somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মূর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ৭: অপরাজেয় বাংলা

২৯ শে ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


সাত.

বহু দিন পর রমজান মাসে ঢাকায়। প্রতি দিন ইফতারির পর শাহাবাগে যাই। ছবির হাটে যেয়ে তুহিন দের আড্ডায় নিরব দর্শক হয়ে বসে থাকি। চান্স পেলে ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করি শিল্পীর নাম বদরুল আলম বেনু। অপরাজেয় বাংলা'র মাঝখানের কৃষক মূর্তির মডেল। কেউ কি কোন খোজ জানেন? কেউ জানে না। তুহিন এক লোকের খোজ দিয়ে বলল এক সাপ্তাহ পরে যেনো খোজ নেই। খোজ নিলাম, খোঝ পেলাম না। বাড়ী ফিরে রাত ভর কম্পিউটারের সামনে বসে থাকি। ভাবি কোথায় গেলে পাবো তারে!

পনরশ টাকায় দেশী ব্রডব্যান্ড লাইন স্পীড অটোয়ায় ব্যাবহার করা বেল কানাডার লাইট স্পীড কানেকশনের মত। রোজার মাস ভোর রাতের দিকে সেহেরীর আজান দেবার জন্য মহল্লার মসজিদের হুজুর মাইকে ফু দিতেই এইটা পোষ্ট লিখলাম ব্লগে, "হুজুর মাইকে ফু দিয়েছেন"। প্রথম কমেন্ট আসে সম্ভবত ব্লগার রাত মজুরের কছ থেকে। দেশ ও দেশের বাইরের ক'জন ব্লগারের সাথে টুকটাক খাজুইরা আলাপে অলস সময় গুলি আর কাটতে চায় না। তার পর আস্তে আস্তে আকাশ আলো করে ভোর হয় প্রতি দিন, কাক ডাকে আমি ঘুমাতে যাই। শুয়ে শুয়ে ভাবি, কাজ কর্ম, ঘর বাড়ী সব ছেড়ে কেন এমন পড়ে আছি!

আত্নিয় স্বজন বন্ধুবান্ধব কারো সাথে পারত পক্ষে যোগাযোগ রাখছি না। দেখলেই শুধু জিজ্ঞেস করে, কি জন্য দেশে এসেছি? বিদেশ থেকে মানুষ দেশে আসে বিয়া শাদী করতে, জমিজমা কেনাবেচা করতে, নয়ত ধান্দাপানি বানিজ্য। কেউ কেউ আসেন কর্পোরেট/ অ-কর্পোরেট রাঘোবোয়াল হতে। আমি কোন দলেই পরি না! আমার কাছ থেকে তারা যে উত্তর পান বুঝতে পারি তাতে কারো কৌতুহল নিবৃত্ত হয় না। কেউ কেউ জিজ্ঞেস করেই বসেন বৌ/ সংসার সব ঠিক আছে ত? অসহ্য লাগতে থাকে সব। আমি ঘোষনা দিয়ে বলি আত্নিয় স্বজন বন্ধুবান্ধবের গুষ্টি কিলাই! তার পরেও কথা থাকে, একা একা কত দূরইবা যাবো? কেমন করেইবা যাবো! পারবোত ছবিটা বানাতে? সিলিং এর দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ঢাকাইয়া গরমে দূর্দান্ত সিলিং ফ্যানের ঘোরা দেখি। কুল কিনারা পাই না।

