয় যা ক্রমাগত পলিপতনের মধ্য দিয়ে বদ্ধ জলাশয়ে রূপান্তরিত হবে। এলাকার ল ল সাধারণ গ্রামীণ জনতা যারা জন্মের পর থেকে তিতাস নদীর পানি ও সেই প্রকৃতি, উর্বর মাটি ও তার ফসল, ফলমূল, গাছপালা, পশু-পাখী ও মৎস সম্পদ আহরণ করে জীবন অতিবাহিত করে আসছে; তারা আজ অন্ধকার, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে ভীষন আতঙ্কিত। নদীটির মোট দৈর্ঘ্য ৯৮ কিমি, অতএব এই দীর্ঘ পথের দুইপাশের ল ল মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকিগ্রস্থ। এটা নিশ্চিত যে, নদীর ক্রমবর্ধমান বিপর্যয়ের সাথে অববাহিকরি জনগোষ্ঠীর সার্বিক জীবনেও আর্থ-সামাজিক দূর্গতি নেমে আসবে।
সভাপতির বক্তব্যে পরিবেশবিদ আবু নাসের খান বলেন, তিতাসসহ আশুগঞ্জ-আখাউড়া পর্যন্ত ১৮টি নদী ও খালের উপর মাটি দিয়ে নির্মিত বাঁধ অপসারণ, সরকারী কোন প্রতিষ্ঠানকে অবহিতকরণ ব্যতীত এধরনের অবকাঠামো কিভাবে নির্মিণ করা হলোÑবিষয়টি তদন্তে একটি স্বাধীন কমিশন গঠন এবং দোষীদের খুঁজে বের করা, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও সড়ক বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব অবহেলার জন্য অবিলম্বে বরখাস্ত ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, নদীকে তিগ্রস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা এবং শাস্তির ব্যবস্থা করা, নদীকে তিগ্রস্ত করার জন্য ভারত সরকারের নিকট তিপুরণ আদায় করতে হবে। হাফিজুর রহমান ময়না বলেন, নদী ও পরিবেশ ধ্বংশ এবং মানুষের জীবনকে হুমকিতে ফেলে তথাকথিত উন্নয়ন চাই না। একদিকে সরকার দেশের নদী রায় সক্রিয়ভাবে কার্যক্রম পরিচালনার করছে। অন্যদিকে তিতাস নদীর উপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করে নদীকে হত্যা করা হয়েছে।
পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের চেয়ারম্যান আবু নাসের খান এর সভাপতিত্বে ও নিরাপদ ডেভলপমেন্ট ফাউন্ডেশনে চেয়ারম্যান ইবনুল সাঈদ রানার পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নাগরিক অধিকার সংরনের সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না, সাধারন সম্পাদক ইশরাত জাহান, বিআইডাব্লিউটিএ এর সাবেক সচিব মনোয়ার হোসেন, সম্মিলিত জলাধার আন্দোলনের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রুবেল, অধ্যাপক কামাল আতাউর রহমান, পরিবেশকর্মী এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম, রিভারাইন পিপল এর সদস্য তরিকুল ইসলাম, নাগরিক সমাজ এর সম্পাদক হাবিবুর রহমান ভূইয়া, পিস এর সভাপতি ইফমা হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশন এর নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম পথিকসহ বিভিন্ন সংগঠন এর প্রতিনিধিবৃন্ধ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:০৯