somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ড্রিউ ভেরিমোর অভিনীত বিশ্বসেরা রোমান্টিক কমেডি ছবি - 50 First Dates

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০১০ রাত ৯:৫৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



50 First Dates আমেরিকান রোমান্টিক কমেডি ছবি। এ ছবিটি মুক্তি পায় ২০০৪ সালে। পরিচালক - পিটার সিগাল। ছবিতে Adam Sandler একজন পশু চিকিৎসক এবং Drew Barrymore এক সড়ক দূঘটনায় স্মৃতিবিলোপ রোগে আক্রামত্ম চিত্র শিল্পী। এ ছবিটির বেশীরভাগ দৃশ্যধারন করা হয়েছে হাওয়াইন দীপের সমুদ্রতীরের চমৎকার পরিবেশে। ছবিটির উলেস্নখযোগ্য দৃশ্যে সামদ্রিক প্রাণী ডলফিন ও সি ফিশ ও একটি সামদ্রিক পাখি অসাধারন অভিনয় করেছে। সেন্ডলার ও ভেরিমোর পর্দায় অসাধারন অভিনয়ের জন্য MTV Award পেয়েছেন। এ ছবিটি সেন্ডলার ও ভেরিমোর জুটির দ্বিতীয় সফল ছবি। প্রথম যে ছবিতে তারা অভিনয় করেছিলেন তার নাম The Wedding Singer. ।

কাহিনীঃ
হেনরি রোথ একজন পেশাদার মেরিন পশুচিকিৎসক যিনি হাওয়াইতে একটি সামদ্রিক বিনোদন পার্কে পশুদের সেবায় কাজ করেন। ছবিটির শুরম্নতে দেখা যায় হেনরি তার দু’জন সহকর্মী উলা ও আলেক্সার সাথে কাজ করছেন। একদিন সকালে হেনরি রোথের এর সাথে লুসি হোয়াইটমোর (যিনি একজন চিত্রশিল্পী) এর দেখা হয় স্থানীয় একটি ক্যাফেতে। লুসিকে প্রথম দেখাতেই হেনরি আর চোখ ফেরাতে পারেনি। হেনরি অনেক চেষ্টা করতে থাকে যদি লুসির সাথে একটু কথা বলা যায় । লুসির দৃষ্টিতে পড়ার জন্য হেনরি বার বার চেষ্টা করতে থাকে। হেনরির উপস্থিত বুদ্ধিমত্তার কারনে হেনরির সাথে লুসির কথা হয়। প্রথম দেখাতেই কিছুটা আলাপ, পরিচয় এবং পরের দিন একই সময়ে দু’জন একই জায়গায় দেখা করবে বলে রাজি হয়। কিন্তু পরেরদিন যখন হেনরি সেই ক্যাফেতে লুসির সাথে দেখা করতে আসে তখন পরের ঘটনাগুলো শুনে হেনরি খুব মর্মাহত হয় কারন লুসি তার আগের দিনের কোন ঘটনা মনে রাখতে পারে না। সূতরাং হেনরির সাথে লুসির প্রথম দেখার সব ঘটনা লুসির কিছুই মনে নেই। ক্যাফের মালিক হেনরিকে ডেকে নিয়ে বলে এক কার এক্সিডেন্টের কারনে লুসি এখন গোল্ডফিল্ড সিন্ড্রোমে আক্রামত্ম। এ রোগের কারনে লুসি এক রাতের মধ্যে আগের দিনের ঘটে যাওয়া কোন ঘটনা মনে রাখতে পারে না। সূতরাং লুসি এখন স্মৃতিবিলোপ রোগে আক্রামত্ম যার কারনে লুসির স্মুতি থেকে অনেক ঘটনাই হারিয়েছে। লুসি বিশ্বাস করে প্রতিদিনই তার বাবার জন্মদিন। প্রতিদিনই অক্টোবর ১৩, ২০০২ অর্থাৎ যেদিন সে দূর্ঘটনা ঘটেছিল। কারন লুসির বাবা মারলিন (ক্লার্ক) এর জন্মদিনে সেই কার এক্সিডেন্টটি হয়েছিল। সেই দূর্ঘটনার কষ্ট লুসিকে ভুলিয়ে রাখার জন্য মারলিন অর্থাৎ লুসির বাবা ও লুসির ভাই ডগ (অষ্টিন) প্রতিদিন মারলিনের জন্মদিনের অনুষ্ঠান আয়োজন করে।