দেশে আমার আশেপাশের মানুষ সকলের কাছেই প্রডাকশন মানেই ভাইব্যারাদর গংদের কর্মকান্ড অথবা অমিতাভ রেজার অর্ধকোটি অথবা পুরা কোটি টাকার কর্পোরেট বিজ্ঞাপন চিত্র। সেই খানে আমার চিন্তা ভাবনা গুলি বড়ই পুরোনো, এক দম সেকেলে আর বেহুদাযে লাগে সেটা না বুঝার মত নির্বোধত আর আমি নই। রাস্তায় বের হলে রিক্সা, সিএঞ্জি থেকে ঘাড় বেকিয়ে জায়েন্ট সাইজের বিলবোর্র্ড গুলির দিকে তাকিয়ে থাকি। ফেয়ার এন্ড লাভলী, সাবান সুন্দরীদের চেহারা ছবি, মুঠোয় ভরা দিন বদলের ছলাকলা। কাওরান বাজারের টুকরির ভেতর সংসার পাতা মানুষদের দিকে তাকিয়ে ইমোশনাল হওয়ার আগেই নিজেকে বলি, দেশে থাকলে ফাইট করে বাঁচতে হবে। এমন ফালতু ইমোশনের কোন দাম নেই এই কঠিন দুনিয়ায়। বেশী মাত্রায় প্রাক্টিক্যাল হওয়ার কারনে এক দিন ফার্ম গেট থেকে বাসে ঝুলে শাহাবাগ যাওয়ার পথে চিড়া চ্যাপ্টা হতে হতে বেচে গেছি। একটা জিনিস বুঝতে পারি এখানে জীবন চলে কঠিন মাপের উপররে এক সুতা এদিক সেদিক হলে চিরতরে খাল্লাস। ফিরেও তাকাবে না কেউ। যেখানে প্রতি দিন বেঁচে থাকাটাই জিন্দাবাদ সেখানে এমন ফ্রিল্যান্স কর্মকান্ডের যে কোন ভাত নেই সে কি আর বলার অপেক্ষা রাখে?

যাই হউক এভাবে এক দিন রমজানের রোজার শেষে খুশীর ঈদ এসে হাজির হয়ে যায়। চারি দিকে উৎসবের উত্তেজনা নিজেকে বড় বেশী অপাংতেয় লাগতে থাকে সকল খানে। সেই প্রথম বাচ্চাদের জন্য মন খারাপ করে উঠল। কি দরকার ছিল জীবনটাকে এমন জটিল করে দেখার! এই সব ডকুমেন্ট্রি ফেন্ট্রি বানিয়ে ছাতার মাথা কি হবে? কে দেখবে এই রকম অর্থহীন(আক্ষরিক অর্থেই অর্থহীন) প্রডাকশন? সারাটা দিন মটকা মেরে দরজা বন্ধকরে শুয়ে রইলাম। ফোনটা বাজতেই থাকল, ইচ্ছে করলনা ফোনটা ধরে এখানে ওখানে ন্যাকা ন্যাকা হয়ে ঈদ মোবারক বলি।

বিকেলে ফোন এলো চিটাগাং থেকে সৈয়দ আবদুল্লাহ খালিদের। খালিদ ভাইকে অনুনয় করে বললাম, তিনি ঢাকায় কবে আসবেন? তিনি বললেন কয়েক দিনের মধ্যেই। আমি সেই আশায় থাকলাম...

(ছলিবেক)



মূর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ১: অপরাজেয় বাংলা মূর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ২: অপরাজেয় বাংলা মূর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ৩: অপরাজেয় বাংলা মূর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ৪: অপরাজেয় বাংলা মূর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ৫: অপরাজেয় বাংলা মূর্তি লইয়া আমার প্রামান্য কথন ৬: অপরাজেয় বাংলা
ওয়েব ঠিকানা, অপরাজেয় বাংলা
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই মে, ২০০৯ বিকাল ৪:৩৩
৯টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ

লিখেছেন রাজীব নুর, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:৪০



'অন্যায় অত্যাচার ও অনিয়মের দেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ'।
হাহাকার ভরা কথাটা আমার নয়, একজন পথচারীর। পথচারীর দুই হাত ভরতি বাজার। কিন্ত সে ফুটপাত দিয়ে হাটতে পারছে না। মানুষের... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্য অরিজিনস অফ পলিটিক্যাল জোকস

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১১:১৯


রাজনৈতিক আলোচনা - এমন কিছু যা অনেকেই আন্তরিকভাবে ঘৃণা করেন বা এবং কিছু মানুষ এই ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। ধর্ম, যৌন, পড়াশুনা, যুদ্ধ, রোগ বালাই, বাজার দর থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×