somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এই লেখার শিরোনাম কি হতে পারে?

১৮ ই জুন, ২০১৫ রাত ৩:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রিক্সা ওয়ালা থেকে শুরু করে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যন্ত প্রত্যেককেই যখন জিজ্ঞাসা করেছি,
-'আচ্ছা আপনি সচেতন না কেন, নিজেদের অধিকারের জন্য কেন আপনারা প্রতিবাদ করেন নাঅ্যা?'

প্রত্যেকে একটাই উত্তর দেয়,
-'আমি একলা সচেতন হইয়া কি করবো!, যারা কিছু করতে পারে তারাই তো কিছু করে না।'

আর এটাই যে তাদের উত্তর হবে সেটাও আমি আগে থেকেই অনুমান করে রাখি।
আর এটাও চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রীকেও যদি একই প্রশ্ন করা হয়, উত্তর ভিন্ন হবে না।

এই উওর শোনার পর বরাবরের মতই আমি একটা দীর্ঘশ্বাস নেই, এরপর উত্তর দেই এইভাবে।

(রিক্সাওয়ালার সাথে...)

- মামা আপনি আসলেই ঠিক বলেছেন, আপনার কথা আমি ফেলে দিচ্ছি না, আসলেই যারা চাইলেই সব কিছু করতে পারে, তারা কিছুই করে না, :(
আর কেন করে না জানেন মামা?

~না মামা জানি না।

-কারন আমি চুপ করে থাকি বলে, আপনি চুপ করে থাকেন বলে, আমরা চুপ করে থাকি বলে ... দীর্ঘশ্বাস...
আচ্ছা মামা, আপনারে একটা ছোট গল্প শুনাই...

আগেরকালে যখন রাজা-বাদশারা ছিলো তখন একবার রাজ্যে পানির প্রচন্ড অভাব দেখা
দিলো, এতটাই অভাব যে মানুষজন মইরা সাফ হওয়া অবস্থা...

তখন রাজা বিরাট একটা পুকুর খনন করলো, কিন্তু কোন লাভ হইলো না, পানির দেখা মিলল না...

রাজা বাধ্য হয়ে গোপাল ভারকে তলব করে বলল যে কোন মুল্যে পুকুরে পানি চাই। গেপালভার সবশুনে রাজাকে আশ্বাস দিয়ে বললেন, আপনি অত্র রাজ্যে লোকজন পাঠায় ঘোষণা দিয়ে দেন যে, ‘আসছে অমাবশ্যার রাতে রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে এক গ্লাস করে দুধ ওই পুরুরে দিতে হবে।’
যেই কথা সেই কাজ, রাজা সাথে সাথে সমগ্র রাজ্যে লোকজন পাঠায় ঢাক ঢোল পিটাইয়া ঘোষণা দিয়া দিলো,
‘আসছে অমাবশ্যার রাতে রাজ্যের প্রত্যেক নাগরিককে এক গ্লাস করে দুধ ওই পুরুরে দিতে হবে।’

অতপরঃ অমাবশ্যার পরের দিন সকাল বেলা দেখা গেল, পুকুরে পানি থৈ থৈ করছে...!
রাজামশাই ব্যাপক খুশি কিন্তু! তার মাথায় একটা বিষয় খেলতেছে না, ‘দিতে কইলাম দুধ, কিন্তু পুকুরে পানি আইলো ক্যামনেএএ... !!

শালার গোপালভার কি জাদু-মন্ত্র জানে নাকি? অতপরঃ
রাজা আবার তলব করলো গোপালভারকে...
জিগাইলো গোপালভার? তুমি যা করতে বলেছ আমি করেছি, পুকুরে পানিও পেয়েছি, ঠিক আছে সব মানলাম, কিন্তু!

একটা জিনিসতো কিছুতেই বুঝতেছি না। পুকুরে দিল সবাই দুধ, কিন্তু দুধ পানি হইলো কিভাবে?

জবাবে গোপালভার বলল, হুজুর, আসলে দুধ পানি হয় নাই, পানিইই আসলে পানিইই হইছে।

ব্যাপারটা বুঝাইইয়া বলি, অমাবশ্যার সেই ঘুট ঘুটে অন্ধকার রাতে যখন দুধ দেয়ার কথা, তখন রাজ্যের প্রত্যেকটা লোক ভাবলো যে, সবাইতো দুধ দিবে, আমি যদি এক গ্লাস পানি দেই তাহলে তো কেউইই বুঝবে না!
আসলে হইছে কি জাঁহাপনা! কেউইই আসলে দুধ দেয় নাই, সবাই পানিইই দিছে পুকুরে এইজন্যে যে, তারা প্রত্যেকে ভেবেছিল বাকি্রা সবাই তো দুধ দিবে... একলা পানি দিলে এই অন্ধকার রাতে কেউই বুঝবে না...
তাই পুকুরে পানিইই, পানি হইছে।

রাজার বিস্ময়!