দর্শক ছবিটির শুরম্নতেই লুসির সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে তার প্রেমে পড়ে যাবেন। ড্রিউ ভেরিমোর এ ছবিটি দেখলে দর্শক আবিস্কার করতে পারবেন নতুন এক প্রেমিকাকে যার অবস্থান পর্দায় হলেও এতো সুন্দর অভিনয়ের কথা হৃদয়ে গেuঁথ থাকবে বহুবছর নিঃসন্দেহে বলা যায়। দর্শক পর্দায় দেখতে পারবেন, হেনরি ধীরে ধীরে লুসির প্রেমে পড়ে যায়। হেনরি প্রতিদিন নতুনভাবে লুসির সাথে দেখা করার পরিকল্পনা করে এবং হেনরি ভাবে লুসি একদিন তার হারানো স্মৃতি অবশ্যই খুuঁজ পাবে। হেনরি আপ্রান চেষ্টা চালিয়ে যায়। প্রতিদিন হেনরি নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে লুসির সাথে দেখা করে। দর্শক ছবির এ অংশ দেখলে সত্যিই মজা পাবেন হেনরির অসাধারন সব আইডিয়া এবং কর্মকান্ড দেখে। লুসির প্রতি হেনরির হৃদয়ের টান দেখে লুসির বাবা ও বডি বিল্ডার ভাই হেনরিকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিলেও হেনরি অনেক কষ্টে মারলিনকে সব বুঝিয়ে বলে এবং লুসিকে সুস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। হেনরি প্রতিদিন লুসিকে একটি ভিডিও টেপ দিয়ে যায় যাতে লুসি ঘটে যাওয়া সত্যি ঘটনাগুলো দেখে পূনরায় মনে করতে পারে। লুসি তার মনের কথাগুলো একটি ডায়েরিতে লিখতে থাকে। একসময় লুসি হেনরির মনের অবস্থা বুঝতে পারে এবং হেনরির বিয়ের প্রসত্মাবে রাজি হয়।
দর্শক ছবির পরের ঘটনাগুলো কিছুটা কষ্টের আবার ভাললাগার। একদিন সকালে লুসি জানতে পারে, হেনরি সামদ্রিক গবেষনার জন্য সুমেরম্নতে তার ভ্রমন আপাতত বন্দ করে দিয়েছে যেজন্য সে বহুদিন ধরে প্রস্ত্ততি নিয়েছে। কারন হেনরি লুসিকে ছেড়ে কোথাও যেতে আগ্রহী নন। কিনতু লুসি হেনরিকে ফিরিয়ে রাখতে চায় না সেজন্য লুসি তাদের সম্পর্কের সব প্রমান নষ্ট করে ফেলে এবং হেনরিকে প্ররোচিত করে যাতে হেনরি লুসিকে ভুলে যায়। লুসি একটি হাসপাতালের স্পেশালিষ্ট ইউনিটে চাকরী নেয়।
লুসির জীবন থেকে বের হয়ে হেনরি আবার সমুদ্র যাত্রার প্রস্ত্ততি নেয়। সমুদ্র যাত্রার শুরম্নতেই মারলিন হেনরির বিদায় বেলায় হেনরির হাতে একটি গানের সিডি দেয় যেখানে লুসির জীবনের কিছু কথা আছে, গান আছে, আছে কিছু স্মৃতি যখন লুসি ও হেনরি দু’জন দু’জনার ছিল। সমুদ্র যাত্রায় লুসির দেয়া সিডি হেনরিকে তার স্ত্রীর কথা অর্থাৎ লুসির কথা মনে করিয়ে দেবে। সমুদ্র যাত্রা শুরম্নর কিছু সময় পর হেনরি বুঝতে পারে লুসি এখনো হেনরিকে স্মরন করতে পারে। লুসির টানে, প্রেমের টানে সমুদ্র থেকে হেনরি দ্রম্নতবেগে হাসপাতালে ফিরে আসে এবং লুসিকে খুঁজতে থাকে। লুসির সাথে হেনরির দেখা হয় কিন্তু লুসি হেনরিকে চিনতে পারে না। লুসি শুধু হেনরিকে একটি কথা বলে নিয়ে যায় লুসির ষ্টুডিওতে। লুসি বলতে থাকে, হেনরি আমি এখনো জানি না তুমি কে ? ? কিন্তু আমি প্রতিদিন রাতে একজনকে স্বপ্ন দেখি, তার ছবি আমার মনের ভেতর ভাসে। হেনরি খুজে পায় তাকে কারন লুসির স্টুডিও এর দেয়ালে হেনরির ছবি ঝুলতে থাকে যা লুসি একছেন। হেনরি, তার ভালবাসা খুজে পায়। হেনরি নতুনভাবে লুসিকে আবিস্কার করে। দর্শক ভালবাসার এক নতুন রসায়ন খুuঁজ পাবেন এ দৃশ্যে। সত্যিই মন ছুয়ে যাবে, আপনাকে বলতে হবে ভালবাসার জয় হোক।

ছবির পরের দৃশ্যগুলো লুসি ও হেনরির জীবনে ঘটে যাওয়া কয়েক বছর পরের ঘটনা। লুসি ও হেনরি বিয়ে করে। হেনরির সাথে লুসি সমুদ্রে ভেসে বেড়াতে থাকে। লুসি ও হেনরির স্বপ্ন পূরণ হয়। একদিন সকালে লুসি ঘুম থেকে উঠে অশ্রম্নশিক্ত নয়নে তাদের বিয়ের একটি ভিডিও টেপ ও বহুবছর পূর্বে সেই দূর্ঘটনার ছবি দেখে। ঘুম থেকে উঠে লুসি হেনরির বোটের উপড়ে উঠে, হেনরি লুসির কোলে তুলে দেয় তাদের একমাত্র কন্যাকে। দর্শক কিছুটা হোছট খাবেন মনে হবে, লুসির স্মৃতি থেকে হারিয়ে গেছে কতোগুলো বছর। সমুদ্রের উপড় ভেসে চলে লুসি ও হেনরির ভালবাসা এবং প্রেমের সাম্পান। এ ছবিটি পরবর্তীতে বিশ্বসেরা প্রেমের ছবি, গানের ছবি হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে। এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ড্রিউ ভেরিমোর বেশ কয়েকটি আমত্মর্জাতিক পুরম্নস্কার পেয়েছেন। বিশ্বসেরা রোমান্টিক ছবি গুলো কতো জীবমত্ম, প্রানবমত্ম হতে পারে এ ছবিটি না দেখলে বোঝা যাবে না।

ছবির নাম ঃ 50 First Dates
পরিচালক ঃ পিটার সিগাল
রচনা ঃ জর্জ উয়িং
অভিনয়ে ঃ ড্রিউ ভেরিমোর ও এডাম স্যান্ডেলার
মুক্তি সময়কাল ঃ ফেব্রম্নয়ারী ১৩, ২০০৪
দেশ ঃ আমেরিকা
ভাষা ঃ ইংরেজী
দৈর্ঘ্য ঃ ৯৯ মিনিট
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশে কোন প্রজন্ম সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত? ১৯৭১ থেকে একটি সংক্ষিপ্ত ভাবনা

লিখেছেন মুনতাসির, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪৩

বাংলাদেশে দুর্নীতির প্রশ্নটি প্রায়ই ব্যক্তি বা দলের দিকে ছুড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু একটু গভীরে গেলে দেখা যায়, এটি অনেক বেশি প্রজন্মভিত্তিক রাজনৈতিক - অর্থনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে যুক্ত। ১৯৭১ এর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×