-মামা গল্প শেষ। কিছু বুঝলেন? (রিক্সাওয়ালা মামা নিরব) আচ্ছা, আমি বুঝায় কইতেছি...
এই যে আপনি কইলেন নাহ যে, আপনি একা কি করবেন? আজকে যদি আপনি ওই এক গ্লাস পানিই ঢালতেন তাহলেই সব ঠিক হইয়া যাইতো। আমরা প্রত্যেকেই কই আমরা একলা কি করবো!
আমাদের কিছুই করার দরকার নাই, আমরা শুধু যদি এক গ্লাস পানিই ঢালি, তাহলে আমারা সবাই মিলে একটা পুকুরও পানিতে ...পারি। অপরে কি করবে সেটা চিন্তা না করে যদি আমরা নিজেদের অবস্থান থেকে সচেতন হইতে পারি তাহলে পুরো দেশটা পরিবর্তন হয়ে যাবে। কি মামা ঠিক কইছি না? এইবার মা সায় দিল, হুম মামা ঠিক কইছেন।

আচ্ছা বাদ দেন দেশের জন্য না হয় নাই করলেন নিজের জন্য হলেও তো করতে পারেন, এই দেখেন মানুষ বাজারে গিয়া দশ টাকার আলু কিনে আনার সময় কত বেঁছে বেঁছে নেয়, আবার দোকানদারকে বইলা আসে পোকা কিংবা পঁচা হইলে কিন্তু ফেরত দিমু! কিন্তু দেখেন এরাই যখন একটা প্রতিনিধি বানায়, যে প্রতিনিধির হাতে তাদের ভাগ্য তুলে দেয়, ভবিষ্যৎ তুলে দেয়... তখন এরা একটুও বাছে নাহ... বিচার করে না :/

মামা নিজের জন্যও না হয় নাই করলেন, কিন্তু আপনার ছেলের জন্য হইলেও একটু ভেবে দেখবেন, আপনি নিশ্চয়ই চান না আপনার ছেলেও আপনার মত রিক্সা চালাক...

আরো নানা প্রকার জ্ঞান দিতে দিতে হঠাত, পথ শেষ হইয়া গেল, আমি রিক্সা থকে নেমে টাকা দিয়ে বাসায় ঢুকে পড়ি, আর ভাবতে থাকি কি হবে এই দেশের!
আরো ভাবে থাকি, আজকে এই পথ যদি শেষ না হইতো, রিক্সাওয়ালা মামার কি হইতো বলতো!
না না তুমিই বলো ...

ম্যালা হইছে হায়াত, একটু খ্যামা দে... উনি তো একজন রিক্সাওয়ালা ছিলো, যারা নিজেদের শিক্ষিত দাবি করে, তারাই যখন এইসব কথা এক কান দিয়ে শুনে আর এক কান দিয়ে বের করে দেয়... :/
আজকাল আমি নিজেই তাদের বলি অপর কান খোলা রাখতে... যাতে করে বের হয়ে যাইতে পারে -_-

আসলেই কি হবে এই দেশের, যেখানে আমাদের উত্তরসূরিরা থাকবে! আমরা কি তাদের বসবাসযোগ্য বাংলাদেশ গড়ে দিয়ে যেতে পারবো! শেষ নিশ্বাস কি তৃপ্তির সাথে ত্যাগ করতে পারবো আদো...

তবুও আশা রয়ে যায়... ‘একটি আদর্শ বাংলাদেশ দেখার’
তবুও আশা রয়ে যায়... ‘একটি আদর্শ বাংলাদেশ গড়ার’ ।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জুন, ২০১৫ রাত ৩:১৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারা এমন মেধাবী এদেশে দরকার নাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৭:৩২



২০০১ সালে দেলাম ঘরে আগুন দেওয়া ও মন্দীরে হামলার জঘণ্য কাজ। ২০০৪ আবার দেখলাম ঘরে আগুন, মন্দীরে হামলা, মাজার ভাঙ্গা, পিটিয়ে মানুষ মারার জঘণ্যতম ঘটনা।জাতি এদেরকে মেধাবী মনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিক্ষাঙ্গনে অপ্রীতিকর ঘটনার মুল দায় কুৎসিত দলীয় লেজুরভিত্তিক রাজনীতির

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৫

সোস্যাল মিডিয়ার এই যুগে সবাই কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবি সাজতে চায়। কিন্ত কেউ কোন দ্বায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে রাজী নয়। ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটা মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে । এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোমলমতিদের নিয়ে আমি কি বলেছিলাম?

লিখেছেন সোনাগাজী, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ দুপুর ২:৫৪



আমি বলেছিলাম যে, এরা ভয়ংকর, এরা জাতিকে ধ্বংস করে দেবে।

ড: ইউনুসের সরকারকে, বিশেষ করে ড: ইউনুসকে এখন খুবই দরকার; উনাকে টিকিয়ে রাখতে হলে, কোমলমতিদের থামাতে হবে; কিভাবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

পিটিয়ে মানুষ মারার জাস্টিফিকেশন!

লিখেছেন সন্ধ্যা প্রদীপ, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৩

এদেশে অনেক কিছুই সম্ভব।বর্তমান এলোমেলো সয়য়ে যা সম্ভব না বলে মনে করতাম তাও সম্ভব হতে দেখেছি।তবে মানুষকে কয়েক ঘন্টা ধরে পিটিয়ে মারাকে ইনিয়েবিনিয়ে জাস্টিফাই করা যায় এটা ভাবিনি।তাও মেরেছে কারা?
একদল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আহা তোফাজ্জল

লিখেছেন সামিয়া, ২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৪




মৃত্যু এখন এমনি সহজ
ভিডিও করতে করতে;
কথা বলতে বলতে
ভাত খেতে দিতে দিতে;
কনফিউজড করতে করতে
মেরে ফেলা যায়।

যার এই দুনিয়ায় কেউ অবশিষ্ট নাই
এমন একজনরে!
যে মানসিক ভারসাম্যহীন
এমন একজনরে!
যে ভবঘুরে দিক শূণ্য
এমন একজনরে!
যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×